# দৃষ্টিনন্দন ও প্রযুক্তিসমৃদ্ধ আধুনিক টাউন হল ভবনের নকশা।
কুমিল্লার টাউন হল ভেঙে দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ টাউন হল নির্মাণ কুমিল্লার সচেতন নাগরিকদের প্রাণের দাবীতে পরিণত হচ্ছে। কুমিল্লা টাউন হল আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে ক্রমেই বাড়ছে জনমত। আর কাটতে শুরু করেছে ধোয়াশা।
কুমিল্লা ট্উান হলের আধুনিকায়তন নিয়ে পর্দার আড়ালে নানা চক্রান্ত চললেও উদ্যোগ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন কুমিল্লার কুমিল্লার গণমানুষের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি। তিনি কুমিল্লার বিভিন্ন পেশাজীবিসহ ঢাকায় বসবাসরত কুমিল্লার বিশিষ্ট নাগরিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করে যুক্তিকতা তুলে ধরছেন। এতে বাড়ছে জনমত।
বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টায় কুমিল্লা টাউন হল আধুনিকায়নসহ সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা কুমিল্লা টাউন হল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে।মতবিনিময় সভায় কুমিল্লার উন্নয়ন ও টাউন হল নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হবে।
বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন ( কুমিল্লা টাউন হল) শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বহু বছরের পুরোনো ঐতিহ্যে লালিত স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন। জরাজীর্ণ এ স্থাপনা ভেঙ্গে আধুনিকায়তনের উদ্যেগ নেন কুমিল্লা সদর আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।এটি ভেঙে নতুন করে বহুতলবিশিষ্ট আধুনিক স্থাপনা নির্মাণ করার প্রস্তাব করেন (ডিও ) সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ে। যার পরিপ্রেক্ষিতেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় গণপূর্ত বিভাগকে কুমিল্লা টাউন হল নিয়ে একটি নকশা করার দায়িত্ব দেয়।
বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তনকে ভেঙে ‘আধুনিকরূপে’ সাজানোর বিষয়ে কুমিল্লার বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সুধীজনদের সঙ্গে গত ২ সেপ্টেম্বর মতবিনিময় সভা করেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও টাউন হলের সভাপতি আবুল ফজল মীর।
সভায় তত্বাবধায়ক স্থপতি আসিফ রহমান ভূঁইয়া নতুন নকশায় টাউন হল ও বীরচন্দ্র পাঠাগারের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। এ সময় জানানো হয় নতুন স্থাপনায় পুরোনো ঐতিহ্য বজায় রেখেই নতুন আদলে ও আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্নভাবে তৈরী করা হবে। যেখানে একদিক দিয়ে প্রবেশ ও অন্য দিক দিয়ে প্রস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। থাকবে দুটি বেজমেন্ট যেখানে অন্তত ৭০ টি গাড়ি পার্কিং করা যাবে। এছাড়াও আরো অনেক সুবিধার বিষয় তুলে ধরা হয়।
সভা শেষে সাংবাদিকদের আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি বলেন,“ সাত বছর ধরে টাউন হলের আধুনিকায়ন নিয়ে কাজ করছি। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আশ্বস্ত করেছে। আশা করছি সুন্দর একটি স্থাপনা হবে। আর কুমিলার মানুষ আমাকে সহযোগিতা করলে দ্রুত এ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেওয়া যাবে। তবে বৈঠকে উপস্থিত সুধীসমাজের অনেকেই মত দিয়ে বলেছেন- টাউন হল ভবনের স্থাপত্যশৈলীটি ঠিক রেখে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হোক।”
এরপর টাউন হল না ভাঙ্গার জন্য বিবৃতি আর শুরু হয় পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা সমালোচনা। এ প্রসঙ্গে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ সংবাদিকদের জানান, ‘ কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলে এই ভবনকে রক্ষা করেই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।’
কুমিল্লা বীরচন্দ্র নগর মিলনায়তন ও গণপাঠাগার (টাউন হল) আধুনিকায়ন হবে কি হবে না সিদ্ধান্ত নেবে কুমিল্লার মানুষ। এ ব্যাপারে একটি গণশুনানির প্রয়োজন। ঢাকায় বসবাসরত কুমিল্লার বিশিষ্ট নাগরিকরা এক সভায় কুমিল্লা টাউন হল সংস্কার প্রশ্নে তাদের মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে এ কথা বলেন।
এদিকে গত শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জনতা টাওয়ারে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার।
কুমিল্লার ইতিহাসবিদ ও গবেষক অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক বলেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ওই সভায় আমিও ছিলাম। আমি সভায় বলেছি নতুন স্থাপনা করেন, এতে কোনো আপত্তি নেই। তবে নতুনের সঙ্গে পুরোনো ঐতিহ্য থাকতে হবে। পুরনো স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন ও নান্দনিকতা রয়েছে এ বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তনে। নতুন স্থাপনার সঙ্গে এই নান্দনিকতা থাকতে হবে। যুগের সঙ্গে পরিবর্তন দরকার, তবে আধুনিকতার সঙ্গে ঐতিহ্যকে সংযুক্ত করতে হবে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু তাহের বলেন, এই জরাজীর্ণ টাউন হল ভেঙে দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক টাউন হল নির্মাণ করা কুমিল্লারসচেতন নাগরিকদের একান্ত দাবী হওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রিয় সভাপতি সালেহা আক্তার বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমানের অংশ হিসেবে জরাজীর্ণ কুমিল্লার টাউন হলের আধুনিকায়ন কুমিল্লাবাসীর সময়ের দাবীতে পরিনত হয়েছে।
সাংবাদিক মো.লুৎফুর রহমান বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজপরিবারের স্মৃতি বহন করা টাউন হলটি কুমিল্লাবাসীর গৌরব ও প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতীক। কুমিল্লা টাউন হলের সংস্কার চাই তবে ঐতিহ্য বজায় রাখতে হবে। নতুন স্থাপনা বির্নিমান আগের ডিজাইনটির ছোঁয়া রাখলে এতে আধুনিকতার কদর বাড়বে।
আধুনিক টাউনহলে যা থাকবে:
#বর্তমান হলের উপরের অংশের নাম উৎকীর্ণ অংশের পূর্ব- পশ্চিমে প্রলম্বিত ডিজাইনটির আদলেই হবে নতুন স্থাপনার উপরের অংশের আদল।এবং যেখানে বর্তমানের মতই লেখা থাকবে ” বীর চন্দ্র গনপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন”
# আধুনিক এবং বৃহৎ ডিজিটাল পাঠাগার ।
# অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সহ একাধিক মিলনায়তন ।
# সবচেয়ে বড় মিলনায়তনটিতে সাত শতাধিক দর্শকের বসার ব্যবস্থা থাকবে।
# এছাড়া ১৫০ থেকে ২০০ আসনবিশিষ্ট মিনি হলের বন্দোবস্ত করার পাশাপাশি আধুনিক নাট্যমঞ্চ করার পরিকল্পনা রয়েছে ।
# আধুনিক গ্রিন রুম, মহড়া কক্ষ, প্রক্ষালন কক্ষ ( ওয়াশ রুম ) ভিআইপি লাউঞ্জ, অতিথি কক্ষ ইত্যাদি।
# মিনি থিয়েটার এবং সিনে কমপ্লেক্সও থাকবে।
# প্রায় শতাধিক গাড়ির জন্য দ্বিতল গাড়ি পার্কিং,
# প্রবেশ ও বাইরের আলাদা সড়ক।
# ফুড কোর্টসহ নানা ধরনের কক্ষ ।
# এছাড়া জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকমানের যে কোন অনুষ্ঠান করা যাবে প্রস্তাবিত এই মিলনায়তনে।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিন। এছাড়া protisomoy ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন ও বেলবাটন ক্লিক করে নতুন নতুন ভিডিও নিউজ পেতে অ্যাকটিভ থাকুন
Last Updated on December 3, 2020 12:36 am by প্রতি সময়