পানিবদ্ধতার মতো দীর্ঘদিনের সমস্যা পিছু ছাড়ছে না কুমিল্লা নগরবাসীর। রবিবার (৪ জুলাই) ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত টানা ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকা। নগরীর প্রধান সড়কগুলোও ছিল পানির তলে। মানুষের বাসাবাড়ি, হাসপাতাল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়। দুর্ভোগে পড়া বাসাবাড়ি দোকানপাটের লোকজন আষাঢ়ে বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়া ছবি ও ভিডিও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কুমিল্লা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে রবিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়ছে। এসময় মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। তাই চলতি সপ্তাহ এবং আগামী সপ্তাহে মাঝারি ও ভারি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
নগরজুড়ে পানিবদ্ধতার এ দায় নিতে চাইছে না কুমিল্লা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ রেখে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফোর লেনের কাজ করায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাসন হতে না পারায় নগরীতে এঅবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবী কুসিক কর্তৃপক্ষের।
এদিকে কুসিক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, নগরীতে যেনো বৃষ্টির পানি জমে না থাকে সেজন্য নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকার পানি বের হওয়ার জন্য রেইসকোস ও টমছম ব্রিজ খাল রয়েছে নগরীতে। কিন্তু সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফোর লেনের কাজ করতে গিয়ে টমছম ব্রিজ খালের মধ্যে মাটি ফেলছে। এতে খাল সরু হয়ে গেছে। ফলে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে কাজ না করার জন্য তাদেরকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজা-ই-রাব্বি বলেন, কুসিকের চিঠি পেয়ে ফোর লেনের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
রবিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর প্রধান সড়ক কান্দিরপাড়, লাকসাম রোড, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড আবাসিক এলাকা, টমছম ব্রিজ, আশ্রাফপুর ইয়াসিন মার্কেট, সদর হাসাপাতালের ভেতর, নজরুল অ্যাভিনিউ, দক্ষিণ চর্থা, কাপ্তান বাজার, রেইসকোর্স, ঠাকুরপাড়া ,শাকতলা, চকবাজার, কাপড়িয়াপট্টি, গোয়ালপট্টিসহ বিভিন্ন সড়ক বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে ঘরবন্দি হয়ে পড়ে ওইসব এলাকার বাসিন্দরা। তাদেরকে নানাভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা গেছে।
কুমিল্লা সদর হাসপাতালের ভেতর পানি ঢুকে থৈ থৈ অবস্থা দেখা দেখে। হাসপাতালের জরুরি চিকিৎসাসেবা ছাড়া সব বিভাগে সেবা বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মোবারক হোসেন দিগন্ত জানান, সকাল থেকে ভারি বৃষ্টিতে সিভিল সার্জন অফিস ও সদর হাসপাতালে কোমরপানির সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে স্টোরসহ বিভিন্ন রুমে পানি ঢুকে ওষুধ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া ডাক্তারদের সবার কক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় জরুরি সেবা ছাড়া বহির্বিভাগের সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে লকডাউনে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এলাকায় দোকানপাট বন্ধ থাকায় অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট করেছে।
Last Updated on July 4, 2021 7:29 pm by প্রতি সময়