# মানববন্ধনে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের বাধার অভিযোগ" />
ইপিজেডের বিষাক্ত তরল বর্জ্যে কুমিল্লা দক্ষিণাঞ্চলের ৫৫টি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো কৃষকের হাহাকার থামছে না। দীর্ঘ বছর ধরে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষক ও সাধারণ মানুষ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে প্রতিকার চেয়েও কোনো সুফল পাননি। বছরের পর বছর ধরে কৃষক পরিবারগুলোর হাহাকার সংশ্লিষ্টরে কানে পৌঁছে না।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কৃষক সমবায়ী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে ‘বিষাক্ত বর্জ্যে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের জনগণের ক্ষতিপূরণ আদায় ও মহানগরের প্রাকৃতিক খালের সাথে বিষাক্ত তরল বর্জ্যরে সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণের দাবিতে’ পূর্বঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ ও স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের বাধায় পণ্ড হয়ে যায়। পরে প্রতিবাদী জনগণ শ্রীনিবাস এলাকায় ঘুইঙ্গাজুড়ি খালের ব্রিজের ওপর এ কর্মসূচি পালন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর পক্ষে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের জন্য সদর দক্ষিণ উপজেলার জেলখানাবাড়ী এলাকায় ঘুইঙ্গাজুড়ি খালের পাড়ে তারা একত্রিত হয়েছিলেন। বিষয়টি পুলিশকেও অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্ষতিগ্রস্তরা সমবেত হতে থাকলে পুলিশ ও স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এতে বাধা দেয়।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কৃষক সমবায় ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আক্তার হুসাইন, সমবায়ী নেতা সিরাজুল হক, ইসমাইল মজুমদার, ইউসুফ আলী মীর পিন্টু, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সুমন, ওমর ফারুক চৌধুরী, মাসুদ করিম, হাফেজ বেলাল হোসাইন, মিনহাজ হোসেন শামীম, আবুল কালাম আজাদ খোকা, দেলোয়ার হোসেন, মোস্তফা কামাল প্রমুখ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার নানা শ্রেণীপেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য মো. মনিরুল হক চৌধুরী পুলিশি বাধার কারণে অংশ নিতে পারেননি।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কুমিল্লা ইপিজেড এবং এর বাইরের দুইটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের রাসায়নিক (বিষাক্ত) তরল বর্জ্য আশপাশের অর্ধশতাধিক গ্রামের কৃষকদের ফসলের জমি, খাল-বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের পানিতে মিশে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি করছে। এছাড়াও বিষাক্ত বর্জ্যে জলজ উদ্ভিদ-মাছ মরে যাচ্ছে, কালো পানি থেকে উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এতে শহরের দক্ষিণের অন্তত ৪০ কিলোমিটার এলাকার বাসিন্দারা পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা জীবন বাঁচাতে দীর্ঘ বছর ধরে নানা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, এটাতো কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না, এটা ছিল ৫৫টি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বেঁচে থাকার প্রশ্নে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। এতেও বাধার মুখে পড়তে হলো।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার বিন আবেদ জানান, ‘এখানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের অনুমতি ছিল না। তবে মানববন্ধনের খবর পেয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দিয়েছে। এতে শান্তিভঙ্গের আশঙ্কায় সেখানে মানববন্ধন করতে দেয়া হয়নি। তাই তারা বিকল্প স্থানে এ কর্মসূচি পালন করেছে।
Last Updated on February 12, 2024 7:22 pm by প্রতি সময়