আজ ৮ ডিসেম্বর। কুমিল্লার পাশাপাশি চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর বলয় থেকে মুক্ত হয়েছিল। কুমিল্লা, চাঁদপুর, ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া একইদিনে পাকবাহিনীকে পরাস্ত করে মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়।একসময়কার বৃহত্তর কুমিল্লার এই তিনটি জেলায় আজ পালিত হচ্ছে মুক্তদিবস।
চাঁদপুর: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের মাউন্টেন ব্রিগেড ও ইস্টার্ন সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের যৌথ আক্রমণে ৩৬ ঘণ্টা তীব্র লড়াইয়ের পর ৮ ডিসেম্বর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলা এবং বিনা প্রতিরোধেই চাঁদপুর মুক্ত হয়। চাঁদপুর থানার সম্মুখে বিএলএফ বাহিনীর প্রধান মরহুম রবিউল আউয়াল কিরণ প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে চাঁদপুর পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২০১৩ সালে বড় স্টেশনের বদ্ধভূমিতে নির্মাণ করা হয় ‘রক্তধারা’। এর আগে চাঁদপুরের প্রথম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কালাম, খালেক, সুশীল ও শংকরের নামে ট্রাক রোডে নির্মাণ করা হয় ‘মুক্তিসৌধ’। চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র লেকের উপর দৃশ্যত ভাসমান স্মৃতিসৌধ ‘অঙ্গীকার’ নির্মাণ করা হয়। এছাড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নাম সম্বলিত স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া চাঁদপুর পৌরসভার ৫ রাস্তার মোড়ে নির্মাণ করা হয় ‘শপথ চত্বর’।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদারমুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ওড়ানো হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা। একই দিনে সরাইলও পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেক মুক্ত করেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর আখাউড়াকে শত্রুদের হাত থেকে মুক্ত করার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী। তবে ৬ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে পালানোর সময় স্বাধীনতাবিরোধীদের সহযোগিতায় নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় পাক হানাদাররা। ওইদিন তৎকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কেএম লুৎফুর রহমানসহ কারাগারে আটকে রাখা অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে স্থানীয় কুরুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে পাক বাহিনী। কিন্তু মুক্তাবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর শক্ত অবস্থানের কারণে ৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাক হানাদাররা ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। এর ফলে বিনা যুদ্ধেই ৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শত্রুমুক্ত হয়। ওইদিন সকালে শহরের পুরাতন কাচারী ভবনের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হয়। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চল জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী সেদিন পতাকা উত্তোলন করেন। একই দিনে শত্রুমুক্ত হওয়ায় সরাইল থানা চত্বরেও উত্তোলন করা হয় লাল-সবুজের পতাকা।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিন। এছাড়া protisomoy ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন ও বেলবাটন ক্লিক করে নতুন নতুন ভিডিও নিউজ পেতে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on December 8, 2020 11:45 am by প্রতি সময়