কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকা বর্তমানে করোনা মহামারির উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে জেলায় সদ্য যোগদান করা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন দিগন্ত বলেছেন, ‘কুমিল্লায় আশংকাজনক হারে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।সবচেয়ে বেশি বাড়ছে কুমিল্লা নগরীতে। তাই আমরা নগরীকে বেশি ফোকাস দিচ্ছি।করোনা মোকাবেলায় সরকারের জারি করা নির্দেশনা কার্যকর করতে জেলা প্রশাসন ও আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসা সেবায় কুমিল্লা জেলার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিকগণের ভূমিকা কী হবে এমন প্রসঙ্গ তুলে ধরে সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন দিগন্ত বলেন ‘বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আমরা জেলার করোনা পরিস্থিতি এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনায় বলেছি- করোনা মহামারির শুরুতে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীদের চিকিৎসাসেবা না দিয়ে যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিল, এবারে এটি করা যাবে না। রোগী আসলে আগে তাকে ভর্তি করাতে হবে, যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিতে হবে, তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে রোগী এখানে চিকিৎসা নিবে নাকি অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। ’
কুমিল্লায় সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে অনীহা দেখা যাচ্ছে মন্তব্য করে নবাগত সিভিল সার্জন বলেন, ‘কুমিল্লায় প্রায় ৬০ লাখ মানুষ বসবাস করেন। এর মধ্যে মাত্র ২ লাখ ৫৭ হাজার ৯৩৯ জন নাগরিক করোনার টিকা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন। আর করোনার টিকা নিয়েছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার ৮২৫ জন। অথচ প্রথম দফায় কুমিল্লার জন্য মোট ২ লাখ ৮৮ হাজার ডোজ করোনার টিকা এসেছে। সেগুলো এখনো নাগরিকদের মাঝে দেওয়া সম্ভব হয়নি। শুধুমাত্র নাগরিকদের টিকাগ্রহণে অনীহার কারণে। ’
জনগণের টিকা গ্রহণের ব্যাপারে কুমিল্লার গণমাধ্যমগুলোর ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করেন সিভিল সার্জন।
ডা. মীর মোবারক হোসাইন দিগন্ত আরও বলেন, ‘৩০ মার্চ করোনার টিকার প্রথম ডোজ প্রয়োগের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা বলা হলেও সরকার থেকে এখনো আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি। যার কারণে আমাদের প্রথম ডোজ প্রয়োগ এখনও চলছে। ’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি এলাকায় টিকা নিতে মাইকিং করা হচ্ছে। আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা দেওয়া হলেও গত ১৫ দিন ধরে প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেওয়া হচ্ছে। করোনা থেকে রক্ষা পেতে হলে- করোনা প্রতিরোধে সকলের টিকা গ্রহণের কোন বিকল্প নেই।’
মতবিনিময় সভায় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. সৌমেন রায়, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. ইকবাল হোসেন বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতে কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করেন।
Last Updated on April 1, 2021 9:15 pm by প্রতি সময়