রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
ব্রাহ্মণপাড়ায় গার্মেন্টস ব্যবসায়ী খুন কুমিল্লা নগরীতে নিষিদ্ধ পলিথিনের খুঁজে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর মুরাদনগরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত স্কুল ছাত্রের পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন সাবেক এমপি কায়কোবাদ জামায়াতকে শেষ করতে গিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা নিজেরা শেষ হয়ে গেছে : সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের ‘আমার মা জোহরা তাজউদ্দীন আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিল, পরে দলটি একটি পরিবারের হাতে বন্দি হয়ে গেল’ দৈনিক আজকের জীবন পত্রিকার ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন দেবিদ্বারে অপহরণ ও ডাকাত দলের দুই সদস্য গ্রেফতার বারুর আলী হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছরিন আক্তারের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী আজ দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে রুখে দেবে ছাত্র জনতা : কুমিল্লায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আওয়ামীপন্থি ২০ সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল কুমিল্লায় ছোট ভাইকে বাঁচাতে ডোবার পানিতে ডুবে বড় বোনের মৃত্যু মুরাদনগরে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত কুমিল্লা বরুড়ার ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মধ্যস্বত্বভোগীদের জালে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কুমিল্লার নিমসারের সবজিবাজার দাউদকান্দিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত দুই কিশোরের লাশ উত্তোলন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃষিপণ্য বাজার নিমসারে খাজনা ও টোল আদায় স্থগিত মুরাদনগরে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন ছুটির দিনও ন্যাশনাল ব্যাংক কুমিল্লা শাখা খোলা রেখে গ্রাহকের টাকা গ্রহণ করেছে বিএনপি পালিয়ে যাওয়ার দল নয় : স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ ৩৪৭টি গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বিজিডিসিএল, ৭ কোটি ৪০ লক্ষাধিক টাকা বকেয়া আদায়

কুবিতে আওয়ামীপন্থী রাজনীতিতে বড় বাধা ভিসি : অভিযোগ শিক্ষক ও ছাত্র নেতাদের

তুষার ইমরান, কুবি প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৮১ দেখা হয়েছে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ শিক্ষক সমিতির নির্বাচন। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরাই এ শিক্ষক সমিতিতে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু পরিষদ নামে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দুটি সংগঠন রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে দুটি সংগঠনের নেতাদেরই অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড এ এফ এম আব্দুল মঈন নিজের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখতে তার অনুগত শিক্ষকদের দিয়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে বাঁধা সৃষ্টি করছেন। এর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে স্তব্ধ করতে বঙ্গবন্ধু পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনায়ও তিনি বাঁধা প্রদান করছেন বলে অভিযোগ এ শিক্ষক নেতাদের।

এদিকে কমিটি বিলুপ্তির প্রায় এক বছর হয়ে গেলেও শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হয়নি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কমিটি বিলুপ্তির বছর পেরোলেও নতুন কমিটি না হওয়ার পেছনে উপাচার্যই দায়ী। এছাড়াও অছাত্র এবং প্রশ্নবিদ্ধ প্রার্থীদের কমিটিতে আনতে একাধিকবার কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে ধর্না দিয়েছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সর্বশেষ গত ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্যদের শ্রদ্ধা নিবেদনে সরাসরি বাধা প্রদান করেন উপাচার্য। বিষয়টি নিয়ে উপাচার্যের মতাদর্শ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।

 

এর আগে ২০২২ সালের পহেলা ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশের সভাপতি কাজী ওমর সিদ্দিকীসহ উপাচার্য পন্থি বেশ কয়েকজন শিক্ষক কতৃক নির্বাচনে হস্তক্ষেপের পর নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। এরপরে গত ১ বছরেরও বেশি সময়ে বেশ কয়েকবার সমিতি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলেও উপাচার্য পন্থি শিক্ষকদের অসহযোগিতায় বিষয়টি আর এগোয়নি।

 

সম্প্রতি শিক্ষকদের একটি অংশ সমিতি গঠনের উদ্যোগ নিলে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২০০ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করেন। এতেও উপাচার্যের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন পদে থাকা শিক্ষকদের একটি অংশ স্বাক্ষর করেননি। সর্বশেষ ৭ ফেব্রুয়ারী (বুধবার) শিক্ষকদের এক সাধারণ সভায় আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারী নির্বাচনের ঘোষণা দেয়া হয়।

 

তবে দীর্ঘ দিন সমিতি গঠন করতে না পারার বিষয়টি উপাচার্যের ইন্ধনে হয়েছে উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সর্বশেষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড দুলাল চন্দ্র নন্দি জানান, শিক্ষক সমিতির সর্বশেষ নির্বাচন ভন্ডুল করেছেন উপাচার্য পন্থী শিক্ষকগণ৷ স্পষ্টতই তারা নিজেদের সিদ্ধান্তে এমনটা করেনি। প্রশাসনের বিভিন্ন পদে তারা বহাল রয়েছেন। উপাচার্যের ইন্ধনেই এমনটা করেছে তারা। এখনও শিক্ষক সমিতি গঠন হোক, একটি অংশ সেটা তারা চায়না।

 

বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেজর স্টেক হোল্ডারদের প্রতিনিধিত্ব করে শিক্ষক সমিতি। কিন্তু উপাচার্য শিক্ষকদের মতামতকে অবনমন করতে খুবই চাতুর্যপূর্ণভাবে তার আস্থাভাজন কয়েকজনকে দিয়ে সমিতির নির্বাচন বানচাল করেছেন। তার নির্দেশেই গত এক বছরেরও বেশি সময়ে শিক্ষকদের কোন বৈধ প্রতিনিধিত্ব নেই। ২০১০ সালের পর থেকে কখনও শিক্ষক সমিতি অকার্যকর ছিল না। আরেকটি দিক হলো আমরা দেখেছি, ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই যখন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কারাগারে প্রেরণের মধ্যে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে স্তব্ধ করার প্রচেষ্টা চালায় স্বাধীনতা বিরোধীরা। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকগণ রাজপথে আন্দোলন করলেও বর্তমান উপাচার্য দেশ ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ায় পালিয়ে যায়। আবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও বঙ্গবন্ধুর পরিষদকে গত ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে বাধা প্রদান করেন। কাজেই বিষয়গুলো খুবই পরিস্কার। বস্তুত উপাচার্য মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে দুর্বল করার অপচেষ্টা বাস্তবায়নে তৎপর। তিনি সত্যাসত্য কোন মতাদর্শ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি তার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানাই।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদের কার্যক্রমে বিভিন্ন সময়ে উপাচার্যের অসহযোগিতা এবং উপাচার্যের নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের দুটি অংশের নেতারা।

 

বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশের (কামাল-মাহবুব) সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন জানান, উপাচার্য বরাবরই বঙ্গবন্ধু পরিষদের কার্যক্রমে বাধা প্রদান করে আসছেন। বিভিন্ন সময়ে তাঁর অসহযোগিতা পেয়েছি। সর্বশেষ গত ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে তিনি প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্যে আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদনে বাধা প্রদান করেন। যেটি প্রমাণ করে, তিনি মূলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুখে বললেও অন্তরে সেটি ধারণ করেন না।

 

বঙ্গবন্ধু পরিষদের অপর আরেকটি অংশের (ওমর-মাহবুব) সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুক হক ভুঁইয়া জানান, উপাচার্য মুখে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বললেও কাজে তার প্রতিফলন নেই। কেউ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করলে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম করতে পারেন না, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ন্যায্য প্রমোশন আটকে দিতে পারে না, অনিয়ম করে প্রক্টরের অবৈধ ডিগ্রির অনুমোদন দিতে পারে না। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষককে দিয়ে ক্যাডার বাহিনী গড়ে তুলেছেন, যারা অন্য শিক্ষকদের মারধর, গালিগালাজ করছে। এসব বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নয়। সর্বোপরি এই প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীদারের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রুদ্ধ করেছে। এগুলোর কোনটিকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসরণ বলা যায়?

 

এদিকে ২০২৩ সালে ৬ মার্চ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির পর প্রায় বছর পার হতে চলেছে। তবে বিভিন্ন সময়ে কমিটি গঠনের গুঞ্জন এবং কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলেও পুনরায় কমিটি গঠিত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের অন্তত দশজন নেতাকর্মীদের সাথে কথা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, উপাচার্য নিজের পক্ষে কমিটি আনতে বিভিন্ন সময়ে অছাত্র এবং ভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয়ের ব্যক্তিতের দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের দারস্থ হয়েছেন। এমনকি বিভিন্ন সময়ে এজেন্ডা বাস্তবায়নে বাঁধা হওয়ায় শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও বহিষ্কার করেছেন।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোন কমিটি নেই৷ শুরু থেকেই বিভিন্ন সময়ে উপাচার্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একজনের বিরুদ্ধে অপরজনকে ব্যবহার করে কোন্দলে জড়িয়েছেন। শাখা ছাত্রলীগের কোন কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকুক, সেটি তিনি চাননা। যাদের বিরুদ্ধে শিবিরের সাথে যোগসূত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির সাথে থাকার অভিযোগ আছে, বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে তিনি তাদের বিষয়ে তদবির করেছেন। অপরদিকে প্রশাসনের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নে বাধা হওয়ায় গত বছরের ৬ মার্চ কমিটি বিলুপ্তির ঠিক পরদিনই ৭ মার্চ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আমাদের বহিস্কার করেছিলেন। বস্তত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোন রাজনীতি থাকুক সেটি উপাচার্য চায়না।

 

তবে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈন বলেন, ‘ফুল দিতে দেয়নি এটি সত্য নয়। স্বদেশ প্রর্তাবর্তন দিবস পালনে আমি একটি ম্যানেজম্যান্ট কমিটি করি। শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমি তাদেরকে উপাচার্যের বক্তব্যের পরে ফুল দিতে বলেছি।’

Last Updated on February 7, 2024 11:46 pm by প্রতি সময়

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...

বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন।

themesba-lates1749691102