কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ফ্যানের সুইচ বন্ধ করাকে কেন্দ্র করে শেখ সজীব নামে মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে একই শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও আহত সজীবের রুমমেট আবু সাঈদ আহমেদ।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৫১৮ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হল প্রভোস্ট বরাবর অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শেখ সজীব।
প্রত্যক্ষদর্শী এক রুমমেট জানায়, শনিবার বিকেল ৪টার দিকে বাড়ি থেকে হলে ফিরে আসেন সজীব। এসে গরম লাগার কারণে রুমের ফ্যান ছেড়ে দিলে তার রুমমেট সাঈদ আহমেদ ফ্যান বন্ধ করতে বলে। এক পর্যায়ে সাঈদ নিজেই ফ্যান বন্ধ করে দেয় এবং সজীব আবার ফ্যান ছেড়ে দিলে সাঈদ পুণরায় ফ্যান বন্ধ করে এবং ফ্যানের রেগুলেটর ভেঙে ফেলে। পরে এ নিয়ে দুই জনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।
বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সাঈদের বিছানার নিচে থাকা এসএস পাইপ নিয়ে সজীবকে আঘাত করেন। পরে অন্যান্য রুমমেট ও পাশের রুমের সহপাঠীরা এসে সজীবকে উদ্ধার করে এবং সাঈদকে আরেক রুমে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সজীব ডান হাতের বাহু, পেট এবং মাথার ডানপাশে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে সহপাঠীরা তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইজ্ঞিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. হুমায়ুন বলেন, হৈচৈ শুনে আমি ওই রুমে আসার পর দেখি সাঈদের হাতে রড এবং দুজন তাকে থামানোর চেষ্টা করছে। তবুও সাঈদ সজীবকে আঘাত করে।
এ বিষয়ে আহত শেখ সজীব বলেন, গরম লাগার কারণে রুমের ফ্যান চালু করি। তখন সাঈদ সাথে সাথে ফ্যান বন্ধ করতে বলে। আমি দুই মিনিট অপেক্ষা করতে বলি কারণ আমার গরম লাগছে। তখন সাইদ ফ্যান বন্ধ করে দেয় এবং এক পর্যায়ে ফ্যানের রেগুলেটর ভেঙে ফেলে। এসময় আমি কারণটি জানতে চাইলে সে আমাকে গালি দেয় এবং তার বেডের নিচ থেকে একটা পাইপ বের করে আমাকে জোরে আঘাত করে। তিনি আরও বলেন, এরআগেও সাঈদ অনেককে মারধর করতে উদ্যত হয়। এখন আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। তাই প্রভোস্ট স্যার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাঈদ আহমেদ বলেন, বিকালে আমি রুমে শুয়েছিলাম। সজীব বাসা থেকে রুমে এসে ফ্যান ফুল স্পিডে ছেড়ে দেয়। ফ্যানে ময়লা থাকার ফলে পুরো রুমে ময়লা ছড়িয়ে পড়ে ফলে আমি ফ্যান বন্ধ করে দেই। তখন সজীব বলে ফ্যান বন্ধ করলি কেন? এসময় সজীব আবার ফ্যান দেয় এবং আবার আমি বন্ধ করে দিলে তখন সজীব আমাকে ধাক্কা দেয় এবং কথা কাটাকাটি হয়। তখন রুমে ব্যাচমেটরা চলে আসে। এক পর্যায়ে সজীব দুই লিটারের বোতল দিয়ে আমারকে আঘাত করে। পরে আমি ওকে পাইপ দিয়ে আঘাত করি।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত হল প্রভোস্ট মু. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমরা বিষয়টি অবগত আছি। কালকে আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে বসে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, এটি হলের অভ্যন্তরীণ বিষয় তাই এটি হল প্রশাসন দেখবে। তবে হল প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা চাইলে আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব।
Last Updated on February 17, 2024 11:05 pm by প্রতি সময়