[জেলা গঠনের নামে এধরণের দাবী নির্বাচনের তুরুপের তাস]" /> কুমিল্লাকে বিভক্ত করে নতুন জেলা হওয়ার কোনো যুক্তি নেই – প্রতিসময়
শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
পেশাগত স্বচ্ছতাই পারে সমাজে সত্য ও সুন্দর প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে : কুমিল্লা প্রেসক্লাব সভাপতি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে মহান বিজয়ের মাস জুড়ে কর্মসূচির উদ্বোধন কুমিল্লা নগরীর উনাইসারে বাসে আগুন দেবিদ্বার আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদকে হুমকি : স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির নোটিশ ব্রাহ্মণপাড়ায় বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা পেল সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী কুবিতে ভলিবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ফিন্যান্স ও বাংলা বিভাগ দলবদল ডিগবাজি নয়, সাংবিধানিক অধিকার : ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর মুরাদনগরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিরুদ্ধে সেবা প্রত্যাশি ও গ্রাহকদের নানা অভিযোগ কুমিল্লার ১১টি আসনে নির্বাচনি নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে অনুসন্ধান কমিটি জীবনধারার পরিবর্তনই নিজের ও পরিবারের সবার হার্টকে সুস্থ রাখবে : ডা. তৃপ্তীশ কুমিল্লার ১১টি আসনে ৫৬ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা কুমিল্লার ৫টি সংসদীয় আসনে ২৯ জনের মনোনয়ন বৈধ, বাতিল ও স্থগিতের তালিকায় হেভিওয়েট ৯ স্বতন্ত্র প্রার্থী দাউদকান্দি-তিতাস এলাকায় মেরিন ফিশারী একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হবে : ইঞ্জিনিয়ার সবুর ভূমিকম্পে কুবির আবাসিক হলের দেয়ালে ফাটল মনোনয়ন বাতিলের ষড়যন্ত্র চলছে, সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা-৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী টিটুর অভিযোগ এমপি রাজি মোহাম্মদ ফখরুলকে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কারণ দর্শানো নোটিশ কুমিল্লায় ভূমিকম্প আতঙ্কে ২০ জন আহত দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত, উৎপত্তিস্থল কুমিল্লার রামগঞ্জ অঞ্চল ভবিষ্যত গঠনে সর্বোত্তম সময় ছাত্রজীবন অনূর্ধ্ব-১৮ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা জেলা দল

কুমিল্লাকে বিভক্ত করে নতুন জেলা হওয়ার কোনো যুক্তি নেই [জেলা গঠনের নামে এধরণের দাবী নির্বাচনের তুরুপের তাস]

প্রতিসময় ডেস্ক
  • আপডেট টাইম সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১
  • ২৪৮ দেখা হয়েছে
শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির পাদপীঠ ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের জেলা শহর কুমিল্লা। এটি ব্রিটিশ-ভারতের প্রাচীনতম শহর। আগে এর নাম ছিল ত্রিপুরা জেলা। ১৯৬০ সালে প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের ফলে কুমিল্লা পৃথক জেলার মর্যাদা পায়। গোমতী নদীর তীরে এ শহরের অবস্থান। একে বলা হয় পথিকৃৎ কুমিল্লা। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে কুমিল্লার অবস্থান। বর্তমানে ১৭টি উপজেলার একটি পরিপূর্ণ আবাসিক জেলা হিসেবে সুনাম রয়েছে এই কুমিল্লার । ইতিহাস-ঐতিহ্যের জেলা কুমিল্লাকে বিভক্ত করার নানান কথা শোনা যাচ্ছে।এধরণের বিভক্তির সুর নির্বাচনের জন্য একধরণের ট্রামকার্ড। আর নিয়েই কুমিল্লার জনপ্রিয় সাংবাদিক, ফিচার লেখক ইয়াসমীন রীমার একটি লেখা ‘প্রতিসময়’ এর বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগে প্রকাশ করা হলো।

কুমিল্লাকে বিভক্ত করে নতুন জেলা হওয়ার কোনো যুক্তি নেই

-ইয়াসমীন রীমা-

প্রশাসনিক সেবা মানুষের কাছাকাছি যত পৌঁছানো যায় ততো দেশের মানুষের অবস্থার উন্নতি হবে। একসময় জেলা সদর ও উপজেলার সাথে গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত দুর্বল। কারণ পাকা রাস্তা ছিল অত্যন্ত অপ্রতুল। প্রায় স্থানে মানুষ খাল ও নদী পার হতো বাঁশের সাঁকো দিয়ে। এছাড়া কোন বিকল্প ব্যবস্থা ছিল না। তাই দূর-দূরান্তে বসবাস করা মানুষজন সেবা নেওয়া বা সেবা প্রদানকারীদেরকে অনেক ভোগান্তি সহ্য করতে হতো।

এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য বিগত দুই-তিন দশকে উপজেলা ব্যবস্থা যেমনি শক্তিশালী করা হয়েছে, তেমনি যৌক্তিক কারণে অনেক নতুন পুলিশ ফাঁড়ি/থানা হয়েছে। অন্যদিকে প্রচুর রাস্তা-ব্রিজ ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এই দুইয়ের সাথে যোগ হয়েছে ডিজিটাল সুযোগ-সুবিধা। তাই জনগণের সেবা পাওয়ার দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে অনেকটাই।

অন্যদিকে সেবা বিকেন্দ্রীকরণ ও তথ্য-প্রযুক্তির সুবিধার কারণে মানুষকে আগের মতো আর জেলা বা বিভাগের উপর নির্ভর করতে হয় না। বিকেন্দ্রীকরণ, শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাওয়া, ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সেবার মান অতীতের তুলনায় অনেক প্রত্যাশিত স্তরে পৌঁছেছে। তারপরও এটা সত্য বিকেন্দ্রীকরণ ও মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ও উত্তর-উত্তর আধুনিকায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। যেমন- একসময় মোবাইল ছিল টু-জি, পরে থ্রি-জি, ফোর-জি হয়েছে। এখন বাংলাদেশ ফাইভ-জি দ্বারপ্রান্তে।

ঠিক তেমনি এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর এবং কুমিল্লা সংযোগে বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা। বর্তমানে কুমিল্লা ত্রিখন্ডিত হয়ে তিনটি জেলা।  আবার কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা ভাগ হয়ে লালমাই ও সদর দক্ষিণ এবং লাকসাম দ্বিভাগ হয়ে লাকসাম-মনোহরগঞ্জ উপজেলা হয়েছে মানুষকে সেবা দেওয়ার যুক্তিকতার ভিত্তিতে।

কিন্তু তাই বলে এখন পূর্বের কুমিল্লাকে বির্নিমান করে আরো অসংখ্য জেলা-উপজেলা সৃষ্টি করা যৌক্তিক হবে না এবং এটা রাষ্ট্র ও জনগণের জন্যে কল্যাণকর নয়। প্রতিটি উপজেলা ছয় একর এবং জেলার জন্য একশো একর জায়গার প্রয়োজন হয়।  সেখানে স্থাপন করতে হবে অসংখ্য ইমারত, দিতে হবে অনেক অতিরিক্ত লোকবল, যার ব্যয়ভার বহন রাষ্ট্রের জন্য অবার্চীন।

অন্যদিকে বাংলাদেশ অনেক ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। খাদ্য উৎপাদনের জন্য জমি, মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য কলকারখানা স্থাপন, বসতির জন্য জমি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, অফিস-আদালতের জন্য জমি কোথায়? তাই কোন কোন উপজেলার প্রধান কার্যালয় থেকে অন্য প্রান্তের দূরত্ব ৩৫/৪০ কি.মি.। কোথাও সমুদ্র উপকূল এলাকায় কোথাও রাস্তা-ঘাট পুরো এলাকায় নাই, করাও অনেক কঠিন। আবার করলে টিকে না। সেসব এলাকায় উপজেলা বা জেলা নতুন করে স্থাপনের যুক্তিকতা বরাবরই শূন্য। কিন্তু কোথায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো, যেকোনো প্রান্ত থেকে এক ঘন্টায় জেলায় আর আধঘন্টায় উপজেলায় যাওয়া যায়। কিন্তু যেখানে জেলা-উপজেলা নতুন করে করার দাবী দীর্ঘদিন থেকে শুনে আসছিলাম। মানববন্ধন, পত্রিকা, রেডিও-টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়াতে মাঝে মাঝে ঝড় উঠে দেখে ভাবলাম কেন এই দাবি? সময়ের ব্যবধানে দেখলাম এই দাবিটা সারা বাংলাদেশের বেশিরভাগ জায়গায় হয় যখন জাতীয় নির্বাচন বা অন্য কোনো নির্বাচনের পূর্বে কিছু লোকজনকে এই ধরনের দাবি নিয়ে মাঠে সোচ্চার হতে দেখা যায়। আবার নির্বাচনের পরেই দাবি বা এই লোকগুলি তেমন দেখা যায় না।

এ কারণে আমার মনে হলো এই বিষয়টি নিয়ে একটু গভীরে গিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া দরকার। খবর নিয়ে নতুন অভিজ্ঞতা হল যে, যারা দাবি করছেন তাদের বেশিরভাগই জানে যে, এই দাবিগুলো বাস্তবসম্মত নয় এবং কোন নিয়মেই এই দাবি পূরণ হবে না। তাহলে কেন তারা এত উচ্ছ্বসিত বক্তব্য, মানববন্ধন করছেন ? কারণ হলো অনাগত নির্বাচনে নিজের জন্য জনগণের মাঝে একটু জায়গা করা এবং যিনি এখন দায়িত্বে বা ক্ষমতায় আছেন তাকে জনগণের নিকট বিতর্কিত করা যে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও এই দাবি পূরণ করতে পারে নাই বলে তারা ক্ষমতায় গেলে এই দাবি পূরণ হবে।

বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গায় যেমনি আছে তেমনি কুমিল্লাকে ত্রিখন্ডিত করার আন্দোলন খুব তুঙ্গে। কেউ চাচ্ছে দাউদকান্দি, কেউ যাচ্ছে চান্দিনা, আবার কেউ চাচ্ছে লাকসাম। খবর নিয়ে জানা যায় বাহ্মণপাড়া বুড়িচং দাউদকান্দির সাথে যেতে রাজি নয়। আবার চান্দিনার সাথে যেতে রাজি নয় তার পাশের উপজেলাগুলো। অন্যদিকে সদর, দক্ষিণ সদর, চৌদ্দগ্রাম, বরুড়া, লালমাই কেউ যেতে রাজি নয় লাকসামের সাথে। তারপরেও রাষ্ট্রের উপরস্তরে খবর নিয়ে জানলাম কোথাও আন্দোলনের কারণে জেলা হয় নাই, হয়েছে প্রয়োজন ও যুক্তিকতার কারণে।

তাই কুমিল্লার সকল উপজেলাগুলো চাইলেও কুমিল্লাকে বিভক্ত করে নতুন জেলা হওয়ার কোনো যুক্তি নেই। কারণ কুমিল্লায় যেকোনো উপজেলা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে আসা-যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো, এটা উপকূলীয় অঞ্চল বা হাওড় এলাক নয়, সমতল ভূমি।

এধরণের জেলা গঠনের দাবি হয় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা বা ক্ষমতাসীন ব্যক্তি নিজে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এই দাবির মাধ্যমে আবার জনগণের কাছে যাওয়ার একটি সিঁড়ি স্বরুপ। সর্বোপরি জ্ঞাত হলো এই দাবি নির্বাচনের তুরুপের তাস। তাই সতর্ক অগ্রগণ্য।

# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

Last Updated on August 2, 2021 11:29 pm by প্রতি সময়

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...

বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন।

themesba-lates1749691102