দখলদারদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মলমূত্র ও বর্জ্যে দুষিত হয়ে পড়েছে কুমিল্লা শহরের ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক পুরনো গোমতী নদীর দুইপাড়। কুমিল্লা জেলা প্রশাসন থেকে পাঁচ শতাধিক দখলদারের তালিকা করে তাদের নদীর জায়গা ছেড়ে দিতে অন্তত দশবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কে শুনে কার কথা! দখল দুষণে নদীর অসহায়ত্বের দৃশ্যে শহরের ও দুই পাড়ের সচেতন মানুষরা কিছুই বলতে পারছে না। কারণ নদী খেকোদের আচরণ দখলদারের মতো।
প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ পুরনো গোমতী নদীর দুই পাড়ের প্রায় দুইশো শতক জায়গা দখল হয়েছে। নদীর দুইপাড়ে বসবাসকারি সাধারণ মানুষ ছাড়াও আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয়পার্টি, জামায়াতে ইসলামি রাজনীতির সাথে যুক্ত ব্যক্তিরাও পুরনো গোমতী নদীর দুই পাড় ও পানির অংশ দখল করে সেখানে বাড়িঘর, দোকানপাট গড়ে তুলছেন। অবৈধ এসব স্থাপনায় মিলেছে বিদ্যুৎ, গ্যাস সংযোগ। নদীর উত্তর প্রান্তে শুভপুর এবং দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে চকবাজার হয়ে টিক্কারচর শশ্মানঘাট পর্যন্ত পাড় দখলের সাথে নদীর অংশও দখলে চলে গেছে। নদীর উত্তর প্রান্তে চাঁনপুর ও দক্ষিণ প্রান্তে চকবাজার, গর্জনখোলা, গাংচর অংশেও কমবেশি দখল হয়েছে। নদীর উত্তর প্রান্তে চাঁনপুর ফেরিঘাট অংশে, মোগলটুলি ফারুকি হাউজ রোডের পাড় দখল হয়ে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট গড়ে উঠেছে। নদীর দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে মোগলটুলি, ইসলামপুর, কাপ্তানবাজার এবং উত্তর প্রান্তে পশ্চিম চাঁনপুর ও গয়ামবাগিচা জুড়ে নদীর পাড় ও পানির অংশ দখল করে বাড়িঘর গড়ে উঠেছে।
একসময় কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রনে ছিল শহরের উত্তরপ্রান্তে অবস্থিত পুরনো গোমতী নদী। বর্তমানে নদীটি দেখভালের দায়িত্ব কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের। কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের তালিকায় পুরান গোমতীর দুইপাড় ও পানির অংশ দখল করে রেখেছেন এমন ৫২২ জনের নাম রয়েছে। যারা এ নদীটির প্রায় দুই একর (দুইশো শতক) জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন। ২০০৩ সাল থেকে অবৈধ দখলদারদের নদীর জায়গা ছেড়ে দিতে প্রশাসন থেকে অন্তত দশবার নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু দখলদাররা প্রশাসনের নোটিশের তোয়াক্কাই করে না।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on August 2, 2021 12:31 pm by প্রতি সময়