কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নাজমা বেগম (৫৫) নামের এক গৃহবধুকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মেঘনা থানায় হত্যা ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে দেলোয়ার(৩৫)নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়াও মেঘনা থানা পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ফারুক আব্বাসী ও তার নিকটাত্মীয়র বাড়ী থেকে দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার ভাওরখোলা ইউনিয়নের ভাওরখোলা গ্রামে এ হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটেছে।নিহত নাজমা বেগম একই গ্রামের আব্দুস সালামের স্ত্রী। হামলাকারী ও হামলার শিকার দুইপক্ষই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।
শনিবার দুপুরে সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আব্বাসীকে প্রধান আসামী করে এজাহারভুক্ত ২৩জনের নাম উল্লেখ করে ও ১৫জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মেঘনা থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। এছাড়াও বিপুল পরিমাণ দেশিয় অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক আরো একটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,ভাওরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আব্বাসীর সঙ্গে গত ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া নিয়ে একই গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সিরাজুল ইসলামের সাথে বিরোধ চলছিলো।নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ দিন এলাকায় আসতে পারেনি সিরাজ।শুক্রবার তার চাচাতো ভাই দিলবারের মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন।তবে সামনে ইউপি নির্বাচন হওয়ায় সিরাজের বাড়িতে আসার বিষয়টি মেনে পারেনি ফারুক আব্বাসী। এ কারনে শুক্রবার সন্ধ্যায় ফারুক আব্বাসীর নেতৃত্বে দেশীয় তৈরী অস্ত্র নিয়ে একদল সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায়।
এ সময় হামলাকারীরা নাজমা বেগমসহ ঘরে থাকা সকলকে কুপিয়ে আহত করে।আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।পুলিশ মৃত দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।মেঘনা থানা পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ফারুক আব্বাসীও তার নিকটাত্মীয়র বাড়ী থেকে ৮০টি টেঁটা, ১০টি ছেনা, ৩টি চাইনিজ কুড়াল, ৫টি ধামা, ৫টি ছোঁড়াসহ বেশকিছু বল্লম উদ্ধার করেছে।
মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আব্দুল মজিদ এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ ব্যাপারে হত্যা ও দেশীয় তৈরী অস্ত্র উদ্ধারে থানায় পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে।
মেঘনা উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ মিয়া রতন শিকদার বলেন,এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন এবং মেঘনা থানা পুলিশ যৌথভাবে মাঠে কাজ করছে।
কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (হোমনা সার্কেল) মো.ফজলুল করিম বলেন,আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের ২টি টিম মাঠে কাজ করছে,পুনরায় হামলা ও সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Last Updated on February 20, 2021 9:59 pm by প্রতি সময়