# ধারালো অস্ত্র, ককটেলসহ ঈগল ও রতন গ্রুপের ১৬সদস্য গ্রেফতার" />
কুমিল্লা নগরজুড়ে আবারো মাথাচাড়া দিয়েছে কিশোর গ্যাং বাহিনী। নগরীর পাড়া মহল্লায় আতঙ্কের বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কিশোর গ্যাং।আর এতে করে পাড়ামহল্লায় সাধারণ অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। গত বছর আইনশৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানে নগরজুড়ে গ্যাং কালচার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও নতুন বছরের শুরুতেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সক্রিয় কিশোর গ্যাং বাহিনীর বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যরা। এসব গ্রুপের ২০থেকে ৩০ জনের সংঘবদ্ধ দল শহরের বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেরাচ্ছে।
গত শুক্রবার বিকেলে প্রকাশ্যে কুমিল্লা সার্কিট হাউজের সামনে ‘ঈগল গ্রুপ’ এবং ‘রতন গ্রুপ’ নামে দুইটি কিশোর গ্যাং বাহিনীর মধ্যে সশস্ত্র মহড়া ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিলো। স্থানীয় একটি ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, দুই গ্রুপে অন্তত একশ জন কিশোর অস্ত্র প্রদর্শন ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করছে। বেশ কয়েকজনের হাতে রাম দা দেখা যায়। সার্কিট হাউজ এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা ককটেল বিস্ফোরণেরও ঘটনা ঘটায়।
এঘটনায় গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার ছুটির দিনে বিকেলে এই সড়কে নগর উদ্যানের দিকে অভিভাবকরা শিশু সন্তান নিয়ে যাওয়ার পথেও ভয়ভীতির মধ্যে পড়েন। কোতয়ালী থানা পুলিশ শুক্রবারের ঘটনায় সন্ধ্যার দিকে তিনজনকে আটক করে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য নিয়ে শুক্রবার রাতে আরও ১৩জনকে আটক করে।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ঈগল ও রতন গ্রæপের মোট ১৩ সদস্য গ্রেফতার, ১০টি ধারালো অস্ত্র এবং ৯টি ককটেল উদ্ধারের বিষয়ে প্রেসব্রিফিং করা হয়। পুলিশ সুপার আবুল মান্নান প্রেসব্রিফিংয়ে বলেন, কুমিল্লা জেলায় ১৫ থেকে ২০টি কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে। ৭ থেকে ২০ জন সদস্য নিয়ে তৈরি হয় একেকটি গ্যাং। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালায় গ্যাংগুলো। গত শুক্রবার বিকেলেও কুমিল্লা সার্কিট হাউজ মোড়ে ঈগল ও রতন নামে দুটি গ্যাংয়ের প্রকাশ্য অস্ত্রের মহড়া জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। শুক্রবার রাতে নগরীর বিভিন্ন ্থানে অভিযান চালিয়ে ১৬জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলো- কুমিল্লা কোতয়ালী থানাধীন ফজর আলীর ছেলে মো: শাওন হোসেন, মমিন হায়দারের ছেলে সাইমন আহমেদ, আবদুল মোতালেবের ছেলে মো: শাওন হোসেন, লিটন হোসেনের ছেলে বাদল হোসেন, জীবন সরকারের ছেলে প্রমিজ সরকার শান্ত, আবদুল্লাহর ছেলে মেহেদী হাসান সিয়াম, আবুল হোসেনের ছেলে মো: সাকিব, আ: মতিনের ছেলে মো: ফাহিম হোসেন, দুলাল মিয়ার ছেলে আরিফ হোসেন, মাসুদুর রহমান বাবুলের ছেলে সামবীর, সেলিম মিয়ার ছেলে আকিব হোসেন, মৃত আবুল কাশেমের ছেলে ফরহাদুজ্জামান পিয়াস, জামাল মিয়ার ছেলে আশরাফুল ইসলাম নিলয়, মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে কাইয়ুম হোসেন শাফি, আরজু মিয়ার ছেলে আতিকুর রহমান ও বিমল রায়ের ছেলে বর্ষন রায় জয়।
প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশফাকুজ্জামান, নাজমুল হাসান, কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ হোসেন, কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ দীনেশ বড়ুয়াসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
কোতোয়ালী থানার ওসি ফিরোজ হোসেন জানান, শুক্রবারের ঘটনায় ৪টি মামলা হয়েছে। এছাড়া কিশোর গ্যাং গ্রুপের প্রশয়দাতা কারা তাদের খুঁজে বের করতেও কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
Last Updated on February 3, 2024 7:49 pm by প্রতি সময়