একটি পরিবারের দুই বোনের নাম বাদ দিয়ে ওয়ারিশ সনদ দেওয়ায় কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পূর্বধইর (পশ্চিম) ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেছেন উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন নবীয়াবাদ গ্রামের মৃত আবদুস ছোবহানের দুই মেয়ে বাসনা বেগম ও শিউলি আক্তার। তবে দুইজনের নাম বাদ দিয়ে ওয়ারিশ সনদ প্রদানের বিষয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বারকে দুষলেন চেয়ারম্যান।
ওয়ারিশ সনদ থেকে নাম বঞ্চিত দুই বোন অভিযোগে উল্লেখ করেন, তাদের পিতা আবদুস ছোবহান মারা যাওয়ার সময় তিন পুত্র, ছয় কন্যা, ও স্ত্রী রেখে যান। গত ৪ জুন ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল রহিম পারভেজ ওই পরিবারের দুই কন্যা ওয়ারিশকে বাদ দিয়ে পরিবারের অন্যদের নামে একটি ওয়ারিশ সনদপত্র প্রদান করেন।
ওই ওয়ারিশ সনদপত্র প্রদানের ক্ষেত্রে পূর্বধইর পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল রহিম পারভেজ ও ৯ নং ওর্য়াড মেম্বার শফিকুল ইসলাম রহস্যজনক কারণে আবদুস ছোবহানের দুই কন্যার নাম বাদ রেখেছেন বলে অভিযোগ উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, মৃত আবদুস সোবানের স্থায়ী, অস্থায়ী সম্পত্তি তার ছেলে শাহআলম, শাহজাহান, মিজানুরসহ অন্য চার কন্যা ভোগ দখল করছে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, নাম বঞ্চিত দুই বোন চেয়ারম্যান ও মেম্বারের নিকট অনেক ঘুরাঘুরি করলেও তাদেরকে কোন ওয়ারিশ সনদ না দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে তারা উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার কাছে চেয়ারম্যানের নামে লিখিত অভিযোগ দেন।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, মৃত ব্যক্তির যতজন সন্তান আছে ওয়ারিশ সনদে সকলের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ভুক্তভোগী ওয়ারিশরা আদালতে মামলা করতে পারবেন।
পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সফিকুল ইসলাম বলেন, অনেকদিন আমি বিদেশ ছিলাম। গ্রামের অনেকের সাথে আমার পরিচয় কম থাকায় ওয়ারিশ সনদে সুপারিশ করাটা আমার ভুল ছিল। আমার ওয়ার্ডের লোক এসে আটজনের নাম দিয়ে ওয়ারিশ সনদ চাইছে তারা যে ওয়ারিশদার দশজন আছে তা আমার জানা ছিল না।
পূর্বধইর পশ্চিম ইউপি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল রহিম পারভেছ বলেন, সকল ওয়ার্ড মেম্বারগণ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নিজ নিজ দায়িত্বে ওয়ারিশ সনদপত্রের আবেদন নিয়ে তদন্ত করেন। আমার ইউনিয়নের কোন ওয়ার্ডে যেয়ে যাচাই বাছাই করা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না বলে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আমি ওয়ারিশ সনদ প্রদান করি। আমি পরস্পর শুনেছি ৯নং ওয়ার্ডের সফিকুল ইসলাম মেম্বার উৎকোচ বাণিজ্যের মাধ্যমে তথ্য গোপন করে আমাকে হয়রানি করার জন্য এই ওয়ারিশ সনদটি করিয়েছে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলাউদ্দিন ভূঁইয়া জনি বলেন, সঠিক প্রক্রিয়ায় ওয়ারিশ সনদ না দেওয়ার কারনে পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল রহিমের বিরুদ্ধে আমার দপ্তরে একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা সঠিকভাবে ওয়ারিশ সনদ না পেলে উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী ওয়ারিশগণ তাদের প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত হয়। আমি এই অভিযোগটি সঠিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরন করার জন্য সহকারি কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে প্রেরন করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Last Updated on September 8, 2023 7:29 pm by প্রতি সময়