প্রাথমিকের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাওহীদা ইসলাম ইলমাকে ধর্ষণ শেষে হত্যার দায়ে মোহাম্মদ আলী বাপ্পী নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় দেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার তাওহীদা ইসলাম ইলমা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। সে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গজারিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের কন্যা।
মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পী কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গজারিয়া গ্রামের মো. জাকারিয়ার পুত্র।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি এডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত ও এপিপি এডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ বিকেলের দিকে তৃতীয় শ্রেণীর পড়ুয়া নয় বছর বয়সী তাওহীদা ইসলাম ইলমা কে তেঁতুল খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে তার ঘরে নিয়ে মুখে ওড়না গুজে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
এরপর গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধে ইলমাকে হত্যা করে লাশ কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে ডাকাতিয়া নদীতে ফেলে দেয়। এদিন ইলমা কে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তার পরিবার থানায় জিডি ও মাইকিং করার সিদ্ধান্ত নিলে বাপ্পি নিজে থেকেই মাইকিংয়ে নিখোঁজ প্রচারণা চালায়। এতে তার প্রতি ইলমার পরিবারের সন্দেহ হলে তাকে আটক করে ইলমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরদিন ডাকাতিয়া নদীতে ইলমার লাশ ভেসে উঠে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য কুমেক হাসপাতালে পাঠায়। পরে মোহাম্মদ আলী বাপ্পিকে পুলিশ আটক করে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। বাপ্পি পুলিশ কে জানায় সে তার যৌন লিপ্সা চরিতার্থ করার জন্য ইলমা কে তেঁতুল খাওয়ানোর কথা বলে কৌশলে তার ঘরে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ও পরে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেয়।
এ ঘটনায় মামলার পর মোহাম্মদ আলী বাপ্পি ও একই এলাকার মিজানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরবর্তীতে সাক্ষ্য প্রমাণ ও যুক্তিতর্ক শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও অপর আসামি মিজানকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত।
আমরা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি। আশা করছি উচ্চ আদাল এ রায় বহাল রেখে দ্রুত কার্যকর করবেন।
Last Updated on April 2, 2024 7:33 pm by প্রতি সময়