কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান বাবলু।
শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ও মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় ৬১টি জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেয়া হয়। এরমধ্যে কুমিল্লায় প্রবীণ রাজনীতিক মফিজুর রহমান বাবলুকে জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১৭ অক্টোবর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রায় ১২ জন নেতা লবিং-তদবিরে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের ত্যাগী নেতা মফিজুর রহমান বাবলু হলেন নৌকার মাঝি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান বাবলু একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিক, প্রখ্যাত আইনজীবী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। ১৯৪৬ সালের ১০ আগস্ট জন্ম নেওয়া মফিজুর রহমান বাবলু তার মামা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি কাজী জহিরুল কাইয়ুমের হাত ধরে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে যুক্ত হোন। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন অবিভক্ত কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
সে সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালির মুক্তির সনদ ছয়দফা আন্দোলনে অংশ নেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ঊনসত্তরের গণআন্দোলনে অংশ নেন ডাকসুর সদস্য হিসেবে। সত্তরের নির্বাচনে দলের হয়ে কাজ করেন। অংশ নেন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদকের।
পরে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ১৯৮২ ও ১৯৮৮ সালে দলীয় কর্মসূচি পালনকালে বিএনপি ও ফ্রিডম পার্টির নির্যাতনের শিকার হন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান বাবলু।
তিনি ছিলেন ২ নাম্বার সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা। আগরতলার রাধানগরে যুব মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তিনি সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন। পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময় চৌদ্দগ্রামে তার নিজের বাড়িটি ছিল মুক্তিবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প। আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন সময়ে সেখানে বৈঠকে মিলিত হতেন। তার আরেকটি পৈতৃক বাড়িসহ এ দুটি বাড়িতে প্রায়ই পাকিস্তানি বাহিনী হানা দিত। একপর্যায়ে পাকিস্তানিরা একটি বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। মুক্তিযোদ্ধা বাবলুর চার চাচা সেই আগুনে শহীদ হন।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি মফিজুর রহমান বাবলু নিজেকে জড়িয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে।
Last Updated on September 10, 2022 11:24 pm by প্রতি সময়