মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে রয়েছে জেলার দাউদকান্দি, চান্দিনা, বুড়িচং, আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার অংশ বিশেষ। এর বাইরে রয়েছে কুমিল্লা সিটিকরপোরেশনের কিছু এলাকাও। মহাসড়কের প্রায় একশো কিলোমিটার রয়েছে কুমিল্লা অংশে। ঢাকা-চট্টগ্রামের অনেকটা মাঝামাঝি স্থানে হওয়ায় বানিজ্যিক ভাবে মহাসড়কের দু’পাশের কুমিল্লা অংশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য হোটেল-রেষ্টুরেণ্ট, বহুতল ভবনসহ নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের খাবারের উচ্ছিষ্ট, ময়লা আবর্জনা মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে প্রতিদিন। কেবল তাই নয়, মহাসড়ক এলাকার হাটবাজারের ময়লা আবর্জনা ও স্বজির উচ্ছিষ্ট অংশও ফেলা হচ্ছে মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের গৌরীপুর, তালতলি, মাধাইয়া, চান্দিনা, নিমসার, কাবিলা, নাজিরা বাজার, নিশ্চিন্তপুর, আমতলী, আলেখারচর, পদুয়ারবাজার, সুয়াগাজী, মিয়াবাজার, চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকায় মহাসড়কের পাশে কাঁচাবাজারের ময়লা-আবর্জনা ও বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ফেলার কারণে স্তূপ তৈরি হয়েছে। এসব স্তূপে প্রতিনিয়ত মহাসড়কের দুই পাশে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা অধিকাংশ হোটেল রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বর্জ্য, পচা শাকসবজি, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠাসহ নানা ধরনের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। আবার কোথাও রাস্তার পিচের ওপর আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এসব ময়লার ভাগাড়ে পশু-পাখি ও কুকুর-বিড়াল খাবারের উচ্ছিষ্ট ভক্ষণ করার সময় এলোমেলো করে মহাসড়কে ছড়িয়ে ফেলছে। সড়কের ওপরের এসব ময়লা-আবর্জনা যানবাহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং এসব ময়লা ধুলায় পরিণত হয়ে বাতাসে উড়ছে। বিশেষ করে বাতাসে ময়লা-আবর্জনা ও বিষাক্ত ধুলা উড়ে আশপাশের বাড়িঘরসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ছে। জেলার বুড়িচং উপজেলার নিমসার কাঁচাবাজার লাগোয়া দুর্গন্ধ ছড়ানো বড় ময়লার স্তূপ ও একই উপজেলার নাজিরা বাজার এলাকায় মহাসড়কের পাশে ময়লার স্তূপ স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বড় অভিশাপ বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।
দুরপাল্লার বিলাসবহুল গ্রীনলাইন, শ্যামলী, এসআলমসহ একাধিক পরিবহনের চালকরা জানান, মহাসড়কের এই অবস্থা দেখে চলন্ত গাড়ি থেকে অনেকেই মোবাইলে ছবি তোলেন। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব ছবি পোষ্ট করে। মহাসড়ক দিয়ে চলাচলরত যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীদের ময়লার দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চেপে চলতে হয়।
পদুয়ার বাজার, নাজিরা বাজার নিমসার এলাকার একাধিক স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিদিন হাট-বাজার, হোটেল-রেস্তোরাঁর বর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থেকে বিষাক্ত উত্কট গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। এতে রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এটা মহাসড়ক নয়, যেন ময়লার ভাগাড়। এটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের সর্বাগ্রে ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিষয়টি উপর নজর দেওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শওকত আরা কলি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের বর্জ্য ব্যবস্থা না থাকায় মহাসড়কের পাশে এই ময়লা ফেলা হচ্ছে। বিষয়টি বিভাগীয় কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে, তাছাড়া সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ময়নামতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লালন হায়দার জানান, ক্যান্টনমেন্ট, নাজিরা বাজার, কালাকচুয়া এলাকায় বিভিন্ন হোটেল, আবাসিক ভবন, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ময়লাগুলো রাতের আধারে ফেলা হচ্ছে। জায়গাটা যেহেতু সড়ক ও জনপদ বিভাগের, তাই এসব বন্ধে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
Last Updated on March 20, 2021 4:10 pm by প্রতি সময়