প্রায় দুই মাস আগে ঢাকার খিলগাঁও এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় আট বছর বয়সী মাদ্রাসার ছাত্র মতিউর রহমান। অনেক খোঁজাখুঁজিতেও সন্তানকে না পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন মতিউরের বাবা মা। অবশেষে দুই মাস পর কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানায় সন্তানের পরশ পেল বাবা মা।
সোমবার দুপুরে শিশু মতিউরকে কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের শশীদল রেলষ্টেশন থেকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণপাড়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তারপর খবর দিয়ে মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকালে মতিউরকে তুলে দেয়া হয় তার বাবা মার কাছে। দুই মাস পর সন্তানকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন মতিউরের গাড়িচালক বাবা জোবায়ের হোসেন আকবর ও তার মা।
মতিউরকে উদ্ধার ও তার বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল গণমাধ্যমকে জানান, ভোলা জেলার লালমোহন থানার জোবায়ের হোসেন আকবর ও বিবি ফাতেমার ৮ বছরের শিশু বাচ্চা মতিউর রহমানসহ স্বপরিবারে ২০০৮ সালে ঢাকায় জীবিকার উদ্দ্যেশে পাড়ি জমায়। সেখানে জোবায়ের হোসেন আকবর ড্রাইভারের চাকুরি নেন। সেই সুবাধে তার শিশু বাচ্চা মতিউর রহমানকে লেখাপড়া শিখানোর জন্য খিঁলগাও একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করায়। গত রমজান মাসে মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় ১২ এপ্রিল মতিউর রহমান তার মা বাবাকে পার্শ্ববর্তী তার নিজ মামার বাসায় যাবেন বলে বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু খবর নিয়ে জানতে পারে মতিউর রহমান মামার বাসায় যায় নাই। অনেক খোজাঁখুজি করার পর মতিউর রহমানকে না পেয়ে তার বাবা মা খিঁলগাও থানায় একটি নিঁখোজ ডায়েরী করে। যার ডায়েরী নং-১১৯৪। দুমাস ধরে ছেলের কোন সন্ধান পাননি তারা।
সোমবার (১২ জুন) দুপুর ৩টায় মতিউর রহমান কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল রেলষ্টেশনে একা একা বসে থাকতে দেখে সেখানের স্থানীয় দুইজন ব্যক্তি তার নাম ঠিকানা ও পরিচয় চানতে চায়। কিন্তু মতিউর রহমান তাদের কিছুই বলে না। পরবর্তীতে মতিউর রহমানকে দুইজন ব্যক্তি ব্রাহ্মণপাড়া থানায় নিয়ে আসে।
ওসি শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল আরো বলেন, তিনি মতিউরকে তার কাছে নিয়ে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ ও বিভিন্ন উপহার দিয়ে তার বাবা মা, মোবাইল নাম্বার, ঠিকানা জেনে নেন। এরপর তার বাবা ও মাকে মতিউরকে পাওয়া গেছে এমন তথ্য দিয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানায় আসার জন্য বলেন।
মঙ্গলবার সকালে মতিউর রহমানের বাবা মা থানায় এসে প্রকৃত পরিচয় দেন। মতিউরকে কাছে পেয়ে তার বাবা মা খুশিতে আত্নহারা ও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। সে সময় এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরী হয়। পরে সন্তান মতিউরকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
ওসি শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল বলেন, এরকম একটি ঘটনা সত্যিই আবেগঘন পরিবেশ তৈরী করেছে। এরকম একটি ঘটনার স্বাক্ষী হতে পেরে বেশ ভালোই লাগছে। সব বাবা মায়ের সন্তানরা সুস্থ থাকুক নিরাপদে থাকুক।
Last Updated on June 13, 2023 10:01 pm by প্রতি সময়