করোনা মহামারির এ সময়ে সাদামাটাভাবেই নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। পবিত্র কোরানখানি, সীমিত আয়োজনে দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করা হয়। তবে তাঁর কবর জিয়ারতে কোনো প্রকার সীমাবদ্ধতা হুমায়ূন ভক্তদের বাধা দিতে পারেনি। কিন্তু করোনা সংকটের কারণে লোক সমাগম ছিল অন্যান্য বারের তুলনায় বেশ কম।
সোমবার ( ১৯ জুলাই) সকাল থেকেই গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী গ্রামে কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের নিজ হাতে গড়া নুহাশপল্লীতে ভক্তদের সমাগম ঘটে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রয়াত লেখকের নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল হিমু পরিবহণ ও হুমায়ূন ভক্তদের সাথে নিয়ে কবর জিয়ারত, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাতে অংশ নেন।
মোনাজাত পরিচালনা করেন নুহাশ পল্লী মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. মুজিবুর রহমান। এ সময় লেখকের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
জানা যায়, প্রতিবছর হুমায়ূন আহমদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নূহাশ পল্লীতে এসে স্বামীর মৃত্যু বার্ষিকীর বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিলেও এবার যানজটের কারণে অংশ নিতে পারেন নি। সোমবার ভোরে বাসা থেকে রওয়ানা হয়ে যানজটের কারণে আটক পড়ে দুপুর একটার দিকে বিমানবন্দর এলাকা থেকে তিনি বাসায় ফিরে যান।
টঙ্গী সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও হুমায়ূনভক্ত রাজন বলেন, পাঠক ধরে রাখার অনণ্যসাধারণ দক্ষতা রয়েছে হুমায়ূন আহমেদের অমর লেখনীতে। যখন থেকে তাঁর লেখা বই পড়া শুরু করেছি তখন থেকেই ভক্ত হয়ে গেছি। মন খারাপ হলেই হুমায়ূন স্যারের বই পড়ি।
হিমু পরিবহন গাজীপুরের সদস্য সানজিদা সিমু বলেন, যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন হুমায়ূন স্যারের প্রতি ভালবাসা নিয়েই বেঁচে থাকতে চাই। স্যারের সকল লেখা আমাদের সব সময়ের অনুপ্রেরণার উৎস।
নুহাশ পল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল বলেন, করোনা মহামারির কারণে নুহাশপল্লীতে এবার স্যারের মৃত্যু বার্ষিকীর আয়োজন শিথিল করা হয়েছে। সীমিত আয়োজনে এবার তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। প্রতি বছর নানা আয়োজনের মধ্যে কাঙ্গালীভোজ থাকলেও এবার ওইসবের অর্থ দু:স্থদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই ৬৪ বছর বয়সে আমেরিকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অসংখ্য ভক্তদের কাদিয়ে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন হুমায়ূন আহমেদ। পরে ২৪ জুলাই গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী গ্রামে তাঁর স্বপ্নের নুহাশপল্লীর লিচুগাছ তলায় প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদেকে দাফন করা হয়। ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
Last Updated on July 19, 2021 9:47 pm by প্রতি সময়