সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
হাজী ইয়াছিন অনুসারিদের নির্যাতিত নেতাকর্মীর পরিবারের সংবাদ সম্মেলন মোনাফেকি করা ঠিক নয় : জামায়াতের উদ্দেশ্যে কায়কোবাদ সাঈদের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে মুরাদনগরে মানববন্ধন মনোনয়ন না দেওয়ায় ব্যারিস্টার মামুন সমর্থকদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ মনিরুল হক চৌধুরীর হাত ধরেই কুমিল্লা উন্নয়নে সমৃদ্ধ হয়েছে : কুসিকের সাবেক কাউন্সিলরগণ ঠোঁটে লিপস্টিক পরা হলো না আদিবার কুমিল্লার একই পরিবারের ৫ জনের কক্সবাজার আনন্দযাত্রা সড়কেই শেষ কুমিল্লার রামমালা ডিজিটাল সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া হবে : তথ্য উপদেষ্টা  শিশু আদিবা হত্যার ঘটনায় চাচাতো ভাই গ্রেফতার কুমিল্লার নয়টি আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, দুটির সিদ্ধান্ত পরে চান্দিনায় পুকুরে ডুবে প্রাণ গেলো ১৪ মাস বয়সী আরিয়ানের  মুরাদনগরে তিনটি গ্যাসফিল্ড, কিন্তু আবাসিক খাতেই বঞ্চিত লক্ষাধিক পরিবার সাংবাদিকদের জীবন ও কর্মক্ষেত্র এখনও নিরাপদ নয় # নির্যাতিত দশ সাংবাদিককে সম্মাননা দিল সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদ কুমিল্লা দৈনিক আজকের জীবন সবসময় সাহসী ও বস্তনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে : প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তারা চান্দিনায় জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন স্ত্রীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে চান্দিনা থেকে শ্যালকের শিশুপুত্রকে অপহরণের একদিন পর উদ্ধার চান্দিনায় প্রয়াত প্রথম স্ত্রীর সন্তানের বিরুদ্ধে সৎ মাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ দাউদকান্দিতে গরু চোর চক্রের চার সদস্য আটক মুরাদনগরে নিখোঁজের সাতদিন পর শিশু মীমের লাশ মিললো ডোবায়, হাত ও গলায় রশি প্যাঁচানো সদর দক্ষিণে ঘর পোড়ানোর মামলা করে আসামিদের হুমকির মুখে বাদী

প্রতিটি হৃদস্পন্দন জীবনের জন্য অপরিহার্য

প্রফেসর ডা. তৃপ্তীশ চন্দ্র ঘোষ
  • আপডেট টাইম রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১০৪ দেখা হয়েছে

প্রতি বছর ২৯ সেপ্টেম্বর দিনটি সারা বিশ্বে পালিত হয় বিশ্ব হার্ট দিবস হিসেবে। এদিন মানুষকে হৃদরোগ সম্পর্কে সচেতন করা এবং হৃদয়ের যত্ন নেওয়ার গুরুত্ব মনে করিয়ে দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য। হৃদরোগ আজ বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর প্রধান কারণ, অথচ এর অধিকাংশই প্রতিরোধযোগ্য। তাই এদিন শুধু একটি প্রতীকী উদযাপন নয়, বরং একটি বৈশ্বিক আন্দোলন, যার লক্ষ্য হলো হৃদরোগ প্রতিরোধ ও সুস্থ হৃদয় গড়ে তোলা।

বিশ্ব হার্ট দিবসের ইতিহাস ও তাৎপর্য:
বিশ্ব হার্ট ফেডারেশনের উদ্যোগে গত ২৫ বছর ধরে ২৯ সেপ্টেম্বর পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব হার্ট দিবস। এই সময়ের মধ্যে নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে হৃদরোগ প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা কিভাবে করা যায় তা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী সরকারগুলোর কাছে হৃদরোগকে স্বাস্থ্যনীতিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিলিয়ন মানুষের অংশগ্রহণে ইতিহাসের প্রথম গ্লোবাল পিটিশন চালু করা হয়েছে।

এ বছর দিবসটির ২৫তম বার্ষিকী। তাই এর গুরুত্ব অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। বিশ্বব্যাপী হৃদরোগের বোঝা কমাতে এখনই আমাদের দৃঢ় ও সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

হৃদরোগের ভয়াবহ বাস্তবতা:
প্রতি ৫ জনে ১ জন মানুষ অকালে হৃদরোগে মারা যায়।
ক্যান্সার বা দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসযন্ত্রের রোগের তুলনায় হৃদরোগ বেশি প্রাণ নিচ্ছে।
অথচ পরিসংখ্যান বলছে, ৮০% হৃদরোগ ও স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য।
প্রতিবছর প্রায় ২ কোটি ৫ লক্ষ মানুষ হৃদরোগে মারা যাচ্ছে। কেবলমাত্র স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সচেতনতা ও সহজলভ্য চিকিৎসার মাধ্যমে এর বড় একটি অংশ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

বিশ্বহার্ট দিবসের সাফল্য:
বিশ্ব হার্ট দিবস ইতিমধ্যেই অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দিয়েছে।
বার্তা পৌঁছানো: গত দুই বছরে প্রায় ৩৫০ কোটি মানুষের কাছে হৃদরোগ প্রতিরোধের বার্তা পৌঁছেছে।

একত্রিতকরণ:
বিশ্ব হার্ট ফেডারেশনের ১২০টিরও বেশি সদস্য সংগঠন, জনপ্রিয় ব্র্যান্ড এবং আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ও বিনোদন তারকাদের সঙ্গে যুক্ত করা গেছে।

বিশ্বকে উজ্জ্বল করা:
বিশ্বের ১০০টিরও বেশি আইকনিক স্থাপনা লাল আলোয় রাঙানো হয়েছে, যেমন সুইজারল্যান্ডের Jet dÕEau, কানাডার Niagara Falls, নিউজিল্যান্ডের Sky Tower, এমনকি মিশরের ঐতিহাসিক পিরামিডও।

এসব পদক্ষেপ হৃদরোগ প্রতিরোধে বৈশ্বিক ঐক্যকে প্রতিফলিত করে।

কেন এখনই পদক্ষেপ জরুরি:
কোভিড-১৯ মহামারী, বৈশ্বিক সংঘাত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে মানুষ শুধু প্রিয়জনদের সঙ্গেই সময় কাটাতে পারছে না, বরং নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়েও যথাযথ যত্ন নিতে পারছে না। এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি আরও বেড়েছে।
প্রতিবছর ৬৫ লক্ষ মানুষ অকালে মারা যায় হৃদরোগে।
দৈনিক মাত্র ৩০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে পারে, কিন্তু প্রতি ৩ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে ১ জন এবং ১০ জন তরুণের মধ্যে ৮ জন যথেষ্ট হাঁটে না।
উচ্চ রক্তচাপের প্রতি ৫ জন রোগীর মধ্যে মাত্র ১ জন সঠিক চিকিৎসা পান। অথচ যদি ২ জনে ১ জন চিকিৎসা পেতেন, তবে প্রায় ১৩ কোটি জীবন রক্ষা করা সম্ভব হতো।

আমাদের অঙ্গীকার ও আহ্বান:
এই বছর বিশ্ব হার্ট দিবসের মূল বার্তা হলো:
হৃদস্পন্দন থামলে থেমে যাবে জীবন “হারাতে দেবেন না একটিও স্পন্দন।”

আমাদের করণীয়:

স্পন্দন সচল রাখুন: হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিন অন্তত ২৫ মিনিট শরীরচর্চা করুন। ২৫তম বার্ষিকীর সম্মানে অন্তত ২৫ দিন নিয়মিত ব্যায়াম শুরু করুন।

প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করুন: সরকার ও স্বাস্থ্যখাতকে হৃদরোগ স্ক্রিনিং ও চিকিৎসার প্রবেশাধিকার দ্বিগুণ করার পদক্ষেপ নিতে হবে।

পিটিশনে অংশ নিন: বৈশ্বিক পিটিশনে স্বাক্ষর করে চিকিৎসা সেবার সহজলভ্যতা বাড়াতে সকলে ভূমিকা রাখুন।

উপসংহার:
সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও হৃদরোগে আক্রান্ত এবং মৃত্যুহার অনেক বেশী। তবে আশার কথা হলো হৃদরোগ প্র্রতিরোধযোগ্য, কিন্তু এর জন্য প্র্রয়োজন সচেতনতা, প্রতিশ্রæতি এবং সম্মিলিত উদ্যোগ। সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। সুস্থ হৃদয় মানেই সুস্থ জীবন।

আসুন, আমরা সবাই মিলে বিশ্ব হার্ট দিবসের ২৫তম বর্ষপূর্তিতে প্রতিজ্ঞা করি:

প্রতিটি হৃদস্পন্দনকে মূল্যবান করে তুলব। হৃদরোগ প্রতিরোধে নিজে সচেতন হব এবং অন্যকে সচেতন করব।
সবার জন্য সমান স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে অবদান রাখব।সুস্থ হৃদয়, সুস্থ জীবন – এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। আর এই সুস্থ হৃদয়ের জন্য প্রতিটি হৃদস্পন্দন অপরিহার্য। তাই প্রতিটি হৃদস্পন্দন সচল এবং ছন্দময় রাখতে আমাদের প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টা অব্যহত রাখতে হবে।

# লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
হার্ট কেয়ার ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা, বাংলাদেশ

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...

বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন।

themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!