তত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং রাজনীতিবিদদের জন্য অবমাননাকর মন্তব্য করে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান শাহজাদা ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেছেন, নির্বাচন এলেই রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে মাঠে জল্পনা-কল্পনা শুরু করেন। হরতাল, অবরোধের নামে মাঠে জ্বালাও-পোড়াও, আন্দোলনের মাধ্যমে জনজীবন বিপর্যস্ত করে ফেলে। আমরা এর অবসান চাই। আমরা চাই বর্তমান সংবিধানের আলোকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হোক আসন্ন জাতীয় নির্বাচন। প্রয়োজনে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জাতীয় সংলাপের আয়োজন করা হোক।
দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ও সংবিধান অনুযায়ী অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির আয়োজনে গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএসপি চেয়ারম্যান ।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিতাইগঞ্জ (আলাউদ্দিন খাঁন স্টেডিয়াম) জিমখানা সংলগ্ন শেখ রাসেল পার্ক মাঠে ঈদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএসপি’র সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম হোসাইনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএসপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অশুভ শক্তির ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করব, কিন্তু দেশের জনগণের ওপর প্রভুত্বগিরি দেখানো কোনোভাবেই মেনে নেবো না। দেশের সমস্যা সমাধান কিভাবে করা যায়, তার পথ জনগণই ঠিক করবে। তবে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিকল্প নেই। নির্বাচন নিয়ে অশুভ শক্তির হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেবে না জনগণ। শক্তিধর দেশগুলোকে আমরা প্রভু হিসেবে নয় বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই।
পার্টির চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) এককভাবে অংশগ্রহণ করলে ২২০ আসনে প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, বৈশ্বিক কারণে দ্রব্য সামগ্রীর দাম যতটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে, তার চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে সিন্ডিকেটের কারণে। অবিলম্বে জনগণের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে সরকারকে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে সরকারের কয়েকজন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর দায়িত্ব জ্ঞানহীন বক্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক।
অবৈধ উপায়ে অর্থ পাচারকারী, ঋণ খেলাপী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সরকারের ভূমিকা সন্তোষজনক নয় উল্লেখ করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে আইনি সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, ব্যাংক খাত, শেয়ার বাজার এবং বৈদেশিক বাণিজ্যিক খাতে দুর্নীতি বন্ধ করা বা কমানো সম্ভব হলে অর্থ পাচার কমবে বলে মন্তব্য করেন সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী।
বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি বন্ধে উদ্যোগী হতে হবে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধে প্রযুক্তির ব্যবহার, আমদানী-রপ্তানীতে আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়। এ দুর্নীতি বন্ধ করতে যথাযথভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে।
সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ঢালী কামরুজ্জামান হারুনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জনদল পার্টির চেয়ারম্যান মোঃ মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলুল হক আকন্দ, মোঃ মনির হোসেন, পীরজাদা মুফতী গোলাম মহিউদ্দিন লতিফী, আলহাজ্ব মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, অতিরিক্ত মহাসচিব মুফতী খাজা বাকী বিল্লাহ আল আযহারী, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ আজাদ দোভাষ, জাতীয় স্থায়ী পরিষদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, দপ্তর সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম মিয়া, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক যোবায়ের আহমদ মারুফ, মঞ্জুরুল আনোয়ার চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মিরানা জাফরীন চৌধুরী, মোঃ হাবিবুর রহমান পায়েল, মুখতার হোসেন মেনন, অ্যাড শাহ আলম অভি, মোঃ দেলোয়ার হোসেন জন, সহদপ্তর সম্পাদক একে নাহিদ, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদ আজমাঈন আসরার, নারায়ণগঞ্জ জেলা সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ মাসুম গাজী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হুমায়ুন কবির, মুন্সিগঞ্জ সভাপতি এস এম বারীসহ বিএসপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশ শেষে শেখ রাসেল পার্ক থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) চেয়ারম্যান শাহজাদা ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন মাইজভান্ডারীর নেতৃত্বে একটি গণমিছিল চাষাড়া শহীদ মিনার পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে।
Last Updated on September 2, 2023 11:20 pm by প্রতি সময়