শিল্প-সংস্কৃতি মানুষকে চিন্তাশীলতার ভেতর দিয়ে নতুন চেতনার পথ দেখায়। অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘প্রতিসময়’ এর শিক্ষা-সাহিত্য বিভাগে আপনিও যুক্ত হতে পারেন সৃজনশীল লেখা নিয়ে।এ বিভাগের শনিবার ও মঙ্গলবারের আয়োজনে আজকে যুক্ত হয়েছেন নিরবে সাহিত্য চর্চা চালিয়ে যাওয়া একজন প্রগতিশীল যুবক এটিএম সাইফুর রহমান ওরফে শিমুল আহমেদ।
শিক্ষানুরাগী পরিবারে বেড়ে ওঠা শিমুল ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখি করছেন।কুমিল্লা শহরতলীর চাঁনপুর এলাকার শিমুল কুমিল্লা হাইস্কুল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়া লেখা করেছেন।ইংরেজি বিষয়ে বেশ দক্ষতা থাকলেও বাংলা সাহিত্য নিয়ে চর্চাও কম নয়।সাহিত্য চর্চার মধ্যে কবিতা লেখাটাই বেশি পছন্দ করেন শিমুল।অবসর পেলেই কবিতা লিখেন।বাস্তবতার নিরিখে কথা বলেন কবিতার ভাষায়। হৃদয়ে-মননে লালন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ।
সেদিন ১৫ই অগাস্ট ১৯৭৫
-শিমুল আহমেদ-
সে দিন এখানে আকাশ ক্লান্ত ছিল,
কৃষ্ণচূড়ার রক্তিমা হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণের মতো।
সে দিন মীরাবাঈ নৃত্যের তাল ভেঙ্গে
হঠাৎ থমকে গেলেন,
জলসায় হলোনা আর নৃত্য
তা তা থৈথৈ, তা তা থৈথৈ!
সেদিন সাকীর শরাব নিয়ে পিয়ালায়
হাফিজ জেগেছিলেন সারারাত
তুমি আর কেঁদো না নার্গীস!
নমশূদ্রের মতো আমি দেখেছি
অর্ধনগ্ন পাগলিনী, সূর্যের মুখে
তুলে ধরে তাঁর সমস্ত শরীর
অবিরাম বলে চলছে
“দ্যাশে কি একটাও মরদ নাই! ”
সেদিন অ থেকে চন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত
আমার প্রতিটি বর্ণমালা কেঁদেছিল,
তুমি কোন বিবর্তনের কথা বলো?
বুকের ভেতর ব্যবচ্ছেদ করে দেখো
একুশ কোটি শেখ মুজিব ঘুমিয়ে আছে
একুশ কোটি বাঙালির বুকে।
সেদিন তারও কিছু দিন আগে
গোপন সভাকক্ষের দেয়ালে
ঝুলে থাকা মাকড়শা শুনে
কর্নেল ফারুক বলছেন ;
“জেনারেল, আমরা রাষ্ট্রের শাসন
ব্যবস্থায় একটা বিশাল পরিবর্তন
আনতে চাচ্ছি,
আমরা শেখ মুজিব কে চিরতরে সরিয়ে দেব,
আপনার সম্মতি থাকলে
রাষ্ট্র প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হবে আপনাকে। ”
জেনারেল বল্লেন ;
“তোমরা যা ভালো মনে কর, তাই কর।
খোদার দোহাই আমাকে
এসবের মধ্যে জড়িয়ো না। ”
মেঝেতে বসে থাকা আরশোলা বলে;
“জেনারেল জিয়া এই হত্যাকান্ডে
আপনিও নিরব সম্মতি দাতা।”
সেদিন মুয়াজ্জিন ডাকছেন
“আসসালাতু খাই রুম মিনান নাউম।”
গগনবিদারী গ্রেনেড আর গুলির শব্দ
ততক্ষণে কয়েকটি প্রাণের জীবনাবসান,
দেয়ালে বসে থাকা সন্ত্রস্ত টিকটিকি দেখলো
জাতির জনক দোতলার সিঁড়ি বেয়ে নামছেন
ধমকের সুরে বল্লেন ;
“এই তোরা কি চাস,
তোরা কি আমাকে হত্যা করতে চাস?
যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী
আমাকে হত্যা করার সাহস পায়নি
তা কখনো তোরা পারবিনা।”
মেজর মহিউদ্দিন কাঁপছিলেন
“স্যার আপনি নিচে নেমে আসুন।”
মেজর নূর বল্লেন;
“ডোন্ট মেক ডিলে, হি ইজ বঙ্গবন্ধু,
ইউ উইল বি ইনফ্লুয়েন্সড বাই হিজ ওয়ার্ড,
সো ফায়ার, ডোন্ট মেক ডিলে।”
তারপর মেজর নূরের মেশিন গান গর্জে উঠলো
লুটায়ে পড়লেন বঙ্গবন্ধু।
প্রাণ ভয়ে ধাবমান একটা কাঠবিড়ালি
প্রাচীরের উপর থমকে দাঁড়াল
নিথর দেহে রক্তাক্ত বঙ্গবন্ধু,
রক্তস্নাত বাংলাদেশ।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on August 7, 2021 11:20 am by প্রতি সময়