ব্যবসার পাওনা টাকা চাওয়ায় শেয়ারদারদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে প্রতিপক্ষ। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি বালু মহাল প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদারদের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটেছে। পরে পাওনাদাররা তাদের ন্যায্য পাওনার বিষয় নিয়ে আদালতে অভিযোগ করেন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন এলাকার ১০-১২ জন মিলে শেয়ারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর এলাকায় বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি বালু মহাল ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠান গত কয়েক বছর যাবত ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। শেয়ারদারদের মধ্যে উপজেলার মাধবপুর গ্রামের সুধীর চন্দ্র ভৌমিকের ছেলে বাবুল চন্দ্র ভৌমিক বিশ্বনাথ নামের একজন শেয়ারদার (সাবেক ক্যাশিয়ার) ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার পাশাপাশি তার নিজ ট্রাক্টর দিয়ে বালু মহাল থেকে বালু নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করতো। দীর্ঘদিন এভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে তাদের বালু মহালের ২৪ লাখ ২৭ হাজার ৩৫০ টাকার বালু বিক্রি করেন। এর মধ্যে তাদের শেয়ারদারদের নিকট ১৩ লাখ ৩ হাজার ৭০০ টাকা পরিশোধ করেন। বাকি ১১ লাখ ২৩ হাজার ৬৫০ টাকা সে বিভিন্ন ভাবে পরিশোধ না করার পায়তারা করে সময়ক্ষেপন শুরু করেন।
এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য শেয়ারদারগণের সাথে কয়েক দফা শালিস বৈঠক হলেও সে দেবো দিচ্ছি বলে পাওয়ানা টাকা পরিশোধ না করে তার অন্যান্য শেয়ারদারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে শেয়ারদারদের হয়রানি করে আসছেন। পরে বিসমিল্লাহ এন্টার প্রাইজের শেয়ারদারগণ উপায়অন্ত না পেয়ে তাদের মধ্যে ওই ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে নাসির উদ্দিন সাবেক ক্যাশিয়ার বাবুল চন্দ্র ভৌমিক বিশ্বনাথের বিরুদ্ধে আদালতে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজের শেয়ারদার বাছির মিয়া, রায়হান চৌধুরী, মুছা মিয়া, কানু মিয়া, টিটু মিয়া, মিজান মিয়াসহ অন্যান্য শেয়ারদারগণ বলেন, আমরা ১০-১২ জন শেয়ারে বাবুল চন্দ্র ভৌমিক বিশ্বনাথের সাথে বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি বালু মহালের মাধ্যমে বালু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছিলাম। আমাদের এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাবেক ক্যাশিয়ার ছিলো বাবুল চন্দ্র ভৌমিক বিশ্বনাথ। সে শেয়ারদার ও প্রতিষ্ঠানটির ক্যাশিয়ারের দায়িত্বে থাকার পাশাপাশি আমাদের এই যৌথ বালু মহাল থেকে তার নিজ ট্রাক্টর দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বালু বিক্রি করে আসছিলো। এতে আমাদের এই যৌথ বালু মহাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার কাছে ১১ লাখ ২৩ হাজার ৬৫০ টাকা পাওনা হই। এই পাওয়ানা টাকা তার কাছে চাওয়ায় সে টাকা না দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছেন। এছাড়া সে আমাদের এই যৌথ পাওয়ানা টাকা পরিশোধ না করার বিভিন্ন পায়তারা করছেন।
বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজের শেয়ারদাররা জানান, এ বিষয়ে আমরা কোন উপায়ান্ত না পেয়ে তার বিরুদ্ধে আদালতে একটি অভিযোগ দিলে ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্রাহ্মণপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ একরামুল হক বিষয়টি সমাধানের লক্ষে সকল শেয়ারদারগণকে ডাকেন। এতে সাবেক ক্যাশিয়ার বাবুল চন্দ্র ভৌমিক বিশ্বনাথ ওই বৈঠকে হাজির না হয়ে উল্টো আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ একরামুল হক বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাধবপুর বিসমিল্লাহ এন্টার প্রাইজের শেয়ারদারদের ডাকলে তাদের মধ্যে এক পক্ষ বাবুল চন্দ্র ভৌমিক বিশ্বনাথ আসেনি। এই বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
Last Updated on September 27, 2022 8:13 pm by প্রতি সময়