কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের সিংগুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত ইংরেজি ভার্সনে পরিচালিত ভিন্ন ধারার শিশু শিক্ষালয় ‘সাহস’ এর উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উদযাপন ও গুণিজন সম্মাননা সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘সাহস’ এর পরিচালক খায়রুল এনাম আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, সাহসের অগ্রগতি দেখে আমি অভিভূত। সাহস তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে যাওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমরা আপনাদের সাথে আছি। সাহসের যে প্রকাশনা আছে সেখানে ইউনিক এডুকেশনের কথা বলা হয়েছে। আমরা ইউনিক এডুকেশন চাচ্ছি। সরকারি স্কুলের পাশাপাশি কেজি স্কুল গুলোকে আমরা সরকারি নিবন্ধনের মধ্যে নিয়ে আসতে চাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমাদের সার্কুলার দেয়া হয়েছে এবং সার্কুলার অনুযায়ী যে নিয়মনীতি ও শর্তগুলো আছে। আমার মনে হয়েছে সাহস স্কুল সেসব সকল শর্ত পূরণ করে অবস্থান করছে। সাহস স্কুল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলে আমরা যত দ্রুত সম্ভব সাহস স্কুলকে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসবো। আর যখনই নিবন্ধন হয়ে যাবে ঠিক তখনই প্রশিক্ষণ সহ অন্যান্য বিষয় যা লাগবে সেটি স্কুল পেয়ে যাবে। আমরা শিক্ষকদের কারিকুলাম প্রশিক্ষনের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিবো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, ধেরেরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান ও ঝলম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. ফোরকান হোসেন মজুমদার।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ‘সাহস’ এর প্রধান সমন্বয়কারী সবুর বাদশা। বক্তব্য রাখেন সাহস স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ আক্তার চাঁপা ও সিংগুর সুধী সংঘের সভাপতি ইদ্রিস মিয়া। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল্লাহ মীর তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
বক্তারা বলেন, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম যারা তিনি দিয়েছি সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি জানাই সংগ্রামী অভিবাদন। আর যারা দেশমাতৃকা রক্ষায় শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের মহান চেতনাকে সামনে রেখে একটি প্রগতিশীল চিন্তাধারাকে ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে গ্রামীণ জনপদে প্রতিষ্ঠিত ইংরেজি ভার্সনের শিশু শিক্ষালয় ‘সাহস’। এ প্রতিষ্ঠানের নামেই রয়েছে লাইব্রেরি, প্রকাশনা, সঞ্চয় প্রকল্প ও হলিডে হোমস। একই বৃন্তে অনেক ফুল।
‘সাহস’ এর প্রতিষ্ঠাতা নাজমুল হুদা রতনের সাহসী ও ভিন্নধারার উদ্যোগের প্রতি সাধুবাদ জানিয়ে বক্তারা আরো বলেন, এই গুনী মানুষটির উদ্যোগে আজ এই গ্রামীণ জনপদে শিক্ষা সংস্কৃতির বিকাশ ঘটছে।যার ফলে গ্রামের সকল স্তরের মানুষের সম্পৃক্ততা সৃষ্টি হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে। শিক্ষার মান উন্নয়নে ‘সাহস’ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।
অনুষ্ঠানে চার জনকে সাহস গুণিজন সম্মাননা প্রদান করা হয়। তারা হলেন- মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ নুরুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোস্তফা কামাল। শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে মোহাম্মদ মাসুদ মজুমদার ও সাংবাদিকতা পেশায় বিশেষ অবদানের জন্য মো. কামরুজ্জামান জনি।
অনুষ্ঠানে স্কুলের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক শাহনাজ আক্তার এবং শ্রেষ্ঠ ছাত্র হিসেবে আব্দুল্লাহ ইবনে ইয়াছিনকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সাহস স্কুল ও সাহস কালচারাল সেন্টারের শিক্ষার্থীরা ছড়া কবিতা পাঠ, গান, নাচ এবং ছোট্ট নাটিকা ‘প্রতিবাদ’ মঞ্চস্থ করে। কবিতা আবৃত্তি করেন আজাহার সুমন, সংগীত পরিবেশন করেন সবুর বাদশা, শিশু নৃত্য শিল্পী অনুশ্রী পাল নৃত্য পরিবেশন করেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েে সংগীত নিয়ে লেখাপড়া শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত গুনী মানুষ নূরিতা নুসরাত খন্দকার সংগীত পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সুমিত্রা রানী দাস ও সবুর বাদশা।
Last Updated on December 19, 2023 11:52 pm by প্রতি সময়