
কুমিল্লার মুরাদনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর পরিবারের পক্ষ থেকে সিএনজি অটোরিকশা চালকের নামে দায়ের করা মামলা মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী ও পরিবহন শ্রমিকরা। এ সময় তারা মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানান।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে মুরাদনগর উপজেলা সদর ইউনিয়নের নাগেরকান্দি তিতাস চৌরাস্তায় এ মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে ওই মামলার সাক্ষী, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, সিএনজি ও অটোরিকশা চালকসহ এলাকার দুইশতাধিক লোক অংশগ্রহন করেন।
মানববন্ধন শেষে নাগেরকান্দি তিতাস মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে তিতাস ব্রিজে গিয়ে শেষ হয়।
মানববন্ধনে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ফরিদ মিয়া বলেন, ঘটনার সময় মাইনুদ্দিনের সিএনজি অটোরিকশাযোগে কাশিপুর থেকে তিতাস যাচ্ছিলাম। রঘুনাথপুর এলাকা আসার পর পিছনের দিকে একটি শব্দ শুনলে তখন সিএনজি থামিয়ে চালক মাইনুদ্দিন ও আমি একসাথে গিয়ে দেখি রাস্তার পাশে মোটরসাইকেলের সাথে একজন ও আরেকজন একটু দুরে পড়ে আছে। তখন প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানতে পারি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটি দুর্ঘটনায় পড়ে একজন ঘটনাস্থলে নিহত হয়। আরেকজন আহত হয়। পরে জানতে পেরেছি আহত ব্যক্তিও মারা গেছে।
মামলার ২নং সাক্ষী শাহাজান বলেন, ঘটনার কিছুই জানিনা অথচ আমাকে সাক্ষী করেছে।
মামলার ৯নং সাক্ষী শামীম মিয়া বলেন, আমি ওইদিন কাঠের কাজ করে বাড়ি যাওয়ার সময় তিতাসে এক্সিডেন্টের কথা শুনি। তারপর এব্যাপারে আর কিছু জানি না, তবুও আমাকে মামলার ৯নং সাক্ষী করেছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে দরিদ্র সিএনজি অটোরিকশা চালক মাইনউদ্দিনকে ১ মাস ২০ দিন জেল খাটিয়েছে। তার সিএজিটিও থানায় জব্দ করা হয়েছিল। তখন তার স্ত্রী-সন্তানরা অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটিয়েছে। মামলাটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে প্রত্যাহারের দাবী জানান তারা।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বিকালে মুরাদনগর উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে শফিউল্লাহ ও সাতমোড়া গ্রামের আল আমিন মিয়ার ছেলে সোহাগ মোটরসাইকেল নিয়ে মুরাদনগর উপজেলার নাগেরকান্দি তিতাস এলাকা থেকে পার্শ্ববর্তী হোমনা উপজেলার কাশিপুর মাঠে খেলা দেখতে যাওয়ার সময় রঘুনাথপুর মাছের আড়ৎয়ের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে। এসময় ঘটনাস্থলেই শফিউল্লাহ ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহাগের মৃত্যু হয়।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রায় একমাস পর নিহত শফিউল্লাহর বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে একই উপজেলার আলীরচর গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক মাইন উদ্দিনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় সিএনজি চালক মাইনউদ্দিন ১ মাস ২০ দিন কারাগারে ছিলেন।
মামলার একবছর পর ময়নাতদন্তের জন্য আদালত দুটি লাশ উঠানোর নির্দেশ দিলে গত ২১ সেপ্টেম্বর শফিউল্লাহর লাশ উত্তোলন করা হলেও সোহাগের লাশ উত্তোলন করতে গেলে তার পরিবার আপত্তি জানায়। মৃত্যুর ব্যাপারে সোহাগের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় তার লাশ উত্তোলন করা হয়নি।