বৈশ্বিক নাগরিকত্ব শিক্ষা (এসডিজি ৪.৭) বিষয়ক দক্ষতা উন্নয়ন: এসডিজি-৪ স্থানীয়করণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ যুবসমাজ, যা প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ। সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রধানতম শক্তি হচ্ছে যুবশক্তি। দেশের এই যুবগোষ্ঠীকে সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খল এবং উৎপাদনমুখী শক্তিতে রূপান্তরের লক্ষ্য অর্জনে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুব উন্নয়নে আমাদের অগ্রাধিকার যুবদের মানসম্মত শিক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা, রাজনৈতিক ও নাগরিক ক্ষমতায়ন এবং সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও মাদকমুক্ত যুবসমাজ গঠন করা। কোভিড-১৯-এর ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তরুণ সমাজের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া রূপকল্প ২০৪১ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য-২০৩০ অর্জনে তরুণ প্রজন্মকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তাই দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার জন্য তরুণ সমাজকে সঠিকভাবে গড়ে তোলা প্রয়োজন।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকায় দর্পণের অপরাজিতা সম্মেলন কক্ষে এশিয়া সাউথ প্যাসিফিক এসোসিয়েশন ফর বেসিক এন্ড এডাল্ট এডুকেশন (এএসপিবিএই) এর সহযোগতিায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযান এবং দর্পণ এর যৌথ উদ্যোগে ওই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন দর্পণের কর্মসূচী পরিচালক বাসন্তী সাহা। মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক কে এম এনামুল হক। মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-কার্যক্রম ব্যবস্থাপক মো: আবদুর রউফ, কার্যক্রম কর্মকর্তা সামসুন নাহার বেগম কলি, এইচডিও-র নির্বাহী পরিচালক পারভীন হাসান, পেইজ ডেভেলেপমেন্ট সেন্টারের সিনিয়র সহাকারী পরিচালক মো: আনিসুজ্জামান সবুজ, গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থার ফিন্যান্স ম্যানেজার মো: মোস্তফা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন দর্পণের নির্বাহী পরিচালক মো: মাহবুব মোর্শেদ।
কর্মশালায় বক্তারা আরও বলে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় ২০৩০ সালের মধ্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন, দরিদ্র্য ও ক্ষুধা নিরসন, সবার জন্য একীভূত ও সাম্যভিত্তিক মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, পণ্য ও সেবার মান, অভিবাসী জনগোষ্ঠীর চাহিদা, উৎপাদন ও বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, নগর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, শান্তি ও নিরাপত্তাসহ বৈশ্বিক সহযোগিতার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর চতুর্থ লক্ষ্য হচ্ছে -সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ তৈরি করা। এসডিজি ৪.৭ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের জন্য শিক্ষা ও টেকসই জীবনপ্রণালী, মানবাধিকার, জেন্ডার সমতা, শান্তি ও সম্প্রীতির সংস্কৃতি উন্নয়ন, বৈশ্বিক নাগরিকত্ব এবং টেকসই উন্নয়নে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও সংস্কৃতির ভূমিকার স্বীকৃতির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের জন্য সকল শিক্ষার্থীর জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের সুযোগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
কর্মশালা আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করেন দর্পণের সহকারী প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আক্তার। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন দর্পণের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সালমা আক্তার চৈতি এবং প্রোগ্রাম অফিসার নাহিদা আক্তার।
উল্লেখ্য; গণসাক্ষরতা অভিযান ও দর্পণ সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র-এর উদ্যোগে এবং এশিয়া সাউথ প্যাসিফিক এসোসিয়েশন ফর বেসিক এন্ড এডাল্ট এডুকেশন (এএসপিবিএই) এর সহযোগিতায় এসডিজি ৪.৭ বিষয়ক কর্মসূচির আওতায় বিশ্ব নাগরিকত্ব ও টেকসই উন্নয়নে যুব সমাজের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ওয়ার্কশপ ফর দ্যা লোকাল গভর্ণমেন্ট ইন্সটিটিউশন রিপ্রেজেনটেটিভস্ কার্যক্রমের আওতায় স্ট্রেংদ্যান আন্ডারস্টেন্ডিং অব প্রাইওরিটাইসড এসডিজি-৪ ইন্ডিকেটরস, মেটাডাটা এন্ড মেথেডোলজি ফর এসডিজি-৪ লোকালাইজেশন শীর্ষক অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রায় ৩০জন শিক্ষার্থী এবং ৫জন এনজিও প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে।
Last Updated on February 27, 2021 4:12 pm by প্রতি সময়