‘গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিক চেষ্টা স্বত্ত্বেও মানুষকে মাস্ক পরানোর বিষয়ে সচেতন করা যায়নি। যে পরিবারের কেউ মারা যাচ্ছেন শুধুমাত্র তারাই সচেতন হচ্ছেন।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম মঙ্গলবার (২০ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ঈদকেন্দ্রিক নিরাপত্তার বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই বললেন এমন আক্ষেপের কথা।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষকে সচেতন করতে পুলিশ চেষ্টা করে যাচ্ছে, আপনারাও (গণমাধ্যম) চেষ্টা করছেন। যে পরিবারে একজন মারা যাচ্ছেন তারাই সচেতন হচ্ছেন, বাকিদের দেখছি না। গরুর হাটে গিয়ে দেখেন লাখ লাখ মানুষ, কারো মুখে মাস্ক নাই।
তিনি বলেন, কতজনকে সচেতন করবেন, মানুষ নিজেরা সচেতন না হলে! নিজের জীবনটা নিজেরা রক্ষা করার বোধটা না জন্মালে কি করা যাবে? পুলিশ গিয়ে গিয়ে মাস্ক পরাচ্ছে, পুলিশ চলে আসছে মাস্ক খুলে ফেলছে, কী করবেন?
ঈদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঈদুল আজহাতে কোরবানিকেন্দ্রিক পশুর হাটে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। পশুর হাটে দুই পালায় পুলিশ দিচ্ছি, সেখানে আমাদের পুলিশ কাজ করছে। অজ্ঞান পার্টি-মলম পার্টি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জাল টাকা যাতে ঢুকতে না পারে, ছিনতাই এড়াতে প্রতিটা হাটে ব্যাংকের বুথ রয়েছে, এছাড়া বেশি টাকা বহনে পুলিশ মানি স্কট সেবা দিচ্ছে। হাটে ঠিটমতো প্রবেশ-বাহিরে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে।
তিনি বলেন, প্রতিটা ঈদের বড় জামাতে পুলিশ সদস্যরা থাকবেন। ঈদ জামাতে সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ করে এবং নিরাপত্তা তল্লাশি করা হবে। প্রবেশপথে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হবে এবং আর্চওয়ে থাকবে। যতক্ষণ জামাত চলবে ততক্ষণ পুলিশি ব্যবস্থাপনা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া প্রতি জামাতে সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। ঈদ জামাতে মনে করি না কোনো সমস্যা হবে।
ফাঁকা বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে পুলিশের পক্ষ থেকে আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। অনেক মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে যায়, এর ফলে বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফাঁকা অনেকটা অরক্ষিত অবস্থায় থাকে। যার ফলে চুরি-ডাকাতি, সম্পদহানির আশঙ্কা থাকে। এ নিয়ে গত ১৫ দিন ধরে আমরা কাজ করেছি, এ সময়ে একাধিক চোর-ডাকাত পার্টিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নিজ বাড়ির নিরাপত্তার প্রাথমিক দায়িত্ব নিজেকেই পালন করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিজের বাসা-বাড়ির দায়িত্ব প্রাথমিকভাবে আপনাকেই পালন করতে হবে। বাসা সুরক্ষিত আছে কি-না চেক করা, যাওয়ার সময় নিরাপত্তারক্ষীকে বলে যাওয়া বা প্রতিবেশীকে বলে যাওয়ার বিষয়টি রয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, টাকা-স্বর্ণের মতো মূল্যবান সম্পদ ব্যাংকের লকারে কিংবা যেসব স্বজন ঢাকায় থাকেন তাদের বাসায় রেখে যেতে পারেন। কারণ লাখ লাখ বাসা পাহারা দেওয়া পুলিশের পক্ষে প্রায় অসম্ভব।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on July 20, 2021 7:17 pm by প্রতি সময়