করোনাকালীন এই দুঃসময়ে দৃঢ় মনোবল নিয়ে ঘরেই শিক্ষার্থীদের রুটিন মাফিক লেখাপড়া চালিয়ে যেতে হবে।এই কঠিন সময়ে লেখাপড়ার চর্চা ধরে রাখতে হবে শিক্ষার্থীদের।তাই অভিভাবকদের সন্তানের লেখাপড়ার প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে এবং ঘরে যারা শিক্ষার্থী রয়েছে তাদেরও অভিভাবকের সকল নির্দেশনা মেনে চলে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হবে।এ বিষয় নিয়ে লিখেছেন ‘প্রতিসময়’ এর শিক্ষা-সাহিত্য বিভাগের নিয়মিত লেখক কুমিল্লা নগরীর নানুয়াদিঘী এলাকায় অবস্থিত নজরুল মেমোরিয়াল একাডেমীর সিনিয়র সহকারী শিক্ষক রোটারিয়ান মো. ফারুকুল ইসলাম।
কোমলমতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের করণীয়
করোনা ভাইরাসের তাণ্ডবে বাংলাদেশে গত বছবের মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বাসায় অনেকটা অলস সময় পার করছে। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড কিন্তু বর্তমান করোনাকালীন সময়ে প্রাণঘাতি সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করে সুস্থভাবে বেঁচে থাকাটাই আমাদের সবার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।এই ক্রান্তিকালে নিজে ও সন্তানদের নিরাপদ জীবনব্যবস্থা নিশ্চিত করে কীভাবে তাদের লেখাপড়ার মান ধরে রাখা যায়- এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিদ্যা গুরুমুখী, এটা হলো চিরন্তন ভাবনা :আমরা যারা নজরুল মেমোরিয়াল একাডেমীতে শিক্ষকতা করছি, আমাদের সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীরা যাতে বাসায় ভালোভাবে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, সেই লক্ষ্যে বছরের প্রথম জানুয়ারি মাস থেকেই সাপ্তাহিক বিষয়ভিত্তিক পড়া শীট আকারে দিচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্র/ছাত্রীদের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেবার পর প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নিয়েছি। সম্মানিত অভিভাবকগণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল থেকে প্রশ্নপত্র এবং খাতা নিয়েছেন। ওনাদের তত্ত্বাবধানে ছাত্র/ছাত্রীরা বাসায় পরীক্ষা দিয়েছে। বাসায় অভিভাবকগণ শিক্ষকের ভূমিকা পালন করেছেন। নির্দিষ্ট দিনে অভিভাবকগণ পরীক্ষার উত্তরপত্র জমা দিয়েছেন। আমরা শিক্ষকরা সেই খাতাগুলো পরীক্ষণ এবং নিরীক্ষণ করে অভিভাবকদের কাছে দেব। এতে অনেক দিন স্কুল বন্ধ থাকার কারণে কোনো বিষয়ের কোনো আইটেমে কোনো ভুলভ্রান্তি করলে আমরা সঠিক নিয়মটা খাতায় উল্লেখ করে দেই। এতে তারা সঠিক নিয়মটা ভালোভাবে শিখতে পারছে।
বাসায় পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে:বছরের জুন মাস শুরু। পাঠ্যবইয়ের অনেকটা পড়া শেষ। তাই পড়াগুলো কতটুকু আয়ত্বে আসলো তা যাচাই করার জন্য বাসায় পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে পঠিত বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে আয়ত্বে আসবে।
সন্তানদের যথাযথ সময় দেওয়া:বাসায় সন্তানদের কোয়ালিটি সময় দিতে হবে যাতে তারা কোনোভাবে একাকীত্ববোধ না করে। তাই যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন সন্তানদের জন্য রুটিন মাফিক কোয়ালিটি সময় অবশ্যই দিতে হবে। এতে করে তারা একঘেঁয়েমীতে থাকবে না।
সন্তানদের কাছ থেকে পড়া আদায় করতে হবে:ঘরে সন্তানরা যতটুকুই পড়াশোনা করুক না কেন, তা প্রতিদিন তাদের কাছ থেকে আদায় করে নিতে হবে, তাহলে তারা মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করবে। তাতে যতটুকুই পড়ুক, ভালোভাবে পড়বে।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের নির্দেশনা মানতে হবে:করোনা মহামারী পরিস্থিতি মোকাবেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো বন্ধ রাখা হয়েছে। এমন অবস্থায় ঘরই বিদ্যাশিক্ষা অর্জনের একমাত্র অবলম্বন। ঘরে মা-বাবা, বড় ভাই-বোন যারা আছে তারা ছোটদের অভিভাবক। ছোটদের পড়ালেখার প্রতি বড়দের যেমন খেয়াল রাখতে হবে, তেমনি ছোটরাও বড়দের মান্য করে পড়া লেখা চালিয়ে যেতে হবে। ঘরের অভিভাবকরাই এখন বড় শিক্ষক।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on June 1, 2021 11:37 am by প্রতি সময়