কুমিল্লার দাউদকান্দিতে সাত বছর বয়সী শিশু গৃহকর্মী মরিয়ম হত্যার দায়ে স্বামী-স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। জনাকীর্ণ আদালতে রায় ঘোষণার সময় ওই আসামি দম্পতি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার ভাদুঘর পূর্বপাড়া এলাকার মো. এনামুল এলাহী শুভ (৩৪) ও তাঁর স্ত্রী নাদরাতুল নাঈম আহমেদ (২২)। নিহত শিশু মরিয়ম বেগম (৭) কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থানার বীর পাইকসা গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। রায় ঘোষণার সময় ওই আসামি দম্পতি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। প্রায় তিন বছর আগে কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরিপুরে ভুলিরপাড় গ্রামের হারিজ ব্যাপারির বাড়িতে ওই দম্পতি ভাড়ায় থাকতেন এবং সেখানেই শিশু গৃহকর্মী মরিয়মকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। আর এ ঘটনায় দাউদকান্দি থানায় দায়েরকৃত মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই দম্পতিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয় আদালত।
অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. রফিকুল ইসলাম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলা সুত্রে জানান, এনামুল এলাহী শুভ ও তাঁর স্ত্রী নাদরাতুল কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরিপুরের ভাড়া বাড়িতে তাদের সন্তানদের সঙ্গ দেওয়ার কথা বলে কিশোরগঞ্জ থেকে শিশু মরিয়মের বাবা সিরাজুল ইলামের সঙ্গে কথা বলে তাকে নিয়ে আসেন। পরে মরিয়মকে গৃহকাজ করাতে বাধ্য করান শুভ ও নাদরাতুল দম্পতি। ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর রাতে মরিয়মকে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করেন ওই দম্পতি। হত্যার পর মরিয়মের লাশ চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে পরদিন প্রাইভেটকারযোগে কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানাধীন বীর পাইকসা গ্রামে বাড়িতে নিয়ে আসেন তাঁরা। পরে চাদর খুলে মরিয়মের বাবা সিরাজুল ইসলাম মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ছিদ্র, চামড়া ছোলা ও কালচে জখম দেখে হোসেনপুর থানা পুলিশকে খবর দেয়। তখন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থানা পুলিশ ওই দম্পতিকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহত মরিয়মের বাবা মো. সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ২৯ অক্টোবর ওই দম্পতির বিরুদ্ধে ঘটনাস্থল দাউদকান্দি থানায় মামলা করেন।
Last Updated on July 25, 2023 6:56 pm by প্রতি সময়