বুড়িচং উপজেলায় মুলার চাষ।ফাইলফটো #
এবছর কার্ত্তিক মাসে বৃষ্টি হলেও সবজি চাষের জন্য কুমিল্লা অঞ্চলের আবহাওয়া ছিল অনুকূলে। যে কারনে ক্ষেতের শাক-সবজির ক্ষতি হয়নি। আবার বীজতলাও নষ্ট হয়নি। যার ফলে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় বিস্তৃীর্ণ ফসলি মাঠ জুড়ে শীতের সবজি চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সবুজ বিপ্লব ঘটবে বলে ধারণা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
এবারে কুমিল্লার কৃষিপ্রধান গ্রামগুলোতে শীতের সবজির বাম্পার ফলন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা। কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার ১৭ উপজেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক সবজির চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কৃষি অফিস আরও ২ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাকসবজি চাষের ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। আর এটিতে সফলতা এলে জেলায় শীতকালীন শাক সবজির চাষের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়াবে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে।
চান্দিনা উপজেলায় গোলআলু চাষ।ফাইলফটো #
অগ্রাহায়ণের মাঝামাঝি থেকে পৌষের সময় পর্যন্ত কুমিল্লার উঁচু এলাকায় চাষকৃত শাক-সবজি এখানকার সর্ববৃহৎ সবজি বাজার ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন নিমসারের আড়তে স্থান পাবে। আবার কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ, চকবাজার, রাণীরবাজারেও সদর উপজেলা ও সদর দক্ষিণ উপজেলার শাক-সবজি ঠাঁই পাবে। কুমিল্লার উৎপাদিত সবজি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, ফেনী, নোয়াখালী,লহ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর জেলার বিশাল জনগোষ্ঠীর চাহিদা মিটিয়ে থাকে।
কুমিল্লা জেলার কৃষিপ্রধান উপজেলার মধ্যে চান্দিনা, বুড়িচং, বরুড়া, দাউদকান্দি, লালমাই, আদর্শ সদর, সদর দক্ষিন, ব্রাহ্মণপাড়া, ও দেবিদ্বারের সর্বাধিক শাকসবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। এখানকার উৎপাদিত সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, মুলা, বেগুন, শিম, টমেটো, করলা, ডাটা উল্লেখযোগ্য। শাকের মধ্যে রয়েছে পুই, পালং ও লাল শাক। এখানকার অন্যান্য উপজেলাতে শীতকালীন সবজির চাষ হয়ে থাকে। সবজি পরিচর্যায় প্রতিদিনকাক ডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানী, খাঁচি, বালতি, স্প্রে মেশিন নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন কৃষকরা। ক্ষেতে নেমে সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
আদর্শ সদর উপজেলায় ফুলকপি-বাঁধাকপি চাষ।ফাইলফটো #
কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ বাজারের কাঁচামালের আড়তদার হাজী সেলিম জানান, কুমিল্লা অঞ্চলে শীতকালিন সবজির ফলন এবারেও বাম্পার হবে। বর্তমানে বাজারে শাকসবজির দাম অনেক বেশি। শীতের শুরুতে কুমিল্লার উৎপাদিত শাকসবজি বাজারে উঠলে দাম কমে যাবে।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুরজিত চন্দ্র দত্ত জানান, কৃষি পণ্য উৎপাদনে অন্যান্য জেলার চেয়ে অনেকটা এগিয়ে কুমিল্লা। অনুকুল আবহাওয়া ও সেচের পানির পর্যাপ্ত সুবিধা এবং মাটি উর্বরতার কারণে এখানকার কৃষকরা প্রতি বছরই ভাল ফলন পেয়ে থাকেন। শীতকালিন সবজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণের বিষয়ে চাষিদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। এবছর ১৩ হাজার হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও আরও দুই হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক সবজি উৎপাদনের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। বিশেষ করে কৃষি কর্মকর্তাদের নজরদারি ও উপজেলা পর্যায়ে চাষীদেরকে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের দেয়া আধুনিক প্রযুক্তিতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শসহ সবধরণের লজিষ্টিক সার্পোট দেয়ায় এবং আবহাওয়া সময়োপযোগী হওয়ায় এবারে কুমিল্লা জেলায় শীতকালিন শাক সবজির বাম্পার ফলন হবে এটা অন্তত বলা যায়।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিন। এছাড়া protisomoy news ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন ও বেলবাটন ক্লিক করে নতুন নতুন নিউজ পেতে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on November 2, 2020 12:22 pm by প্রতি সময়