সয়াবিন তেলের তুলনায় কম কোলস্টেরল এবং সহজেই চাষ উপযোগী হওয়ায় কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন কৃষকরা।
চলতি মৌসুমে পুনর্বাসন প্রণোদনার আওতায় উপজেলার কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে চ্যাম্প ও হাইসান-৩৬ হাইব্রিড জাতের বীজ বিতরণ করা হয়।
মুরাদনগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সূর্যমুখী চাষাবাদ কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ৩০ জন কৃষককে ২ কেজি করে বীজ আর ২০ কেজি করে সার প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়নের ৫ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড হাইসোন-৩৬ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। সূর্যমুখী চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আর উৎপাদিত বীজ বিক্রি হয় ১৬ থেকে ২০ হাজার টাকা। বীজ রোপণের ৯০ থেকে ১০৫ দিনের মধ্যে ফুল থেকে বীজ ঘরে তোলা যায়।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, স্বল্পমেয়াদী, খরা ও লবণাক্ত মাটি সহনশীল তেল জাতীয় ফসল সূর্যমুখী। লাভজনক হওয়ায় কুমিল্লায় সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষকরা। এবার ফলনও বেশ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফেরদৌস ইসলাম নুর আলম বলেন, সূর্যমুখীর চাষ খুবই সহজ এবং এর রোগবলাই অন্য ফসলের তুলনায় অনেক কম। সূর্যমুখীর খৈল গরু ও মহিষের উৎকৃষ্টমানের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর বীজ ছাড়ানোর পর মাথাগুলো গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন কৃষকরা। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পাভেল খান পাপ্পু বলেন, সূর্যমুখীর গুণাগুণ অন্য ফসলের তুলনায় বেশি। এ অঞ্চলের মাটি সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য বেশ উপযোগী। কৃষকরা সূর্যমুখী চাষে ভালো আগ্রহ দেখিয়েছে। কৃষি প্রণোদনার আওতায় আমরা বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে সূর্যমুখীর বীজ ও সার বিতরণ করেছি। স্বাস্থ্যসম্মত তেল উৎপাদনের জন্য আমরা কৃষকদেরকে সূর্যমুখী তেল আবাদে উদ্বুদ্ধ করছি। সে লক্ষ্যেই সরকার সূর্যমুখীকে প্রণোদনার আওতায় এনেছে।
এদিকে কৃষকরা জানান, স্বল্প খরচ ও অন্যদিকে অল্প সময়ে ভালো ফলন হওয়ায় উপজেলার অনেকেই সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। প্রতিদিন সূর্যমুখী বাগানে অনেক দর্শণার্থী এসে থাকে।তারা ছবি তুলে, ভিডিও করে।পরিবারের ছোট বড়দের কে নিয়ে সূর্যমুখী বাগান ঘুরে বেড়ায়। কৃষক হিসেবে এটি আমাদের কাছে অত্যন্ত ভালো লাগে।
Last Updated on March 17, 2024 4:23 pm by প্রতি সময়