কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করেছে সোনালি আঁশ। পাট থেকে সোনালি আঁশ ছাড়ানো ও রোদে শুকানোর কাজে ব্যস্ত সবাই। নদী-নালা ও খাল বিল থেকে জাগ দেওয়া, পাট তুলে এনে তার থেকে আঁশ ছাড়ানো ও রোদে শুকানোর কাজ করছেন তারা।
এ বছর পাটচাষে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় পাট চাষীদের বিপাকে পড়তে হয়েছিল। তবু সোনালি আঁশের সোঁদা গন্ধে ও স্বপ্নের সোনালি আঁশ দেখে কৃষকদের মনে স্বস্তি ফিরেছে। তবে এ বছর পাটের ফলন ভালো হলেও আশানুরূপ মূল্য না পাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন পাট চাষীরা। সোনালী আঁশের বিক্রি মূল্যে মুনাফার দরজায় স্বপ্ন পূরণ হবে তো কৃষকের।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় পাট চাষীর সংখ্যা প্রতিবছরই কমছে। কৃষক ধান চাষের দিকে ঝুঁকছে বেশি। অন্য বছরের তুলনায় এবছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান চাষীরা। চাষিরা পাট কেটে তা নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং হাটে বাজারে তা বিক্রিসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে নারী-পুরুষের অংশ গ্রহণে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ চলছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের বাজারমূল্য নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন চাষীরা। এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ৭৪ হেক্টর থাকলেও এ বছর ৫৪ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি বিভাগ।
এদিকে পাট চাষী উপজেলার কান্দুঘর এলাকার জয়নাল আবেেদীন বাচ্চু বলেন, এখন পাট কাটা, পানিতে ডোবানো ও ধোয়ার কাজে আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। তবু পাটের ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে।
উপজেলার সিদলাই এলাকার পাট চাষী দেলোয়ার হোসেন দুলু বলেন, এ বছর আমি ৩০ শতক জমিতে পাটচাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় চার হাজার টাকা। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় পাটচাষে আমাদের অনেক বেগ পেতে হয়েছে। তারপরও পাটের ফলনও ভালো হয়েছে।
উপজেলার মনগুছ এলাকার পাট চষী জুনাব আলী জানান, এ বছর তিনি ১২০ শতক জমিতে পাটচাষ করেছেন। এতে তাঁর খরচও হয়েছে অনেক। পাটের ফলনে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে পাটের বাজারমূল্য আশানুরূপ না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কাও করেন।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহবুবুল আলম জানান, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর পাটচাষ ব্যহত হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছরে এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম জমিতে পাটচাষ হয়েছে। অধিকাংশ কৃষকই পাটচাষ ছেড়ে ধান চাষে আগ্রহী হয়ে পড়ছেন। তবে এ বছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে। পাটের ন্যায্য মূল্য পেলে চাষিদের মাঝে পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে।
Last Updated on August 24, 2023 8:16 pm by প্রতি সময়