বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৬:৪১ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
কুমিল্লার দুই প্রাইভেট হাসপাতালকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা সৌদিতে বাস দুর্ঘটনা : ১২ দিনের কোম্পানির ছুটি পেয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরবে মুরাদনগরের মামুন মিয়া এপেক্স ক্লাব অব কুমিল্লা মেট্রোপলিটনের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ  সৌদিতে ওমরাহ যাত্রী বহনকারী বাস দুর্ঘটনায় নিহতদের দুইজনের বাড়ি কুমিল্লায় যাত্রিক নাট্যগোষ্ঠীর আয়োজনে নবীন-প্রবীন নাট্যকর্মী ও বিশিষ্টজনদের মিলনমেলা কুমিল্লার নিমসার বাজারের ইজারা পেলেন  জামাল হোসেন  বুড়িচংয়ে মসজিদের ইমামের আলোচনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ দেবিদ্বারে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি শিক্ষক সমিতির মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান ও মূল্যায়ন করতে হবে : এমপি আবুল হাশেম খান কুমিল্লায় দুই সৎ ভাইকে হত্যার দায়ে একজনের ফাঁসি কুমিল্লায় শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে শ্যালক-দুলাভাই আটক কুমিল্লা সদরের আমড়াতলীতে সিএনজি অটোরিকশায় মিলেছে ৯৮৫ বোতল ফেন্সিডিল বুড়িচংয়ে চাঁদা বন্ধ ও হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের কাকৈরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন বুড়িচং নিমসার বাজারে সিএনজির জিবির টাকা আদায় নিয়ে দুই ভাইয়ের একজনকে পিটিয়ে হত্যা অপরজনকে আহত বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা ও স্বাধীন-সার্ভভৌম বাংলাদেশ : কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান কুমিল্লায় যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতা দিবস পালিত আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস স্কাউটিং সম্প্রসারণের স্বীকৃতিস্বরুপ রৌপ্য ইলিশ’ পদক পেলেন রুহুল আমিন দেবিদ্বারের নবাগত ইউএনওর সাথে সাংবাদিকদের মত বিনিময়

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তির আগেই ‘যুদ্ধজয়’ ভাস্কর্য ঘিরে নান্দনিকতা চায় কুমিল্লাবাসী

সাদিক মামুন
  • আপডেট টাইম বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ১১৭৭ দেখা হয়েছে
আলেখারচরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘যুদ্ধজয়’

বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর আগুনঝরা ৭ মার্চের ভাষণের ইস্পাত কঠিন শপথের পথ ধরে পাকিস্তানি হায়নারদের বিরুদ্ধে  বীর বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।তারপর টানা  নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, ত্রিশলাখ শহীদ আর দু’লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের কর্ষ্টাজিত বিজয়।বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা আর আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের পথ ধরে আমরা নিজের স্বাধীন ভূমিতে নি:শ্বাস ফেলতে পারছি।

মুক্তিসংগ্রামে এক অনন্য অবস্থানে ছিল কুমিল্লা।মুক্তিযুদ্ধে এ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা ও সাহসী মানুষেরা বীরোচিত ভূমিকা রেখেছে।মুক্তিযুদ্ধে কুমিল্লার অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন।তাদের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কুমিল্লায় নির্মিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্মৃতিময় অনেক ভাস্কর্য, স্মৃতিফলক, গণকবর ও বধ্যভূমি।এসব স্মৃতির একটি হচ্ছে ‘যুদ্ধজয়’।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি অম্লান রাখার জন্য ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা শহরের প্রবেশমুখ আলেখারচরে নির্মিত হয় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘যুদ্ধজয়’।২০০৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর এটি উদ্বোধন করা হয়।ভাস্কর্যটি তৈরি করেছিলেন শিল্পী এজাজ-এ-কবীর । স্থাপিত এই ভাস্কর্যে রয়েছে অস্ত্র হাতে এক নারীযোদ্ধা-সহ চার মুক্তিযোদ্ধার দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার ভঙ্গিমা। দেখতে দেখতে যুদ্ধ জয়’ ভাস্কর্যের দুইযুগ পার হল। আগামী বছর উদযাপন হবে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি। এর আগেই যুদ্ধ ভাস্কর্যটি ঘিরে সৌন্দর্য বর্ধনে আরো নান্দনিকতা সৃষ্টির জন্য কুসিক মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন স্বাধীনতা স্বক্ষের সংস্কৃতিসেবিসহ কুমিল্লার সুশীল সমাজ।

১৯৯৬ সালের ১৮ মার্চ এতদাঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে উজ্জীবিত রাখার লক্ষ্যে স্বাধীনতার রজত জয়ন্তিতে উপলক্ষে ১৮ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের প্রস্তুতিমূলক সভায় কুমিল্লার বিশিষ্ট নাট্য সংগঠক সংলাপ ও প্রতিবিম্বের প্রতিষ্ঠাতা শাহজাহান চৌধুরী সাংস্কৃতিক কর্মীদের পক্ষ থেকে কুমিল্লায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মাণের দাবি জানান। ওই সভায় ভাস্কর্য নির্মাণের প্রস্তাব গৃহিত হয়।  ভাস্কর্য নির্মাণের জায়গা নির্ধারণ হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কুমিল্লা শহরের প্রবেশ মুখে আলেখারচর নামক স্থানে।১৯৯৬ সালে কুমিল্লার তৎকালীন জেলা প্রশাসক (বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার) কে এম নুরুল হুদা ওই স্থানে ভাস্কর্যটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।

# কুমিল্লা শহরের প্রবেশমুখ আলেখারচরে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘যুদ্ধজয়’।

একটু সময় নিয়েই ভাস্কর্যশিল্পী এজাজ-এ-কবীরের শৈল্পিক হাতের ছোঁয়ায় পরিপূর্ণতা পায় ভাস্কর্যটি। কুমিল্লার সাংস্কৃতিক কর্মী, স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী ও শফিউল আলম গ্রুপের সহযোগিতায়, জেলা প্রশাসনের তত্ত¡াবধানে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্যটি ২০০৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়।

কুমিল্লার মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্টজন, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের সাথে নিয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মনজুরুর রহমান ভাস্কর্যটি শুভ উদ্বোধন করেন। ওইসময় সংলাপ ও প্রতিবিম্ব থিয়েটারের নাট্যকর্মীরা জাতীয় সংগীত ও দেশাত্ববধক সংগীত পরিবেশন করেন। প্রথমে ভাস্কর্যটির নাম ছিল যুদ্ধভাসান। পরে পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘যুদ্ধজয়’।

কুমিল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের যে সমস্ত ভাস্কর্য আমাদের দেশে রয়েছে এগুলো মহান স্বাধীনতার ইতিহাস এবং আবহমান বাংলার এক জীবন্ত ক্যানভাস।  মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের অবদানের স্মরণেই কুমিল্লা শহরে প্রবেশমুখে যুদ্ধজয় ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। জীবনের মায়া ত্যাগ করে আমরা দেশের মুক্তির জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু সেই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস অনেক সময়ই বিকৃত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে উদ্যমী তরুণ প্রজন্ম এধরণের ভাস্কর্যের মাঝেই স্বাধীনতাকে খুঁজে পাবে এবং তাদের মনে ধারণ করবে।’

বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ভাস্কর্য কমিটির সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের নাম মুক্তিযুদ্ধ। একাত্তরে ত্রিশ লাখ মানুষের শহীদ হওয়া আর দুই লাখ মা বোনের সম্ভ্রম হারানোর ইতিহাস আমাদের এনে দিয়েছে স্বাধীনতা। মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে দেশের অধিকাংশ জেলা-উপজেলায় নির্মিত হয়েছে বিভিন্ন ভাস্কর্য। এসব ভাস্কর্য মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, তুলে ধরে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, দেশ গঠনে সাহস যোগায় তরুণ প্রজন্মকে। কুমিল্লা শহরের প্রবেশমুখে ‘যুদ্ধজয়’ ভাস্কর্যটির প্রকাশভঙ্গি, গতিময়তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রকাশ ফুটিয়েছে। ‘যুদ্ধজয়’ ভাস্কর্যটি দুইযুগ পার করলো। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তিতে যুদ্ধজয় ভাস্কর্যের হবে রজত জয়ন্তি। এভাবে যুগ যুগ ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষজনের এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে তুলবে ‘যুদ্ধজয়’ এর মতো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নির্মিত ভাস্কর্য।শুরুতে এ ভাস্কর্যটি জেলা প্রশাসনের দেখভাল করতেন। পরে এটিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দায়িত্বে দেয়া হয়। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ভাস্কর্যটির দৃষ্টি নন্দন ফোয়ারা, ফুলবাগান, রাতে আলোকসজ্জার মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। তবে বর্তমানে ফোয়ারা কোন কাজ করছে না, আলোকসজ্জার ঘাটতি রয়েছে, ফুল বাগানের পরিচর্যা নেই বললেই চলে। এসব ব্যাপারে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। যুদ্ধজয় ভাস্কর্যটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কুমিল্লা শহরের প্রবেশমুখে হওয়ায় এটির দর্শনীয় গুরুত্ব অনেক বেশি। আগামী বছর বাঙালি জাতি পালন করবে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি। এর আগে ভাস্কর্যটি আরো কিভাবে নান্দনিক করা যায় এব্যাপারে সিটি মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। এটি কুমিল্লার সংস্কৃতিসেবি ও সুশীল সমাজের দাবী।’

# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিন। এছাড়া protisomoy ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন ও বেলবাটন ক্লিক করে নতুন নতুন ভিডিও নিউজ পেতে অ্যাকটিভ থাকুন।

Last Updated on December 16, 2020 12:06 pm by প্রতি সময়

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...

বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন।

themesba-lates1749691102