দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে করোনায় ফ্রন্টলাইনার যোদ্ধা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। র্যাব, পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি ও পুলিশের বেশ কিছু ইউনিট বৃহস্পতিবার থেকেই দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের হামলাকারিদের ধরতে গ্রেফতার অভিযান শুরু করে।
এদিকে ওয়াহিদা খানমের মাথার জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের ছয় সদস্যবিশিষ্ট চিকিৎসক দল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
অবশেষে হাকিমপুর, বিরামপুর ও ঘোড়াঘাট থানা এবং র্যাব রংপুর-১৩ এর একটি দল যৌথভাবে রাতভর অভিযান চালিয়ে শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে দিনাজপুরের হিলির কালিগঞ্জ এলাকা থেকে আসাদুল হক (৩৫) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। তার বাড়ি ঘোড়াঘাট উপজেলার সাগরপুর এলাকায়। বাবার নাম আমজাদ হোসেন। এছাড়া জাহাঙ্গীর (৪২) নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাড়ি ঘোড়াঘাটের রাণীগঞ্জ এলাকায়।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে ঢুকে তাকে ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইউএনওর ভাই মো. শেখ ফরিদ উদ্দিন অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন।
এদিকে দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের মাথায় ভাঙা হাড়ের সাত-আটটা টুকরা অস্ত্রোপচারে জোড়া দিয়েছেন ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসাইন্স হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার পর থেকে ওয়াহিদা খানমের মাথায় হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান নিউরোসার্জন ও গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান মোহাম্মদ জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যবিশিষ্ট চিকিৎসক দল রাত ১২টার দিকে ওয়াহিদার মাথার জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন। তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ইউএনও ওয়াহিদা খানমের মাথায় অস্ত্রোপচারের আগে তাকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে দেখতে যান জনপ্রশাসন প্রতিমিন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
উল্লেখ্য, বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দুর্বৃত্তরা ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি আবাসিক ভবনে ঢুকে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এসময় ওই ঘরে থাকা তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখ মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকেও কুপিয়ে জখম করে। গুরুতর জখমের শিকার ইউএনও ওয়াহিদা খানমের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে রংপুর ডক্টরস ক্লিনিকের আইসিইউ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
# দেশ–বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on September 4, 2020 9:40 am by প্রতি সময়