ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে ও দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হেফাজতে ইসলামের সহিংসতা ও হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা। এসময় জেলার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ হেফাজত ইসলাম ও তাদের সকল ধর্মীয় সংগঠনের সব সংবাদ বয়কটের ঘোষণা দেন।
কর্মসূচির শুরুতে মঙ্গলবার (৩০মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব থেকে সাংবাদিকদের একটি মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা হেফাজত ইসলামের ওই হামলার বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করেন সাংবাদিকরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি পীযূষ কান্তি আচার্যের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনজুরুল আলম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ইব্রাহিম খান শাদাত, সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রেজা, খ আ ম রশিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আরজু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম কাউসার এমরান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক আব্দুন নূর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জয়দুল হোসেন, সাংবাদিক কল্যাণ ফান্ডের আহ্বায়ক অধ্যাপক এমদাদুল হক, সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম, নিয়াজ মোহাম্মদ খান বিটু, প্রেসক্লাবের তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক মুজিবুর রহমান খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি মফিজুর রহমান লিমন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম শাহাজাদা, নবীনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি জালাল উদ্দিন মনির, আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, কসবা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি খ ম হারুনুর রশিদ ঢালি, সরাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান বাবুল, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়োশনের যুগ্ম আহ্বায়ক জহির রায়হান, সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ পাল বাবু, এশিয়ান টিভির স্টাফ রিপোর্টার হাবিবুর রহমান পারভেজ প্রমুখ।সমাবেশ সঞ্চালনায় ছিলেন প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাংবাদিক মনির হোসেন।
এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন তার বক্তব্যে বলেন, পূর্বে কোনো আন্দোলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে কখনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। প্রেসক্লাবের সভাপতিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে হেফাজতীরা ওই হামলা করেছে।
তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, হামলাকারীরা যেই হোক তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবেন। না হয় সাংবাদিকরা আরও ব্যাপক আন্দোলনের ঘোষণা দেবে। সেই আন্দোলন হবে আরও কঠোর।
সাধারণ সম্পাদক বিজন এ সময় সাংবাদিকদের হেফাজত ইসলাম ও তাদের সকল ধর্মীয় সংগঠনের সব সংবাদ বয়কটের ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদরাসা ছাত্র ও হেফাজতে ইসলামের সহিংসতায় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের স্টাফ রিপোর্টার রিয়াজ উদ্দিন জামি, আমাদের নতুন সময় ও আমাদের সময় ডটকমের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি আবুল হাসনাত মো. রাফি, ডেইলি স্টারের স্টাফ রিপোর্টার মাসুক হৃদয়, একুশে টিভির প্রতিনিধি মীর মোহাম্মদ শাহীন, এটিএন নিউজের ক্যামেরা পারসন সুমন রায়, লাখোকণ্ঠের প্রতিনিধি বাহাদুর আলম, ডেইলি ট্রাইব্যুনালের প্রতিনিধি ইফতেহার রিফাত, এনটিভির ক্যামেরা পারসন সাইফুল ইসলাম হামলায় আহত হন।
এছাড়াও প্রেসক্লাবে হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। এই সময় তাদের তাণ্ডবে প্রেসক্লাবে অবস্থান করা জেলার অর্ধশত সাংবাদিক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। একাত্তর টিভির প্রতিনিধি জালাল উদ্দিন রুমি ও আজকালের খবরের প্রতিনিধি মোজাম্মেল চৌধুরী কাজ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হন।
Last Updated on March 30, 2021 10:55 pm by প্রতি সময়