কুমিল্লায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ২৫ বছর পর অভিযুক্ত পাঁচজনকে সাজা দিয়েছে আদালত। এরমধ্যে চারজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় কুমিল্লার একটি আদালত।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক রোজিনা খান কুমিল্লার বরুড়ায় জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ফার্নিচার ব্যবসায়ী শহীদুল্লাহকে হত্যার দায়ে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার পরানপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে ইউছুফ, বনি আমীন, ইউছুফের ভাতিজা সোলায়মান, ইউছুফের শ্যালক আবদুল হক এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইউসুফের বড় বোন রজ্জবী বিবি।
মামলার বিবরনে জানা যায়, জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ১৯৯৮ সালের ২১ মে দিনের বেলায় আসামিদের সঙ্গে ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো. শহীদ উল্লাহর কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জের ধরে এদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে আসামিরা শহীদ উল্লাহকে বরুড়া পরানপুর বাজারের পশ্চিম পাশে ডেকে নিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লায় হসপিটালে নেওয়ার পথে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে নিহতের ছোটভাই বরুড়া বিজরা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মোঃ আমান উল্লা বাদী হয়ে ১৯৯৮ সালের ২২ মে একই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে মো. ইউসুফসহ ১৫ জনকে আসামি করে বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সোমবার মামলার রায় ঘোষণাকালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজন ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বাকীরা মামলার দায় হইতে অব্যাহতি পায়। এর মধ্যে তিন আসামির মামলা চলাকালীন সময়ে মৃত্যু হয়।
এদিকে ফার্নিচার ব্যবসায়ী শহীদ উল্লাহকে যখন খুন করা হয় তখন তার ছেলে এডভোকেট আবু নাসের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তিনি ওই সময় প্রতিজ্ঞা করেন পড়ালেখা করে আইনজীবী হয়ে তার পিতার হত্যার বিচার নিশ্চিত করবেন। অবশেষে আইনজীবী হওয়ার পর এ মামলার সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে আবু নাসেরও যুক্ত হন।
মামলার রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নিহতের ছেলে এডভোকেট মো. আবু নাসের বলেন, আমার পিতাকে যখন হত্যা করা হয়, তখন আমি পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। আমি আমার মায়ের অনুপ্রেরণায় পিতার খুনিদের বিচার নিশ্চিত করতে আইনজীবী হয়েছি। ২৫ বছর পর হলেও একজন সন্তান হিসেবে আমি আমার পিতা হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে পেরেছি, এটা আমার অনেক বড় পাওয়া।
রাষ্টপক্ষের আইনজীবী এপিপি মোঃ নুরুল ইসলাম এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আশা করছি মহামান্য হাইকোর্ট এ রায় বহাল রেখে দ্রুত রায় বাস্তবায়ন করবেন।
Last Updated on November 27, 2023 4:25 pm by প্রতি সময়