'সীমান্তে অনুপ্রবেশের দায়ে বিএসএফ একজন মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলবে? অন্যায়ভাবে গুলি করে মেরে ফেলা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার কী আমরা পাব না? সীমান্তে অনুপ্রবেশের দায়ে বিএসএফ আমার বাবাকে আটক করে আইনি প্রক্রিয়ায় যা যা করার করতে পারত, একজন জ্যান্ত মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলতে হবে? সীমান্ত এলাকার মানুষের জীবনের মূল্য ভারতের এই বাহিনীর কাছে নেই। সীমান্তে বাংলাদেশিদের দেখলেই বিএসএফ গুলি করা ছাড়া আর কিছুই বুঝেনা। এসব বন্ধ হওয়া উচিত।'
বুধবার (৯ অক্টোবর) ক্ষোভ আর কান্নাজড়িত কন্ঠে এসব কথাগুলো বললেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ( বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক কামাল হোসেনের কন্যা কামরুন নাহার জাহান শান্তা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবা অন্যায় করলে আইন আছে। কোনও কিছু না মেনে বিএসএফ গুলি করে দেবে? মেরে ফেলবে একটা মানুষকে? এটি কেমন বিচার? আমরা এর বিচার চাই।’
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার যশপুর বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়পুর সীমান্তে সোমবার রাত আটটার দিকে বিএসএফ গুলি করে হত্যার পর ভারতীয় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে কামালের লাশ তুলে নিয়ে যায়। সীমান্তে এই হত্যাকাণ্ডের ২৭ ঘণ্টা পর বাংলাদেশি যুবক কামাল হোসেনের লাশ ফেরত দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুমিল্লার বিবির বাজার সীমান্তে লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। রাত ৯টার দিকে লাশ বুঝে নেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এ তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি-১০ কুমিল্লার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ইফতেখার হোসেন বলেন, কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত কামালের লাশ পতাকা বৈঠক শেষে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বিএসএফের কাছ থেকে বুঝে নেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় ১০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর আরাফাতসহ বিজিবির এক প্রতিনিধিদল এবং থানা পুলিশ উপস্থিত ছিল। পরে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে কামাল হোসেনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মঙ্গলবার রাতেই জানাজার শেষে কামাল হোসেনের লাশ দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে নিহত কামাল হোসেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার জোলাই কুড়িয়াপাড়া গ্রামের ইদু মিয়ার ছেলে। তিনি বিভিন্ন স্থানে পিঁপড়ার বাসা ভেঙে ডিম বিক্রি করতেন বলে জানা গেছে।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম