# কুমিল্লার উন্নয়ন ও সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাবলী নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন এমপি হাজী বাহার।
সাম্প্রতিক সময়ের জিল্লুর হত্যাকান্ড প্রসঙ্গ তুলে ধরে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বলেছেন- ‘এই হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে আবারো আমাকে নিয়ে রাজনৈতিক চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এক হত্যাকান্ডে জড়িয়ে আমার নমিনেশন বন্ধ করা হয়েছিল। আবারো সেই খেলায় মেতে উঠেছে ওই পরিবারটি।কুমিল্লার উন্নয়ন অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে খুনি ও দুর্নীতিবাজ পরিবার। এসব বন্ধ করেন। হত্যাকান্ডের দিন টেলিভিশন, অনলাইনে এবং পরদিন পত্রিকায় পড়লাম ৩/৪টি মোটরসাইকেলে ৬/৭জন খুন করেছে। আর আসামী করা হয়েছে ২৫জনকে।
আমি আইন প্রয়োগকারি সংস্থাকে বলেছি, এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু সঠিক নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তাদের নাম ও সংশ্লিষ্টতা যদি তদন্তে পাওয়া যায় তবেই তাদের গ্রেফতার করবেন। তদন্তের আগে কাউকে গ্রেফতারের নামে হয়রানি করা যাবে না। যারা এই হত্যাকান্ড নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে তারাও দেখুক সত্যটা কী। আমি যতদূর জানতে পেরেছি, ওই হত্যাকান্ড চৌয়ারা বাজারের গন্ডগোল ও ভাগাভাগি নিয়ে ঘটেছে। আর এটাকে নিয়ে হত্যার রাজনীতি শুরু করেছে। লাশের রাজনীতি আর কুমিল্লায় করতে দেয়া হবে না।’
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় কুমিল্লা টাউনহল মিলনায়তনে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে কুমিল্লার উন্নয়ন ও সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাবলী নিয়ে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি আরফানুল হক রিফাত ও দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্যের শুরুতে ৫২’র ভাষা শহীদ, ৭১’র শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, ১৫ আগষ্টে নির্মমভাবে নিহত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার এবং জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এমপি হাজী বাহার তার রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। ২০০৮ থেকে পরপর তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়ে কুমিল্লার যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে তার ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
এমপি হাজী বাহার বলেন, ‘১৯৮৮সাল থেকে কুমিল্লা বিভাগ চাই আন্দোলন করছি। কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণার কাজ যখনই এগিয়ে আসে তখনই একটি মহল ষড়যন্ত্র শুরু করে। কুমিল্লা নামেই বিভাগ হবে। এখানে কোন আপোষ নেই। আন্দোলন নয়, প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে আমাদেরকে এগুতে হবে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা কুমিল্লা নামেই বিভাগ ঘোষণা দেবেন।’
এমপি হাজী বাহার কুমিল্লার ইতিহাস ঐতিহ্য রক্ষায় তার ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন- ‘যখনই কোন ভাল কাজ করতে চাই, তখনই আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়। ১৯৩৩ সালে কুমিল্লা টাইনহলের বর্তমান ভবনটি করা হয়। এরমধ্যে এটি কয়েকবার সংস্কারও হয়েছে। কিন্তু টাউনহলের বর্তমান আপনারা যারা (সাংবাদিক) বসে আছেন, তারাই দেখেন কতটা জরাজীর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। আমি কুমিল্লার সবশ্রেণি-পেশার সম্মানিত ব্যক্তিদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে একটি আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ টাউনহল নিমার্ণের ব্যাখ্যা তুলে ধরে সবার মতামত নেই। টাউনহলের অতীত ঐতিহ্যভাব রক্ষা করে একটি নতুন আধুনিক টাউনহল নির্মাণের পক্ষে সবাই মত দেন। কিন্তু দু:খের বিষয় এটি নিয়েও নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কিছু কুচক্রী লোক দেশের বুদ্ধিজীবিদের ভুল বুঝিয়ে কুমিল্লায় আধুনিক টাউন হল নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, কুমিল্লার সকল সাংবাদিকসহ আপামর জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা রাখলে পুরাতন ভবনের স্থাপত্যশৈলী ঠিক রেখে একটি দৃষ্টিনন্দন ও প্রযুক্তিসমৃদ্ধ আধুনিক টাউন হল আমরা নির্মাণ করতে পারবো।’
মতবিনিময় সভায় কুমিল্লা মর্ডাণ হাই স্কুলের কোটি কোটি টাকা লোপাটের প্রসঙ্গ তুলে ধরে এমপি হাজী বাহার বলেন, ‘গত ২২ বছরে আফজল খান পরিবার স্কুলটির প্রায় ৪০ কোটি টাকা লুটপাট করে খেয়েছে। এই লুটপাটের প্রমাণাদি রয়েছে। যদি প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারি তাহলে এমপি (সংসদ সদস্য) পদ ছেড়ে দেবো। পদত্যাগ করবো। এই পরিবারে দুর্নীতি ছেয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে কলম ধরেন, যারা মানুষের জমি-জায়গা দখল করে নিয়েছে।’
তিনি কুমিল্লার সকল সাংবাদিকদের সত্যনির্ভর বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশের আহ্বান জানান। এমপি বাহার তার বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।মতবিনিময় সভায় দেড় শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। যা কুমিল্লার ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক নেতার সাথে সাংবাদিকদের বৃহত্তম মতবিনিময় সভা।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিন। এছাড়া protisomoy ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন ও বেলবাটন ক্লিক করে নতুন নতুন ভিডিও নিউজ পেতে অ্যাকটিভ থাকুন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম