দু'দিন আগে হোক আর দু'দিন  পরে হোক করোনার মহামারি থেমে যাবে। জীবন তার স্বাভাবিক গতি ফিরে পাবে। আমাদেরকে তখনকার হিসেব এখন থেকেই করতে হবে।তাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ধারা অব্যাহত রাখতে অভিভাবকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা খুব বেশি প্রযোজন।অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘প্রতিসময়’ এর শিক্ষা-সাহিত্য পাতায় এ বিষয়ে লিখেছেন কুমিল্লার নজরুল মেমোরিয়াল একাডেমী’র সিনিয়র সহকারী শিক্ষক রোটারিয়ান মোঃ ফারুকুল ইসলাম।

করোনায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য অভিভাবকদের করণীয়

করোনা ভাইরাসের প্রকোপে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।প্রতিটি  শিক্ষার্থীর প্রতিদিনের একাডেমীক ব্যস্ততা, খেলাধুলা, গান  শেখা, নাচ শেখা, হোমওয়ার্ক করাসহ ইত্যাদি সবই এখন বন্ধ। ফলে শিক্ষার্থীরা বাসায় থেকে থেকে অস্থির হয়েও উঠছে।এ অবস্থায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঘরেই পড়লেখার প্রতি মনোযোগি করে তোলাসহ সংক্রামক ভাইরাস করোনা থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এমন খাদ্য গ্রহণ  করা। নিয়মিত শরীর চর্চা করা।

আমি যেহেতু প্রাথমিকের শিক্ষক, তাই আমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা করছি।

দৈনিক রুটিন করে দিতে হবেঃঅভিভাবক হিসেবে  প্রথম কাজ হচ্ছে সন্তানের একটা প্রাত্যহিক রুটিন করে দেয়া। রুটিন করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যাতে রুটিনে তাদের বিনোদন, খেলাধুলা, নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দিক, শরীরচর্চা, অবসর এই বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আমাদের সন্তানরা যাতে কোনো মতেই একঘেয়ামিতে না ভুগে।

বিনোদনের মাধ্যমে পাঠদান ও পাঠ আদায়ঃমনে রাখতে হবে যে, আমাদের সন্তানরা যাতে শিক্ষা পদ্ধতির মাঝে বিনোদন খুঁজে পায়। কেননা বিনোদনের মাধ্যমের শিক্ষা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সহজে বুঝতে পারে, মনে রাখতে পারে।

সন্তানদেরকে বন্ধু ভাবতে হবেঃ সন্তানদের বন্ধু ভাবতে হবে, যাতে করে তারা তাদের সমস্যাগুলো বাবা-মায়ের সাথে শেয়ার করতে পারে। তাতে করে সমস্যা সমাধান সহজ হয়ে উঠবে।

সন্তানদেরকে গুণগত সময় দিতে হবেঃ অভিভাবক হিসেবে সন্তানদের কোয়ালিটি সময় দিতে হবে।যাতে  সন্তানরা একাকীত্ববোধ না করে। তাদের সাথে গল্প করতে হবে। তাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। কোনো প্রকার ভুল থাকলে, হাসিমুখে তা বুঝিয়ে দিতে হবে।

প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন আদায় করাঃ সন্তানরা যাতে প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন শেষ করে সেজন্য একটা নির্দিষ্ট সময় পড়া  আদায় করতে হবে। তাতে তারা কোনো রকম ফাঁকিবাজি করতে পারবে না।

সাপ্তাহিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করাঃসন্তানদের জন্য প্রতি সপ্তাহে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। পরীক্ষার সময়  অভিভাবকরা পরীক্ষকের ভূমিকা পালন করবেন। পরীক্ষায় কোনো বিষয়ে দুর্বল হলে তা আবার ভালো করে বুঝিয়ে দিতে হবে।

এত গেল  অভিভাবকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা। শিক্ষার্থীদেরও দায়িত্ব কর্তব্য কিন্তু কম নয়। তোমরা তোমাদের বাবা মার কথা মনোযোগ সহকারে শুনবে, তা পালন করবে। ভুলে গেলে চলবে না ভবিষ্যৎ জীবনকে সুন্দর ও সার্থক করতে এখনকার সময়কে কাজে লাগাতে হবে।