রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
ভিক্টোরিয়া কলেজ রোভার স্কাউটের ৫০ বছর উদযাপন ছাত্র জনতার বিপ্লবে খুনি শেখ হাসিনার চ্যাপ্টার ক্লোজ : হাবীব উন নবী সোহেল কুমিল্লায় গার্লস স্কুলের ভর্তির লটারিতে বয়েজ! মুরাদনগরে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা জামায়াতে ইসলামী ও নেজামে ইসলাম পার্টি ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার কাজে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে : ডা. শফিকুর রহমান তাবলিগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ : মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম চরমোনাইয়ের উদ্বেগ প্রকাশ লাখো পর্যটকে মুখরিত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত কুমিল্লার মুরাদনগরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার অভিযোগ কুমিল্লায় বিজয় দিবসের র‍্যালিতে মানুষের ঢল ফ্যাসিবাদীদের জুলুম নির্যাতনে মানুষ বিজয়ের স্বাদ ভুলে গিয়েছিল : বিএনপি নেতা হাজী ইয়াছিন  চৌদ্দগ্রামে গাছের সঙ্গে ধাক্কায় যাত্রীবাহী বাসের তিনজন নিহত কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজের বার্ষিক ক্রীড়ার পুরষ্কার বিতরণ ব্রাহ্মণপাড়ায় বিদ্যুৎপিষ্টে শিশুর মৃত্যু কুমিল্লার মাঠে আবাহনীকে হারালো মোহামেডান ব্রাহ্মণপাড়ায় ১২ লাখ টাকার অবৈধ ভারতীয় পণ্য জব্দ দেশবাসী এখন প্রতিটি সেক্টরে আমুল পরিবর্তন চায় : কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহের উদ্বোধন সাংবাদিকদের ঐক্যের পথে ফ্যাসিবাদিরা বাধা হয়ে দাঁড়াত : সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের অনুষ্ঠানে বক্তারা ব্রাহ্মণপাড়ায় ফসলি জমির বুকে ভেকু স্কাউটিং একটি সম্পূরক শিক্ষা ব্যবস্থা : রোভার সহচর দীক্ষা অনুষ্ঠানে বক্তারা

কুমিল্লার অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলো যেন মরণফাঁদ

সাদিক মামুন
  • আপডেট টাইম রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৫ দেখা হয়েছে

 

কুমিল্লা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঢাকা-চট্টগ্রাম, লাকসাম-নোয়াখালী, লাকসাম-চাঁদপুরের এই তিনটি রেলপথের মধ্যে চার বছরে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে সবচেয়ে বেশি দুঘর্টনা ঘটেছে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে সর্বশেষ গত মঙ্গলবার কুমিল্লার বুড়িচংয়ের কালিকাপুর এলাকায় একটি অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক, যাত্রীসহ সাতজন নিহত হন। গত মঙ্গলবারের আটজন সহ চার বছরে রেলক্রসিংয়ে ১৫টি দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের কুমিল্লা অংশের রেলক্রসিয়ে এযাবত যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিশু, সিএনজি অটোরিকশা চালক ও ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য পেশার মানুষ। কুমিল্লার অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলো পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের কুমিল্লা অংশে গেল চার বছরে অন্তত ৩০ জনের মৃুত্য হয়েছে। এর মধ্যে ২০২১ সালে নাঙ্গলকোটের বান্নঘর এলাকায় বাবা-ছেলে, একই স্থানে এক বৃদ্ধা, লালমাইয়ের হরিশ্চর এলাকায় অরক্ষিত ক্রসিংয়ে দুই মোটরসাইকেল আরোহী প্রাণ হারায়। ২০২২ সালে লাকসাম পৌরসভার এতিমখানা সড়কে অবৈধ রেলক্রসিংয়ে এক যুবক এবং নাঙ্গলকোটের বান্নঘর এলাকায় এক ফল ব্যবসায়ী মারা যান।২০২৩ সালে ব্রাহ্মণপাড়ার শশীদল সেনের বাজার এলাকায় এক অটোরিকশাচালক, সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুরসংলগ্ন জেলখানাবাড়ি রেলক্রসিংয়ে অটোরিকশাচালক বাবা ও ছেলে এবং লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় রেলক্রসিংয়ে এক স্কুলশিক্ষক প্রাণ হারান। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি নাঙ্গলকোট পৌর বাজারের পাশে রেলক্রসিংয়ে এক এনজিও কর্মকর্তা, ১৬ মে আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুরে রেলক্রসিংয়ে এক ছাত্রী, ৮ জুন নাঙ্গলকোট সদরের বিশারা এলাকায় এক বৃদ্ধ, ২৪ জুন সদর দক্ষিণ উপজেলার শিকারপুর এলাকায় এক ব্যক্তি, ৪ নভেম্বর লালমাই উপজেলার হরিশ্চর এলাকায় এক নারী এবং এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সর্বশেষ গত ২৭ নভেম্বর বুড়িচংয়ের কালিকাপুর এলাকায় অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার (ইজিবাইক) অন্ত:স্বত্তা নারী ও শিশুসহ আট যাত্রী নিহত হন।

অপরদিকে লাকসাম-নোয়াখালী রেলপথে রেলপথে চারটি দুর্ঘটনায় সাতজনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে ২০২০ সালে মনোহরগঞ্জের নাথেরপেটুয়া এলাকায় অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে আবু ইউসুফ নামের এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়। ২০২২ সালে নাঙ্গলকোটের তুঘুরিয়া এলাকায় অবৈধ রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকসহ মনোহরগঞ্জ উপজেলার উত্তর হাওলা গ্রামের চারজন নিহত হন। ২০২৩ সালে লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় লাগোয়া অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে এক স্কুল শিক্ষক ও লাকসামের পৌর এলাকায় আরেক শিক্ষক প্রাণ হারান।

কেবল অবৈধ ও অরক্ষিত রেলক্রসিংয়েই নয়, বৈধ রেলক্রসিং ও রেলপথে ট্রেন দুর্ঘটনায় অনেকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুরের রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী নিহত হয়। ২০২৩ সালে একই রেলক্রসিংয়ে সোনারবাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় এক নারী ও এক শিশু নিহত হয়।

অরক্ষিত রেলক্রসিং এলাকার অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবেধ রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ও অঙ্গহানি বা গুরুতর আহত হওয়ার পেছনে দুইটি কারণ রয়েছে, প্রথমমত এসব অবৈধ রেক্রসিংয়ে গেইট বা গেইটম্যান না থাকা এবং দ্বিতীয়ত রেলক্রসিং পারাপারে অসতর্কতা বা সচেতনতার অভাব।
অপরদিকে এবিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানালেন, কুমিল্লার ১২০ কিলোমিটার রেলপথে তাদের জনবল স্বপ্লতা ও অতিগুরুত্বপূর্ণ অবৈধ রেলক্রসিংয়ে গেইট নির্মাণের পরিকল্পনার কথা।

এবিষয়ে রেলওয়ে কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ বিভাগ) লিয়াকত আলী মজুমদার জানান, আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত মোট ৬১টি রেলক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে ৩৮টি অবৈধ। তবে ২৩টি বৈধ ক্রসিংয়ে রেলওয়ের গেটম্যান রয়েছেন।আর অবৈধ ৩৮টির মধ্যে অতিগুরুত্বপূর্ণ ১০টিতে গেইটম্যান দেওয়া হয়েছে।ডাবল লাইন প্রকল্পের আওতায় আরও কয়েকটি অবৈধ রেলক্রসিং বৈধ করার প্রক্রিয়া চলমান আছে। তবে আমি মনে করি রেলক্রসিং পারাপারে মানুষকে সচেতন হতে হবে।

রেলওয়ের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বুড়িচংয়ে রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় যে আটজন মারা গেছেন, এই ঘটনাটি অটোরিকশা (ইজিবাইক) চালকের অসতর্কতার কারণে ঘটেছে। এটি অবৈধ একটি রেলক্রসিং। এখানে গেইটম্যান নেই, অটোরিকশা চালককে রেললাইন পার না হওয়ার জন্য উপস্থিত স্থানীয়রা বারণ করেছিলেন। তাই আমি মনে করি যেসব রেলক্রসিংয়ে গেইট ও গেইটম্যান নেই, সেখানটায় যানবাহন চালক, পথচারিদের পারাপারে সতর্ক থাকতে হবে, সচেতন হতে হবে।’

Last Updated on December 1, 2024 8:56 pm by প্রতি সময়

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...

বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন।

themesba-lates1749691102