# ২৫ দিনে ৬ জনের মৃত্যু" />
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে। দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিনই রোগী শনাক্ত হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি মাসের ২৫ দিনে এ পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। দাউদকান্দি পৌরসভার ৫ নং ও ৬ নং ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ দুটি ওয়ার্ডকে অতি ঝুকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, পৌরসভায় চলতি মাসে ২৫ দিনে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু সংক্রমণে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ৬ জন মারা গেছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৪ জন নারী ও ২ জন পুরুষ রয়েছে। এরমধ্যে পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডে ৪ জন, ৫নং ওয়ার্ডে ১ জন ও ৯নং ওয়ার্ডে ১ জন মারা গেছে। গত ১ জুন থেকে দাউদকান্দিতে সর্বমোট ১ হাজার ৮০০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে এবং গত ২৪ ঘন্টায় দাউদকান্দিতে ৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছে।তাদের মধ্যে ১২ জন রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (গৌরীপুর) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।আর বাকি রোগীরা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, পৌরসভার ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর বিস্তার প্রতিটি ঘরে ঘরে। এ দুটি ওয়ার্ডের দোনারচর, সবজিকান্দিসহ আশপাশের এলাকায় ৮০% লোক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে এ দুটি ওয়ার্ডসহ পৌরসভায় ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে। ঈদের ছুটিতে পৌর প্রশাসনের উদাসীনতায় নিরবে ডেঙ্গু প্রকোপ বাড়তে থাকে।অপরিস্কার ড্রেন ও নালায় এডিশ মশা দ্রুত জম্ম নেয়।সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়া মশার কামড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে পৌর এলাকায় ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভয়-ভীতি ও অস্থিরতা বিরাজ করছে।
সবজিকান্দি গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক আবু তাহের নয়ন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকা কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার প্লাটিলেট ১০ হাজার এ নেমে গিয়েছিল। এদিকে দৈনিক আমাদের সময় দাউদকান্দি উপজেলা প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী শাহীন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।তার রক্তের প্লাটিলেট ২০ হাজার এ নেমে গিয়েছিল।তারা দুই জনই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শে বাড়িতে বিশ্রামে আছেন।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে দাউদকান্দি পৌরসভাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হটস্পট ঘোষণা করা হয়েছে।পৌর এলাকাকে ডেঙ্গুর হটস্পট বলা হলেও আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসেবের সাথে বাস্তবতার মিল নেই। ফলে এখানে ডেঙ্গু পরিসংখ্যান নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম ডেঙ্গু প্রতিরোধে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হাবিবুর রহমান জানান, দাউদকান্দিতে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। গত ১ জুন থেকে দাউদকান্দিতে সর্বমোট ১ হাজার ৮০০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে এবং গত ২৪ ঘন্টায় দাউদকান্দিতে ৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জন রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (গৌরীপুর) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তিনি আরো জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।
দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম বলেন, পৌরসভার ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর সংক্রমণ অতিরিক্ত হারে বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন এ দুটি ওয়ার্ডকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করেছে। প্রতিদিন ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে মশক নিধন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। ফগার মেশিনের মাধ্যমে উচ্চমাত্রার মশার ওষুধ প্রয়োগ করছি। পৌরসভার একটি টিম লার্ভা নিধন অভিযান শুরু করেছে।আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
Last Updated on June 25, 2025 8:45 pm by প্রতি সময়