ছবি: বাগমারা উচ্চবিদ্যালয়ের জায়গায় নির্মিত দোকানঘর ।।
কোন ধরনের সভা না করেই কুমিল্লার লালমাই উপজেলার শতবর্ষের ঐতিহ্যে লালিত বাগমারা উচ্চবিদ্যালয়ের জায়গায় দোকানঘর নির্মাণ করছেন ব্যবস্থাপনা কমিটির দুইজন সাবেক ও একজন বর্তমান সদস্য। ইতোমধ্যে তিনটি দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। আরও দুটি দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। এধরণের পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের অন্তত ১০ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে তাঁরা বিদ্যালয়ের ভূমি রক্ষাসহ লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের আহবান জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯২১ সালে বাগমারা উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। ১০০ বছরের ঐতিহ্যে লালিত এই বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে পাকা সড়ক ও পশ্চিম পাশে গুইংগাজুরি নদী। গত কয়েকমাস ধরে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ- পশ্চিম কোণে বিদ্যালয়ের জায়গায় দোকানঘর নির্মাণ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনীত বিদ্যালয়ের অ্যাডহক (আহবায়ক) কমিটির সদস্য উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আবদুল মোতালেব, ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সদস্য ইমান হোসেন ও হারুনুর রশিদ। ইতিমধ্যে আবদুল মোতালেব তিনটি দোকানঘর করে বইয়ের দোকান ও সেলুন ব্যবসায়ীকে ভাড়া দিয়েছেন। আর ইমান হোসেন ও হারুনুর রশিদ দোতলা দোকানঘর নির্মাণ করছেন। এইক্ষেত্রে কোন ধরনের সভা না করে তাঁরা নিজ নিজ উদ্যোগে দোকানঘর করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ডাকাতিয়া নদীর উত্তরপাড়ে পাকা সড়ক। ওই সড়কের উত্তর-পশ্চিমকোনে দোতলা দোকানঘরের কাজ চলছে। এর আগে পৃথক একটি ভবনে তিনটি দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে বই ও সেলুনের দোকান।
বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সদস্য আবদুল মোতালেব বলেন, আমি যে তিনটি দোকানঘর করেছি, সেখানে আগেও দোকানঘর ছিল। সড়কে সেতু করার কারণে তখন দোকানঘর ভাঙা পড়ে। এরপর আমি টাকা দিয়ে দোকানঘর নির্মাণ করি। প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে দোকানঘর করেছি। নিজের টাকায় দোকানঘর করেছি, তাই আমিই ভাড়ার টাকা নিচ্ছি।
ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, আমাদের টাকায় দোকানঘর হচ্ছে। যে টাকা আমরা ব্যয় করেছি, তা অগ্রিম (অ্যাডভাঞ্চ) হিসেবে থাকবে। এরপর ভাড়া নির্ধারণ করে বিদ্যালয় মাসিক ভাড়া পাবে। অথবা দোকানঘরের অগ্রিম টাকা থেকে ভাড়া কাটা হবে।
অপর সদস্য ইমান হোসেন বলেন, সবাই মিলেই আমরা দোকানঘর করছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনির আহাম্মদ বলেন, ‘দোকানঘরের ভাড়া ও অ্যাডভাঞ্চ দেওয়ার জন্য তিন মাসের সময় দেওয়া হয়েছে তিনজনকে’।
কিন্তু কোন ধরনের রেজুলেশন না করে দোকানঘর নির্মাণ হচ্ছে কেন, উপযুক্ত দরপত্র কিংবা কোটেশন করে দোকানবরাদ্দ দেওয়া হয়নি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক মনির আহাম্মদ নিরুত্তর থাকেন।
লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম বলেন,‘ আমার কাছে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী , এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আমার এ নিয়ে কথা হয়। প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, ম্যানেজিং কমিটির তিনজন সাবেক ও বর্তমান সদস্য দোকানঘর করছেন। সদস্যরা মিলেই দোকানঘর করছেন। এরপরেও দোকানঘর করা ও বরাদ্দের প্রক্রিয়া দেখব’।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম