দুর্বৃত্তদের ছোড়া এডিসে ঝলসে গেছে সবজি বিক্রেতার শরীর।শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের পরিহল পাড়ার মধ্যপাড়া গ্রামে এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয় সবজি বিক্রেতা শাহজাহান।বর্তমানে সে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
খবর পেয়ে কুমিল্লার সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সোহান সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় সঙ্গে ছিলেন বুড়িচং থানার ওসি মোঃ মোজাম্মেল হক পিপিএম দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আজিজুল বারি নয়ন, এস আই ইমরুল হাসান ও এ এস আই সুমন চাকমাসহ সঙ্গীয় ফোর্স। পুলিশ এসিড ছোড়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জুলহাস (৫০) এবং আবদুল হালিমকে (৪০) কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
বুড়িচং থানার ওসি মোজাম্মেল হক পিপিএম জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সবজি বিক্রেতা শাহজাহানের উপর এসিড নিক্ষেপ করে কারা তার শরীর ঝলসে দিয়েছে, তিনি এসিড নিক্ষেপকারীদের নাম জানিয়ে গেছেন।শাহজাহান বর্তমানে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন। এ ঘটনায় বুড়িচং থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
এডিসের শিকার শাহজাহানের বোন ও স্বজনরা জানান, বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের পরিহল পাড়ার মধ্য পাড়া গ্রামের মৃত আঃ খালেকের ছেলে মোঃ শাহ জাহান (৪৫) কাঁচা মাল সবজি বিক্রি করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কয়েক বছর ধরে একই বাড়ীর মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে জুলহাস (৫০), মৃত রজব আলীর ছেলে মইন (৪৫), আঃ খালেকের ছেলে হালিম (৪০), সায়েদ আলীর ছেলে আঃ মতিনের (৬০) সঙ্গে শাহজাহানের বসত বাড়ীর জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে আদালতে মামলাও চলছে। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেই শনিবার রাতে শাহাজাহান ঘরের বাইরে গেলে তাকে পেছন দিক থেকে শরীরে এসিড নিক্ষেপ করে।
শাহজাহানের বোন পারভীন আক্তার, পারুল আক্তার জানায়, তার ভাই এ বাড়িতে থাকেন না। তার বোন-ভাগনিরা এখানে থাকে।আর শাহজাহান পরিবার নিয়ে কুমিল্লা সদর উপজেলার ধনুয়া খোলা গ্রামে শ^শুড় বাড়ীতে বসবাস করেন। মাঝেমধ্যে এখানে আসেন বোন ভাগনিদের দেখতে। শনিবার বাড়িতে আসার পর রাতে ঘর থেকে বেরুলে তিনি এসিড সন্ত্রাসের শিকার হন। ওইসময় শাহজাহানের চিৎকারে তারা ঘর থেকে বের হয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রথমে ইষ্টার্ন মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। তার অবস্থা অবনতি হলে রাত ১ টায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়।
এদিকে প্রতিপক্ষ জুলহাসের স্ত্রী শাহিদা আক্তার ,হনুফা বেগম,জাহেনারা বেগম ও সুরাইয়া মনির সহ আরো কয়েক জন জানান, ৩৫ বছর আগে শাহজাহানের মা ডলি বেগম বাড়ীর জমি জুলহাসের নিকট বিক্রি করে দেয়।এ জমি নিয়ে শাহজাহান আমাদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। গত শনিবার রাতে শাহজাহানের উপর অন্য কেউ চক্রান্ত করে এধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। আঃ মতিন জুলহাস এবং হালিম ঘটনার সময় পরিহল পাড়ায় একটি ধর্মীয় মাহফিলে ছিলেন। আমাদের বাড়ীর ছেলেরা দেশের বাহিরে চাকুরি নিয়ে আছেন। ষড়যন্ত্র করে আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য একটি চক্র এধরনের একটি ঘটনা ঘটিয়েছে।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম