কুমিল্লার মুরাদনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল বারী ইবনে জলিলের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে মামলার বাদী পক্ষ ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত ১৮ই এপ্রিল উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামে সাইদুল ইসলামের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ৪ মাসের অন্ত:সত্বা স্ত্রী সামসুন্নাহার স্বামীকে বাচাঁতে গিয়ে হামলার শিকার হন এবং রক্তক্ষরনের কারনে পেটে থাকা বাচ্চার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় পরে গত ২৮ এপ্রিল সামসুন্নাহার আক্তার বাদী হয়ে কুমিল্লা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করার জন্য মুরাদনগর থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন।
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল বারী ইবনে জলিল তদন্তভার পাওয়ার পর মামলার বাদী সামসুন্নাহারকে থানায় ডেকে এনে তদন্তসহ বিভিন্ন খরচ বাবদ ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। সামসুন্নাহার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় মামলার বিবাদীদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে বিবাদীদের পক্ষে ২৫ জুন মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে মারামারি ঘটনার ১০ সপ্তাহ পূর্বে সামসুন্নাহারে গর্ভপাত হয়েছিল উল্লেখ করা হলেও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দেওয়া ছাড় পত্রে দেখা যায়, সামসুন্নাহার আঘাত জনিত কারনে ১৮ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই অবস্থায় তার পেটে থাকা শিশুর মৃত্যু হলে তাকে গর্ভপাত করা হয়।
মামলার বাদী সামসুন্নাহার অভিযোগ করে বলেন, ওসি তদন্ত (আজিজুল বারী ইবনে জলিল) আমার কাছে ৩০হাজার টাকা চেয়েছিল। আমার বাবা রিকশা চালক। এমনিতেই আমাদের অভাবের সংসার তাই আমার পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন আমার প্রশ্ন হলো পুলিশকে আমি টাকা দিতে পারিনি বলেই কি ন্যায় বিচার পাবো না। ওসি তদন্ত বিবাদীদের পক্ষে রিপোর্ট দিয়ে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করছে। আমি আদালতের কাছে পুনঃতদন্তের অনুরোধ জানাচ্ছি।
মামলার বিবাদী আবুল হাশেম বলেন, আমরা ৪ জন আসামী ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে। এছাড়া ১নং বিবাদী সালাউদ্দিন আরো ১০ হাজার টাকা দিয়েছে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা মুরাদনগর থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল বারী ইবনে জলিল অর্থ বিনিময়ে বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, যে মামলাটি করেছে সেই মামলাটি ভুয়া মামলা, একদম মিথ্যা মামলা। আমি মামলার সুষ্ঠ তদন্ত করেছি। এখানে বাদীর কোনো আপত্তি থাকলে আদালতে এ বিষয়ে আপিল করবেন। আমি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আবেদন করে মেডিকেল রিপোর্ট এনে মামলার তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুরাদনগর (সার্কেল) পিযুষ চন্দ্র দাশ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই । এই বিষয়ে খোজঁখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম