কুমিল্লা নগরী সহ সকল উপজেলার বাজারগুলোতে নিত্যপণ্যের দাম হুহু করে বাড়ছে ।খুচরা বাজারে চাল থেকে শুরু করে ভোজ্য তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। প্রয়োজনীয় এসব পণ্য কেনাকাটায় নাভিশ্বাস মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের। বর্ষায় বৃষ্টিবাদলার অজুহাত দেখিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিম, সোনালী-ব্রয়লার মুরগী এবং সবজির দামও বাড়ানো হয়েছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে এসে অস্বস্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
ক্রেতারা বলছেন, বাজার সিন্ডিকেট না ভাঙ্গলে সাধারণ মানুষ খুচরা বাজারে এভাবেই জিম্মি হয়ে থাকবে। সংসারের প্রয়োজনে এসব নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও মানুষ কিনবে, এমন ভাবনা থেকেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আসছে সিন্ডিকেটগুলো। এত করে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ছে।
গতকাল সোমবার (৭ জুলাই) কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ, চকবাজার, তেরীপট্রি (গ্রোসরীপট্টি), রাণীর বাজার, নিউমার্কেট, বাদশা মিয়ার বাজার সহ কয়েকটি চালের আড়ত ও বিভিন্ন ভোগপণ্যের দোকান ঘুরে জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে চাল, চিনি, তেল, রসুন, ডিম, আলু, মাছ, মুরগী, ধনেপাতা, কাঁচামরিচ, লাউ, ঝিংগা, কাঁকরোল, কইডা, ঢেঁড়শ, শশাসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির দাম বাড়ানো হয়েছে। চালের আড়তে ঘুরে জানা গেছে ঈদুল আজহার পর থেকেই চালের দর ধীরে ধীরে বেড়েছে।
এরমধ্যে গেলো দুই সপ্তাহের ব্যবধানে গতকাল সোমবার মিনিকেট ৫০ কেজির বস্তা প্রকারভেদে ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ১শ’ টাকা, নাজিরশাল ৫০ কেজির বস্তা প্রকারভেদে ৩ হাজার ৬শ’ থেকে ৪ হাজার ২শ’ টাকা। মধ্যম মানের চালের দাম খুব বেশি উঠানামা করেনি। বড় ও ছোট মাছের দাম গত একমাস ধরে অনেক বাড়তি। এই অবস্থা এখনও চলছে।
সোনালী মুরগী এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। ব্রয়লারও বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা। ধনেপাতা, কাঁচামরিচের দাম বর্ষাকালের দোহাই দিয়ে উৎপাদন ও সরবরাহ কমের অজুহাত দেখিয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে খুচরা বিক্রেতারা।
নগরীর রাজগঞ্জ পানপট্টির চালের আড়ত ও অন্যান্য ভোগপণ্যের পংকজ এন্টার প্রাইজের মালিক প্রদীপ সাহা বলেন, ‘কোরবানী ঈদের পর থেকেই বিশেষ করে চিকন চালের দাম উঠানামা করেছে। বাজারে এখন চিকন চালের চাহিদা বেশি। তাই এধরণের চালের দাম কখনো বাড়ে কখনো কমে। আর বিআর ২৮ ও পাইজাম চাল, মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চালের দাম কেজিতে ২ টাকা, ৫টাকা কমে বাড়ে। ক্রেতারা এখন চিকন চালের ভাত খাওয়ার প্রতি অভ্যস্থ হয়ে ওঠেছে। তাই এধরণের চালের দাম কিছুটা বেশি। ভোজ্যতেল সরকার নির্ধারিত দরেই বিক্রি করতে হয়। একজন ব্যবসায়ী বা পাইকারি বিক্রেতা হিসেবে আমি মনে করি, সাধারণভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ে এবং তাদের কষ্ট বাড়ে।’
ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট বাড়ে। এটা ব্যবসায়ী বা বিক্রেতারা অনুধাবন করেন না। বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও নীরবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। তাঁরা সবসময়ই পণ্যের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারায় থাকে। সুযোগ পেলেই তারা দাম বাড়িয়ে দেয়। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলেও এসব ব্যবসায়ীদের মানসিকতা বদলায়নি।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম