ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে চব্বিশের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ভারতে পলায়নের পর বিপ্লবী ছাত্র-জনতা সারাদেশে আওয়ামী লীগের ডাকসাইটের নেতাদের বাড়ি, দলটির কার্যালয় এবং ঢাকায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ-ভাংচুরের পাশাপাশি শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালগুলো কালোরংয়ে আবৃত করা হয়, কোথাও কোথাও হাতুড়ির আঁচরে বিকৃত করা হয়। গেলো ৬ মাস ম্যুরালগুলো এ অবস্থায়ই পড়ে ছিল।
কিন্তু বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) শেখ হাসিনার ভাষণের প্রতিবাদে সারাদেশে বুলডোজার কর্মসূচি পালন করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশের মতো কুমিল্লার যেসব স্থানে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের অস্তিত্ব ছিল, এটিও ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। কেবল শেখ মুজিবের ম্যুরালই নয়, কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের দলীয় স্থাপনা ও দলটির নেতাদের বাড়িঘরেও ভাংচুর অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গনে মিছিল নিয়ে প্রবেশ করে ছাত্র-জনতা। এসময় বুলডোজার দিয়ে আদালতের ভেতরের সামনের অংশে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ম্যুরাল ভাঙার সময় ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্লোগান দেয় ও উল্লাসে মেতে ওঠে। এর আগে কুমিল্লা নগর উদ্যানের সামনে রং-কালিতে বিকৃত করা শেখ মুজিবের ম্যুরালটিও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। কুমিল্লার যেখানেই শেখ মুজিবের ম্যুরালের অস্তিত্ব ছিল, একটি থেকে আরেকটিতে বুলডোজারের থাবা ফেলেছে ছাত্র-জনতা। শেখ মুজিবের ম্যুরালের শেষ চিন্হটুকু মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়।
এরআগে বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর রামঘাট এলাকায় অবস্থিত কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা চালানো হয়। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থাকা ইটের গাঁথুনি ভেঙে ফেলেন। এরপর রাত ১টার দিকে কুমিল্লা নগরীর মুন্সেফবাড়ি এলাকায় সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের বাড়ির জানালার গ্রিল ভাঙার চেষ্টা করে বিক্ষুব্ধরা। পরে তালা ভেঙে অনেকে ভেতরে ঢোকেন। অনেকে বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে বাড়িটিতে ভাঙচুর চালায় তারা। পরে পেট্রোল ঢেলে বাড়ির কয়েকটি কক্ষে এবং ভবনের সামনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও কুমিল্লা নগরীর বেশ কয়েকজন ডাকসাইটের আওয়ামী লীঘ নেতার বাড়িতেও ভাংচুর
ও আগুন দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক আবু রায়হান জানান, স্বৈরাচার সরকার ভারতে পালিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পরও কখনও ভিডিও বার্তা, কখনও অডিও বার্তার মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার এসব অপতৎপরতা দেশের ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না। তাই বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বুলডোজার কর্মসূচি পালন করছে।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম