বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল, কুমিল্লা মহানগর কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রাখায় স্থানীয় বিএনপি ও জুলাই আন্দোলনের ছাত্র নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার অভিযোগে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় দায়ের করা মামলার আসামি ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ২৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. ইব্রাহীম খাঁন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল, কুমিল্লা মহানগরের ২৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পেয়েছেন। এই বিষয়টি জানাজানির পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরাসরি জড়িত থাকার একাধিক ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর ইব্রাহীম খাঁনসহ ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. এমরান।
এ বিষয়ে ওই মামলার বাদী এমরান হোসেন জানান, 'আমি যথাযথ তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মামলাটি করেছি। পুলিশ বলেছে আসামীরা পলাতক, গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পলাতক থেকে ইব্রাহীম খান কীভাবে ওলামা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন, এটা আমার বোধগম্য নয়। আমি চাই মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।'
কুমিল্লা মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বয়ক আবু রায়হান বলেন, 'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলার আসামি বা আওয়ামী দোসরদের যারা দলে জায়গা দেয় তারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষের লোক। কুমিল্লা মহানগর ওলামা দলের কমিটিতে এ ধরনের লোককে রাখা ঠিক হয়নি।'
এ বিষয়ে কুমিল্লা সিটির ২৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দীন বলেন, 'ইব্রাহীম খাঁন স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন ডোনার ও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় তিনি একটি মামলার আসামিও। অথচ এখন শোনা যাচ্ছে ইব্রাহিম খাঁন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল কুমিল্লা মহানগরীর যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পেয়েছেন। এই বিষয়টি আমাদের জন্য যেমন ক্ষোভের তেমনি অপমান ও লজ্জাজনক।'
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল, কুমিল্লা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা মো. শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, 'দলের কেউ যদি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলার আসামি হয়, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইব্রাহীম খাঁনের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগের কোনো প্রমাণ থাকলে আমাকে পাঠান আমি সেগুলো কেন্দ্রে পাঠিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।'
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, 'আমরা বৈষম্যবিরোধী মামলার আসামিদের ধরার চেষ্টা করছি।'
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম