বসন্ত বাতাসে দুলছে আমের মুকুল। আর সেই মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। মুকুলের ভারে নুয়ে পড়েছে আম গাছের ডাল-পালা। ঢাকা পড়েছে গাছের পাতা। এবছর কুমিল্লার বিভিন্ন গ্রাম ও নগরীর বাড়িগুলোর আমগাছে মুকুলের বিপুল সমারোহ ঘটেছে। কুমিল্লার উদ্ভিদবিদরা বলছেন এবছরের আবহাওয়া স্থানীয় পর্যায়েও আমের ফলনের জন্য অনুকূল রয়েছে।
কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার কৃষি নির্ভর গ্রামগুলোতে ধান, পাট, সরিষাসহ নানা প্রকারের ফল ও সবজি উৎপাদনে সমৃদ্ধ পেলেও মধুমাসের ফল আম উৎপাদন হয়না। কারণ কুমিল্লায় কোন আম বাগান নেই। তবে গ্রামগঞ্জের প্রতিটি বাড়িতেই কমবেশি আমগাছ রয়েছে। আবার শহরের দালান-কোঠায় আচ্ছন্ন পরিবেশেও অনেক বাড়িতে ছোটবড় আম গাছের দেখা মেলে। অনেকের বাড়ির ছাদেও উন্নত জাতের আমগাছের চারা লাগিয়ে পরিচর্যা করে প্রতি মৌসুমেই আম পাচ্ছেন। আবার অনেকে বারোমাসি আমগাছও লাগিয়েছেন।
কুমিল্লা শহর ও বিভিন্ন গ্রামের বাড়িতে থাকা আমগাছগুলোতে অন্যান্যবারের তুলনায় এবারে বিপুল পরিমান মুকুল এসেছে। অনেকেই মুকুল রক্ষার জন্য কৃষি অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিচ্ছেন। কেউ কেউ গাছের যত্নে বেশ মনোযোগি উঠেছেন। কুমিল্লার কয়েকজন উদ্ভিদবিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমের মাস বলতে জ্যৈষ্ঠ মাসকে বুঝালেও কুমিল্লা অঞ্চলে সাধারণত বৈশাখের মাঝামাঝি সময়ে এখানকার আম হাট-বাজারে উঠে থাকে। সেই হিসেবে এবারে মাঘের মাঝামাঝি সময়ে এখানকার আম গাছগুলোতে মুকুল দেখা দেয়। আর ফাল্গুনে মৌ মৌ গন্ধে মাতিয়ে তুলছে এলাকা।
কুমিল্লা সদর উপজেলার শহর এলাকার হাউজিং এষ্ট্রেট, গাংচর, চাঁনপুর, শুভপুর, সংরাইশ, সুজানগর, জগন্নাথপুর, বালুতুপা, নুরপুর, ছোটরা, কাপ্তানবাজার, কালিয়াজুরি, অশোকতলা, ধর্মপুর, শহরতলীর দূর্গাপুর, পাঁচথুবি, আমড়াতলি, কালিরবাজার, সদর দক্ষিণের চৌয়ারা, সুয়াগাজী, বিজয়পুর, ভুশ্চি, যুক্তিখোলা, গৈয়ারভাঙ্গা, বাগমারা, লালমাই, কোটবাড়ি, বরুড়ার বেলভুজ, তলাগ্রাম, ঝলম, খোশবাশ, দেওরা, পয়েলগাছা, শিলমুড়ি, চান্দিনার বাড়েরা, মাইজখার, জয়দেবপুর, দেবিদ্বারের ধামতি, গুনাইঘর, রাজামেহের, এলাহাবাদ, মুরাদনগরের জাহাপুর, যাত্রাপুর, রামচন্দ্রপুর, নবীপুর, কামাল্লা, শ্রীকাইল, ভাংগোরা, হোমনার ঘোরমোরা, নাগেরচর, চান্দেরচর, দাউদকান্দির সুন্দালপুর, বড়পাড়া, কড়িকান্দি, গৌরিপুর, পাঁজগাছিয়া, বিতিসর, বুড়িচংয়ের পীরযাত্রাপুর, ষোলনল, রাজাপুর, ময়নামতি, বাকশিমূল, ব্রাক্ষ্রণপাড়ার দুলালপুর, সাহেবাবাদ, শিদলাই, লাকসামের, গোবিন্দপুর, দৌলতগঞ্জ, বাইশগাঁও, নাঙ্গলকোটের মৌকারা, আদ্রা, বক্সগঞ্জ, বাঙ্গড্ডা, দৌলখার, পেরিয়া, জোড্ডা, চৌদ্দগ্রামের বাতিশা, কনকাপৈত, চিওড়া, হরিপুর, মিয়াবাজার, কাশিনগর, উজিরপুর, জোড়কানন, মুন্সিরহাট, শ্রীপুরসহ অন্যান্য উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ন্যাংড়া, ফজলি, হিমসাগর ও আশ্বিনিজাতের আমগাছগুলো মুকুলে ছেয়ে গেছে।
হলুদ বর্ণের মুকুল সূর্যের সোনালী আলোয় অপরূপ রঙ ছড়াচ্ছে। ফালগুন-চৈত্রে এসব মুকুল শেষ পর্যন্ত গাছে টিকে থাকলে কুমিল্লায় আমের বেশ ভালো ফলন মিলবে।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম