সাধারণ মানুষের নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করণসহ খাদ্যের অধিকার নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে জনমত তৈরি করা এবং চলমান দুর্যোগে সাধারণ মানুষের খাদ্য-পুষ্টির অধিকার ও জীবিকার দুর্ভোগগুলো জনপরিসরে তুলে ধরার মাধ্যমে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা দর্পণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক-খানি।
বুধবার (৯ডিসেম্বর) কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকায় বিকেল ৪টায় খাদ্য অধিকার সপ্তাহ উপলক্ষে বাংলাদেশের ‘সকল মানুষের জীবিকা, খাদ্য এবং পুষ্টির নিরাপত্তায় খাদ্য অধিকার প্রণয়ন কর’ শীর্ষক ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল হাসানাত বাবুলের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক জহিরুল হক দুলাল।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আওয়ার লেডি অব ফাতেমা গালর্স হাই স্কুলের সাবেক সহকারী শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মো. আলাউদ্দিন, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রীর সভাপতি নাগমা মোর্শেদ, কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সহ-সভাপতি রোটারিয়ান আনোয়ার হোসেন, দৈনিক ইনকিলাবের ষ্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিসময় নিউজ পোর্টালের প্রধান সম্পাদক সাদিক মামুন, শাহীন স্কুলের পরিচালক হুমায়ুন রশিদ,নিরাপদ চালক চাই এর আহবায়ক আজাদ সরকার লিটন, সমতটের কাগজ এর সম্পাদক ও প্রকাশক জামাল উদ্দিন দামাল, পুলিশ লাইন স্কুলের সহকারী শিক্ষক মোজ্জামেল হক, অ্যাডভোকেট জাফর আলী, সাংবাদিক এনকে রিপন, দর্পনের ট্রেজারার ফাখেরা মনসুর, জেলা পর্যায়ে জয়িতা পদকপ্রাপ্ত নাসিমা আক্তার খানম, সালমা ইসলাম নূপুর, নারী উদ্যোক্তা শামীমা বেগম, নারী উদ্যোক্তা জেবুন নেছা, নারী উদ্যোক্তা মারুফা আক্তার নারী উদ্যোক্তা কোহিনুর বেগম, নারী উদ্যোক্তা সোহাগী আক্তার মিম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে স্পষ্ট করে বলা আছে, খাদ্যের অধিকার শুধুই রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক অধিকার নয়, বরং মানবাধিকারের অংশ। যেহেতু খাদ্যের অধিকার একটি মানবাধিকার, তাই নাগরিকের খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।আর এই দায়িত্ব তখনই পালন করা সম্ভব হবে, যখন একটি ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। সেটি করতে হলে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের কোন বিকল্প নেই।
বক্তারা আরো বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসিরি সার্চ ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচক-২০২০ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৫; যেখানে বাংলাদেশ ক্ষুধা সূচকে ‘গুরুতর মাত্রা’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে।দেশে প্রায় ৪ কোটি মানুষ পুষ্টিহীনতার শিকার এবং প্রায় ৪৪ শতাংশ নারী রক্ত স্বল্পতায় ভোগেন। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল দুর্গম এলাকার দলিত, আদিবাসী, বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও শহরের নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে পুষ্টিহীনতা বেশি। করোনাকালে এই অবস্থা আরও গুরূতর আকার ধারণ করেছে। লকডাউন চলাকালীন সময়ে দেশের শহরাঞ্চলে মানুষের ৪৭ শতাংশ ও গ্রামের মানুষের ৩২ শতাংশ খাবারের পরিমাণ কমেছে। সরকারি তথ্য মোতাবেকই দেশের প্রায় পৌনে ৪ কোটি মানুষ (দরিদ্র ২১.৮ শতাংশ) পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করতে পারতেন না। যা সরাসরি মানবাধিকারের স্খলন।
মানববন্ধনের আলোচনা পর্ব পরিচালনা করেন- দর্পনের সহকারী প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আক্তার তপা। অনুষ্ঠান আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন দর্পনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সালমা আক্তার চৈতি, অর্থ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোহাগী আক্তার এবং প্রোগ্রাম অর্গানাইজার মারিয়াম আক্তার পপি।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিন। এছাড়া protisomoy ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন ও বেলবাটন ক্লিক করে নতুন নতুন ভিডিও নিউজ পেতে অ্যাকটিভ থাকুন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম