কুমিল্লা জেলা প্রশাসন গোমতীর প্রতিরক্ষাবাঁধসহ গোমতীর চর রক্ষায় অভিযান চালালেও বুড়িচংয়ের বাগিলারা এলাকার মাটি খেকোদের তৎপরতা থেমে নেই। ওই এলাকায় গোমতী নদীর চর থেকে রাতের আধাঁরে মাটি কেটে ডাম্প ট্রাকযোগে পরিবহনের ফলে প্রতিরক্ষা বাঁধসহ ফসলী জমি হুমকীর মুখে পড়েছে। এছাড়াও ভারী ডাম্প ট্রাকযোগে মাটি পরিবহনের ফলে গ্রামের রাস্তা-ঘাটও চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের বাগিলারা গ্রামের পাশে থাকা জেলার প্রধান নদী গোমতীতে রয়েছে বিশাল এলাকাজুড়ে চর। প্রতিবছর উজান থেকে আসা পলিতে উর্বর হয় এই চর। এতে কৃষকদের মুখে হাসি ফোটার কথা থাকলেও প্রভাবশালী মাটি খেকোদের অবাধে মাটি কাটায় পুরো চর এলাকাজুড়ে কৃষকদের মাঝে চলছে হাহাকার।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিবছর অতি বর্ষায় মাটি কাটা কিছুটা বন্ধ থাকলেও বছরের বেশীরভাগ সময়ই মাটি খেকোরা এস্কেভেটর দিয়ে অবাধে কাটছে নদীর চর এলাকার মাটি।পরে ডাম্প ট্রাকযোগে এসব মাটি বিভিন্নস্থানে প্রকল্পের জমি ভরাট, হাউজিং, জলাশয় ভরাট বা ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। আর এসব ডাম্পট্রাক প্রতিরক্ষা বাঁধে উঠানামায় একদিকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বাঁধ অন্যদিকে মাটি কাটা ও পরিবহনে ফসলী জমি ভাঙ্গছে অবাধে।
এলাকার কৃষকরা জানান, অবাধে মাটি কাটায় ফসলী জমি ভাংছে ব্যাপকভাবে। এতে তারা জমিতে চাষাবাদ করতে পারছে না। তারা আরো বলেন,জমির আশপাশ দিয়ে ডাম্পট্রাক চলাচল করায় জমির পাড় ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বহু ফসলী জমি। এছাড়াও রাতের বেলায় বেপরোয়া ট্রাক চলাচলে নদী তীরের মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত,শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখাসহ ব্যাপক বায়ুদূষনের কবলে পড়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বাগিলারা গ্রামের শাহদাৎ হোসেন, নারায়ন জানান, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিদিন রাতে এস্কেভেটর দিয়ে নদীর চর এলাকাসহ নদীর মুল অংশ থেকেও বিচ্ছিন্নভাবে মাটি কাটছে। এস্কেভেটর দিয়ে কেটে ডাম্পট্রাক দিয়ে মাটি বিভিন্নস্থানে পরিবহনের কারণে প্রতিরক্ষাবাঁধ ও নদীর চর এলাকায় ফসলী জমি হুমকীর মুখে। চাষাবাদ শূন্য হয়ে পড়ছে চরের শত একরের ফসলী জমি।
একই এলাকার জসিম ,জয়নালসহ আরো অনেকেই জানান,ভারী ডাম্পট্রাকগুলো চলাচলের কারণে গ্রামের সড়কগুলিতে থাকা বেশ কটি কালভার্ট সহ রাস্তাঘাট ব্যাবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার বুড়িচং অংশের উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীরের সাথে এ বিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাম্মৎ সাবিনা ইয়াসমিন জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয় এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। আমি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম