ছবি: সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আরফানুল হক রিফাত #
কুমিল্লার গোমতী বালু মহাল ১৪২৭ বাংলা সালের ইজারায় অংশগ্রহণকারি মের্সাস এম রহমান এর মালিক মাহবুবুর রহমান ২০১১ সালের বিধিতে ৯(৪) এর ধারায় অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও সর্ব্বোচ দরদাতা হিসেবে গোমতী নদীর ৫টি বালু মহাল ইজারা পেয়েছে। বিষয়টি কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কাছে তথ্য প্রমাণসহ প্রথমে মৌখিক ও পরে লিখিত অভিযোগ করার পরও মের্সাস এম রহমানের অবৈধ সিডিউলটি বাতিল না করে তাকেই ইজারা দেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মেসার্স রিফাত কনস্ট্রাকশনের মালিক কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গোমতী বালু মহালের সাবেক ইজারাদার আরফানুল হক রিফাত।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কমিল্লা নগরীর একটি পার্টি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি গোমতী নদী বালু মহাল ইজারা এবং পরবর্তীতে বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ানোর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন সাংবাদিকদের সামনে।
সংবাদ সম্মেলনে আরফানুল হক রিফাত অভিযোগ করেন- ‘গোমতী নদীর বালু মহাল ইজারার দরপত্রে আমার মালিকানাধীন মেসার্স রিফাত কনস্ট্রাকশনসহ মোট ৫টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। এরমধ্যে মের্সাস এম রহমান এর মালিক মাহবুবুর রহমান ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আয়করের কোন রিটার্ন দাখিল করেন নি। এমনকি তার ট্রেড লাইসেন্সও নবায়ন নেই ৩/৪ বছর ধরে। এ অবস্থায় তার সিডিউল কোনভাবেই ইজারা দরপত্রে অংশগ্রহণের বৈধতা পায়না। এটা ২০১১ সালের বিধিতে ৯(৪) এর ধারায় অযোগ্য। অথচ সে ভ্যাট,ট্যাক্সসহ এক কোটি ৫৬ লাখ টাকার ভিট প্রদান করে সর্ব্বোচ দরদাতা হিসেবে ইজারা গ্রহীতা কার্যাদেশ নিয়েছে।
মের্সাস এম রহমান এর সিডিউল বৈধ নয়, এমন দাবী করে গত ২০ জুন দরপত্র খোলার পর প্রথমে এডিসি রেভিনিউ এবং আরডিসিকে মৌখিকভাবে জানানো হয়। পরে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়। আমাকে জানানো হয়, বিষয়টি ইজারা পর্যালোচনা কমিটি দেখবে ও সিদ্ধান্ত নেবে। পরে পর্যালোচনা কমিটি মের্সাস এম রহমানকে গোমতী নদীর ৫টি বালু মহাল ইজারা দেয়। পর্যালোচনা কমিটির এধরণের সিদ্ধান্তে আমি বিস্মিত হয়েছি। ইজারা পর্যালোচনা কমিটি টেন্ডার আইনের পরিপন্থি কাজ করেছে। পরবর্তীতে আমি মহামান্য হাইকোর্টের (উচ্চ আদালত) সরনাপন্ন হই। মহামান্য হাইকোর্ট রিটপিটিশন ২৫০/২০২০ মূলে গত ১৯ জুলাই ইজারা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্থিতিবস্থার আদেশ দেন। যা এখন পর্যন্ত বহাল রয়েছে। গত ৬ আগস্ট মের্সাস এম রহমানের মালিক মাহবুবুর রহমানকে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে মাহবুবুর রহমান স্থিতিঅবস্থা ভঙ্গ করে বালু মহালের বিভিন্ন ঘাট দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রায় দেড় কোটি টাকা দিয়ে গোমতী নদীর বালু ইজারা নেয়া গ্রহীতা মাহবুবুর রহমানের আয়ের উৎসের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মেসার্স রিফাত কনস্ট্রাকশনের মালিক কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গোমতী বালু মহালের সাবেক ইজারাদার আরফানুল হক রিফাত।
বর্তমানে পাঁচটি বালু মহালের ইজারাদার মাহবুবুর রহমান কয়েকদিন আগে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন সাবেক ইজারাদার আরফানুল হক রিফাতের লোকজন নদীর অন্তত ১৫টি পয়েন্ট থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আরফানুল হক রিফাত ওই অভিযোগ প্রত্যাখান করে এবং সাংবাদিকদের সরেজমিন গোমতী বালু মহাল ঘুরে সত্যতা নিশ্চিতের আহবান জানিয়ে বলেন-‘আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।বালু মহালের কোন ঘাটে আমার কোন লোক বা নৌকা, ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন করছে না। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে সব বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেই এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ওইসময়ে উত্তোলন শেষে স্টক (মজুদ) করে রাখা বালু এখন বিক্রি হচ্ছে। যারা অভিযোগ করেছে তারা কেবল নদীর বালু নয়, নদীর মাটি কেটে ফসলি জমি বিলীন করে দিচ্ছে ও প্রতিরক্ষা বাঁধ হুমকির মখে ফেলছে। প্রশাসন থেকে এযাবত অভিযান চালিয়ে যারা অভিযোগ করেছে তাদের লোকজনকে জরিমানা ও মালামাল জব্দ করা হয়েছে। আজকে গোমতীর ২৪/২৫টি পয়েন্টে জামায়াত-বিএনপির লোকদের বগলদাবা করে তাদের নিয়ে সিন্ডিকেট করে বালু উত্তোলন করছে অভিযোগকারিরা। আমি দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই-গোমতী ধ্বংস করে টাকা রোজগারের লোক আমি নই।’
সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ সোহেল, পাঁচথুবি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম