চাঁদাবাজির কারণে বেপারীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে কুমিল্লা সদর দক্ষিনের ঐতিহ্যবাহী চৌয়ারা বাজারের গরুর হাটে।ইজারাদারের কাছে বেপারীরা চাঁদাবাজির নালিশ নিয়ে আসলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।কারণ ইজারাদারও এখানে অসহায়।হাটের ইজারাদার ও ব্যাবসায়ীরা এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ।
সীমান্তবতী এলাকার এই গরু-ছাগলের হাটে একসময় চোরাই পথে প্রচুর ভারতীয় গরু আসত।সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে এখন সীমান্তে দিয়ে ভারতীয় গরু না আসলেও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পশুবাহী যানবাহন ঘিরে প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় একটি চক্র চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গরু ব্যাবসায়ী আলম মিয়া,জামশেদ আলম, আবদুল মান্নান, শহিদুল ইসলাম,জসিম উদ্দিন,মোবারক হোসেন জানান, পথে পথে চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন গরু বেপারীরা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চৌয়ারা বাজার পর্যন্ত পৌঁছতে নানা কায়দায় গরু প্রতি পাঁচশ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হচ্ছে। গরুবাহী ট্রাক বাজারে প্রবেশ করতে ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়।
গরু ব্যবসায়িরা জানান, যারা চাঁদা তুলে তারা অজুহাত দেখাচ্ছেন সদর দক্ষিন মডেল থানা, ডিবি পুলিশ ও স্থানীয় যশপুর বিজিবি ক্যাম্পসহ আইন শৃংখলা বাহিনী ও এলাকার প্রভাবশালীদের মাসোহারা দিতে হয়।
যশপুর বিওপি ক্যাম্পের নায়ক সুবেদার মাহাবুবুর রহমান ও হাবিলদার সাহাবুদ্দিন জানান, ‘এ এলাকায় সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে কোন ভারতীয় গরু আসেনা।আর চাঁদাবাজির বিষয় তাদের জানা নেই। বিজিবির নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ চাঁদা নিয়ে থাকলে সঠিত তথ্য দিলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হবে।’
চৌয়ারা গরুর হাটের ইজারাদার মো.রফিকুল ইসলাম জানান, বছরে ৩৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা দিয়ে চৌয়ারা গরু-ছাগলের হাটের ইজারা নিয়েছেন। আগে শনিবার,মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সপ্তাহে তিন দিন বাজার বসলেও এখন শনিবার ও মঙ্গলবার এ দুই দিন বাজার বসে। শীতের মৌসূমে গরু বেচা-বিক্রি কম হয়ে থাকে। হাটে চাঁদাবাজি হয়, বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন,প্রায়ই গরু বেপারীরা চাঁদাবাজির বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে আসেন। প্রশাসনের নাম বলে তারা টাকা উঠায়। আসলে প্রশাসনের কেউ জড়িত কিনা তা তিনি নিশ্চিত নন।তবে বাজারের সুনাম রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরী।
গলিয়ারা ইউনিয়নের মুদ্দুদ গ্রামের মনির হোসেন জানান, ‘আমি এখন আর হাটের চাঁদা তোলা এসবের সাথে জড়িত নই। এখন অন্য লোকজন চাঁদা উঠায়। কারা চাঁদা উঠায় এমন প্রশ্নের জবাবে মনির জানায়- খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন।’
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি দেবাশীষ চৌধুরী জানান, ‘চৌয়ারা গরু বাজারে চাঁদাবাজির অভিযোগটি আজই জানলাম। এ বিষয়ে গোয়েন্দাা নিয়োগ করে খোঁজ নেওয়া হবে। চাঁদাবাজি বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম